ইউক্রেনের দাবি, মস্কোয় গতকাল তারা কমপক্ষে ৩৪টি ড্রোন হামলা চালিয়েছে।
রাশিয়ার রাজধানী মস্কোয় আজ রোববার কমপক্ষে ৩৪টি ড্রোন হামলা চালিয়েছে ইউক্রেন। ২০২২ সালে রাশিয়া–ইউক্রেন যুদ্ধ শুরুর পর একে মস্কোয় ইউক্রেনের চালানো সবচেয়ে বড় ড্রোন হামলা বলা হচ্ছে। এ হামলার পর মস্কোর গুরুত্বপূর্ণ বিমানবন্দরগুলো থেকে ফ্লাইট ঘুরিয়ে দেওয়ার ঘটনা ঘটে। হামলায় একজন আহত হওয়ার খবর পাওয়া গেছে।
রুশ প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, আজ তিন ঘণ্টায় তারা পশ্চিম রাশিয়া অঞ্চলজুড়ে ইউক্রেনের ৩৬টি ড্রোন ধ্বংস করেছে। রাশিয়ার ফেডারেল বিমান পরিবহন সংস্থা জানিয়েছে, ডেমোডেডোভো, শেরেমেতেভো ও জুকোভস্কি বিমানবন্দর থেকে ৩৬টি ফ্লাইটকে ঘুরিয়ে দেওয়া হয়। অবশ্য পরে আবার উড়োজাহাজ চলাচল স্বাভাবিক হয়েছে। এ হামলায় মস্কো এলাকায় একজন আহত হয়েছেন। এ ছাড়া রাশিয়ার ব্রায়ানস্ক এলাকায়ও ড্রোন হামলার দাবি করেছে ইউক্রেন।
মস্কো ও এর আশপাশের এলাকায় ২ কোটি ১০ লাখ লোকের বাস। ইউরোপ অঞ্চলে ইস্তাম্বুলের পাশাপাশি সবচেয়ে বড় মেট্রোপলিটন এলাকা মস্কো। এদিকে মস্কোয় ড্রোন হামলার আগে রাশিয়ার পক্ষ থেকেও হামলা করা হয়েছে। ইউক্রেন দাবি করেছে, গত শনিবার দিবাগত রাতে ১৪৫টি ড্রোন হামলা করেছে মস্কো। এর মধ্যে ৬২টি ড্রোন ধ্বংস করেছে তারা।
যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট পদে নির্বাচিত ডোনাল্ড ট্রাম্প নির্বাচনী প্রচারের সময় বলে এসেছেন, জানুয়ারিতে ক্ষমতা গ্রহণের ২৪ ঘণ্টার মধ্যে রাশিয়া–ইউক্রেন যুদ্ধ বন্ধ করবেন। তবে এ বিষয়ে বিস্তারিত কিছু বলেননি তিনি। গণমাধ্যমের তথ্য অনুযায়ী, ট্রাম্প নির্বাচনে জয়ী হওয়ার পর তাঁকে অভিনন্দন জানাতে ফোনকল করেছিলেন ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কি। ওই ফোনকলে যুক্ত ছিলেন টেসলার প্রধান নির্বাহী ইলন মাস্ক। ইউক্রেনকে স্টারলিংক কৃত্রিম উপগ্রহের মাধ্যমে ইন্টারনেটর সুবিধা দিচ্ছে ইলন মাস্কের প্রতিষ্ঠান।
কিয়েভ একাধিকবার রুশ সেনাদের ড্রোন হামলার মুখে পড়েছে। সম্প্রতি কিয়েভের পক্ষ থেকে রাশিয়ার ভেতরে বিভিন্ন জ্বালানি শোধনাগার, বিমানঘাঁটি ও জ্বালানি অবকাঠামো লক্ষ্য করে পাল্টা ড্রোন হামলা চালানো হচ্ছে।
মস্কো ও কিয়েভ উভয় পক্ষই নতুন ড্রোন উদ্ভাবন ও কেনার প্রতিশ্রুতি দিয়েছে। এদিকে মস্কোর পক্ষ থেকে ড্রোন হামলা থেকে সুরক্ষার জন্য ইলেকট্রনিক ছাতার মতো একধরনের প্রতিরক্ষাব্যবস্থা গড়ে তোলা হয়েছে। এর আওতায় বিভিন্ন স্তরে মস্কোর বিভিন্ন ভবন থেকে কৌশলগত প্রতিরক্ষাব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে। এতে যেকোনো ড্রোন ক্রেমলিনের কাছাকাছি পৌঁছানোর আগেই ধ্বংস করা সম্ভব।
রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনের পক্ষ থেকে এ ধরনের ড্রোন হামলাকে সন্ত্রাসী কার্যকলাপ হিসেবে মন্তব্য করা হয়েছে। তিনি এর জবাব দেওয়ার প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন।
ইউক্রেন যুদ্ধ শুরুর পর থেকে মস্কোর প্রতিরক্ষাব্যবস্থা জোরদার করা হয়েছে। মস্কো এলাকায় এ ধরনের হামলার পরও বড় ধরনের কোনো আতঙ্ক দেখা যায়নি।