চাঁদে অভিযান চালাতে মহাকাশযান পাঠিয়েছে রাশিয়া। এ অভিযানে চাঁদের পৃষ্ঠে পানির অস্তিত্ব অনুসন্ধান করবেন রুশ বিজ্ঞানীরা। এর মধ্য দিয়ে দীর্ঘ ৪৭ বছর পর আনুষ্ঠানিকভাবে চাঁদে অভিযান শুরু করল দেশটি।
সোভিয়েত ইউনিয়ন ভেঙে যাওয়ার পর মহাকাশ গবেষণা নিয়ে দীর্ঘ সময়ের সংগ্রামের ইতিহাস এবং ইউক্রেন যুদ্ধ ঘিরে পশ্চিমা বিশ্বের চাপের মুখে থাকা রাশিয়ার এ উদ্যোগ গুরুত্বের সঙ্গে দেখা হচ্ছে।
মস্কোর স্থানীয় সময় শুক্রবার রাত ২টা ১০ মিনিটে চাঁদের উদ্দেশে লুনা-২৫ মহাকাশযান নিয়ে একটি সুয়ুজ-২.১ভি রকেট উৎক্ষেপণ করেছে রাশিয়া। ভস্তোচনি কসমোদ্রোম উৎক্ষেপণকেন্দ্র থেকে এটি পাঠানো হয়। রাশিয়ার মহাকাশ সংস্থা রসকসমস এ ঘটনা সরাসরি দেখিয়েছে।
রাশিয়ার এই যান পরবর্তী পাঁচ দিনের মধ্যে চাঁদের কক্ষপথে পৌঁছাবে। এরও তিন থেকে সাত দিনের মধ্যে যানটি চাঁদের পৃষ্ঠে অবতরণ করার জন্য সঠিক জায়গা খুঁজে নেবে। চাঁদের দক্ষিণ অংশে এটি অবতরণ করবে।
রসকসমসের জ্যেষ্ঠ কর্মকর্তা আলেকজান্দার ব্লোখিন বলেন, চাঁদের দক্ষিণ অংশে অবতরণ করতে যাওয়া প্রথম মহাকাশযান এটি। কেননা, এর আগে সব মহাকাশযান চাঁদের নিরক্ষীয় অংশে নেমেছে। ২৩ আগস্ট নাগাদ রাশিয়ার এই মহাকাশযান চাঁদের পৃষ্ঠে অবতরণ করতে পারে বলে আশা করছে রুশ মহাকাশ সংস্থা।
সর্বশেষ ১৯৭৬ সালের আগস্টে চাঁদে মহাকাশযান পাঠিয়েছিল মস্কো। যদিও তখন রাশিয়া নামে কোনো দেশ ছিল না। সাবেক সোভিয়েত ইউনিয়ন এ অভিযান পরিচালনা করেছিল। সেই হিসাবে, সোভিয়েত ইউনিয়ন ভেঙে যাওয়ার পর এটা রাশিয়ার প্রথম চাঁদে অভিযান।
রুশ মহাকাশ সংস্থা জানিয়েছে, তাদের এ মহাকাশযান বছরখানেক চাঁদে অবস্থান করতে পারে। এ সময় এটি চাঁদের পৃষ্ঠ থেকে মাটির নমুনা সংগ্রহ ও বিশ্লেষণ করবে। দীর্ঘমেয়াদি গবেষণা কার্যক্রমে অংশ নেবে। চাঁদের দক্ষিণ অংশে পানির অস্তিত্ব আছে কি না, সেটার অনুসন্ধান চালাবে।
এ বিষয়ে রাশিয়ার মহাকাশ বিশেষজ্ঞ ভিতালি ইগোরভ বলেন, সোভিয়েত-পরবর্তী সময়ে চাঁদে প্রথমবারের মতো পরিচালিত এ অভিযান রাশিয়ার জন্য খুবই গুরুত্বপূর্ণ। তবে সবচেয়ে বড় চ্যালেঞ্জ হলো, চাঁদের পৃষ্ঠে এ যানের নিরাপদে অবতরণ করতে পারা।