সোমালি জলদস্যুদের মুক্তিপণ দেওয়ার বিরুদ্ধে কড়া হুঁশিয়ারি উচ্চারণ করেছে ইউরোপীয় ইউনিয়ন (ইইউ)। মুক্তিপণ দেওয়ার ফলে ভারত মহাসাগর ও এডেন উপসাগরে জাহাজ ছিনতাইয়ের ঘটনা আরও বাড়তে পারে বলে ইইউ উদ্বেগ প্রকাশ করেছে।
গতকাল শুক্রবার অল আফ্রিকা নামের একটি সংবাদমাধ্যমের প্রতিবেদনে বলা হয়, সম্প্রতি ৫০ লাখ ডলার মুক্তিপণ দিয়ে ২৩ নাবিকসহ বাংলাদেশি জাহাজ এমভি আবদুল্লাহকে জলদস্যুদের কবল থেকে মুক্ত করে বাংলাদেশি–সংশ্লিষ্ট কোম্পানি। এমন প্রেক্ষাপটে এ হুঁশিয়ারি উচ্চারণ করা হলো।
উল্লেখ্য, গত ১২ মার্চ সোমালিয়ার দস্যুরা ভারত মহাসাগর থেকে এমভি আবদুল্লাহ জাহাজটি জিম্মি করে। মুক্তিপণ দিয়ে জাহাজটি ছাড়া পায় ১৪ এপ্রিল। মুক্তিপণ দিয়েই জাহাজটি ছাড়া পেয়েছে বলে জানা গেছে।
সাম্প্রতিক সময়ে দস্যুতার হুমকি বেড়ে যাওয়ায় এই অঞ্চলে চলাচল করা জাহাজগুলোর আরও বেশি সতর্কতা অবলম্বনের ওপর জোর দিয়েছে ইইউর আটলান্টা মিশন। ইইউর মতে, মুক্তিপণ দেওয়ার ফলে আবারও দস্যুতা ফিরে আসার ক্ষেত্র তৈরি হবে, যা বাণিজ্যিক জাহাজগুলোর নিরাপত্তার জন্য ভয়ংকর পরিণতি বয়ে আনতে পারে।
একই ধরনের ঘটনায় গত মাসে অভিযান চালিয়ে মাল্টার পতাকাবাহী এমভি রুয়েন জাহাজটি উদ্ধার করেন ভারতীয় কমান্ডোরা। গত ডিসেম্বরে জাহাজটি ছিনতাই হয়েছিল। ওই অভিযানে সন্দেহভাজন ৩৫ দস্যুকে গ্রেপ্তার করা হয়। পরে বিচারের জন্য তাঁদের ভারতের মুম্বাইয়ে নিয়ে যাওয়া হয়।
ইইউর এমন সতর্কতাকে এই অঞ্চলে জলদস্যুতার ক্রমাগত হুমকি এবং এই হুমকি মোকাবিলায় আন্তর্জাতিক সহযোগিতার গুরুত্বের বিষয়ে কড়া সতর্কবার্তা হিসেবে দেখা হচ্ছে। দারিদ্র্য, অস্থিতিশীলতা ও সোমালিয়ায় অর্থনৈতিক সুযোগ-সুবিধার ঘাটতিসহ দস্যুতার মূল কারণগুলো মোকাবিলায় সমন্বিত পদক্ষেপের ওপরও ইইউ জোর দিয়েছে।
আন্তর্জাতিক সম্প্রদায় অব্যাহতভাবে জলদস্যুতার হুমকি মোকাবিলা করছে। তারা আশা করছে, এ দস্যুতা মোকাবিলায় সমুদ্রপথের নিরাপত্তা জোরদারে এবং আঞ্চলিক দেশগুলোর সক্ষমতা বাড়াতে সমন্বিত পদক্ষেপ নেওয়া হয়। একই সঙ্গে এ সমস্যার নেপথ্যে থাকা মূল কারণগুলো মোকাবিলায় সোমালিয়ায় টেকসই উন্নয়নকে এগিয়ে নেওয়া হবে।