যুক্তরাজ্যের প্রধানমন্ত্রী ঋষি সুনাক
যুক্তরাজ্যের প্রধানমন্ত্রী ঋষি সুনাক

যুক্তরাজ্য

নির্বাচনে বিদেশি হস্তক্ষেপ ঠেকাতে সুনাককে আহ্বান

যুক্তরাজ্যের আগামী ৪ জুলাইয়ের সাধারণ নির্বাচনের আগে বিদেশি হস্তক্ষেপের আশঙ্কা করা হচ্ছে।

যুক্তরাজ্যের আগামী ৪ জুলাইয়ের সাধারণ নির্বাচনের আগে বিদেশি হস্তক্ষেপের আশঙ্কা করা হচ্ছে। এ জন্য দেশটির প্রধানমন্ত্রী ঋষি সুনাককে প্রস্তুত থাকতে বলেছে দেশটির পার্লামেন্টের নিরাপত্তা কমিটি। গত শুক্রবার কমিটির পক্ষ থেকে এ সতর্কতা জারি করা হয়।

সুনাককে দেওয়া এক চিঠিতে ন্যাশনাল সিকিউরিটি স্ট্র্যাটেজিক জয়েন্ট কমিটির (জেসিএনএসএস) চেয়ারম্যান মার্গারেট বেকেট লিখেছেন, চীন, রাশিয়া, ইরান ও উত্তর কোরিয়ার পক্ষ থেকে নির্বাচনে হস্তক্ষেপের লক্ষণ দেখা গেছে। এর আগে ২০১৯ সালের যুক্তরাজ্যের নির্বাচনে রাশিয়ার হস্তক্ষেপের ঘটনা খুঁজে পেয়েছিলেন নিরাপত্তা কর্মকর্তারা। চীনও এখন গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়ায় হস্তক্ষেপের চেষ্টা করছে।

চিঠিতে আরও বলা হয়, যুক্তরাজ্যকে অবশ্যই বিদেশি হস্তক্ষেপের আশঙ্কার জন্য প্রস্তুত থাকতে হবে। এ হস্তক্ষেপের মধ্যে সাইবার আক্রমণ, আইনপ্রণেতাদের ব্ল্যাকমেল, অনলাইনে ভুয়া তথ্য ছড়ানো; যার মধ্যে আছে কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা ব্যবহার করে ডিপফেক বা ভুয়া ভিডিও তৈরি এবং বিতর্কিত বিষয় নিয়ে বিভাজন বাড়িয়ে দেওয়ার মতো বিষয়। ওই কমিটির পরামর্শ হচ্ছে সরকারের উচিত জনগণকে ভুল তথ্য শনাক্ত করতে এবং নির্বাচিত রাজনীতিবিদদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে ব্যবস্থা করা।

উল্লেখ্য, সম্প্রতি স্থানীয় নির্বাচনে বিরোধী দলের কাছে ব্যাপক হারের পর চাপের মুখে আগামী ৪ জুলাই যুক্তরাজ্যে সাধারণ নির্বাচনের ঘোষণা দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী ঋষি সুনাক। ২০২২ সালের অক্টোবরে তাঁকে প্রধানমন্ত্রী নির্বাচিত করেন ব্রিটিশ পার্লামেন্টে সংখ্যাগরিষ্ঠ দল কনজারভেটিভদের এমপিরা। প্রধানমন্ত্রী হিসেবে এই প্রথম সাধারণ নির্বাচনের মুখে পড়তে হচ্ছে সুনাককে। লড়াইটা মোটেও সহজ হবে না সুনাকের কাছে। বর্তমানে জনপ্রিয়তার দিক থেকে ঋষি সুনাকের দলের চেয়ে স্যার কিয়ার স্টারমারের লেবার পার্টি ২০ পয়েন্ট এগিয়ে রয়েছে।

বুধবার নিজ দলের প্রতি ভোট চেয়ে ঋষি সুনাক বলেন, এই নির্বাচন এমন এক সময়ে অনুষ্ঠিত হবে, যখন বিশ্ব স্নায়ুযুদ্ধের অবসানের পর থেকে সবচেয়ে বিপজ্জনক অবস্থায় রয়েছে। তিনি এ মন্তব্যের মধ্য দিয়ে নিরাপত্তার বিষয়টি তাঁর প্রচারের মূল বিষয় করার ইঙ্গিত দিয়েছেন। এ ছাড়া আগাম নির্বাচন হলে সুনাক তাঁর কিছু আপাতসফলতার কথা প্রচারের সুযোগ পাবেন। এর একটি হলো মুদ্রাস্ফীতির এখনকার হার।

এদিকে দেশের প্রধানমন্ত্রী কে হবেন-সে প্রশ্নে ঋষি সুনাক বলেন, ‘জুলাই মাসের ৫ তারিখে আমি অথবা স্যার কিয়ার স্টারমারের যেকোনো একজন প্রধানমন্ত্রী হব।’ তিনি আরও বলেন, ‘আগামী কয়েক সপ্তাহ আমি প্রতিটি ভোটের জন্য লড়াই করব। আমি আপনাদের আস্থা অর্জন করব।’

নির্বাচনী প্রচার শুরুর আগে-পরে লেবার পার্টিসহ অন্যরা বারবার বলবে, পরিবর্তন দরকার। আর এটা পরিবর্তনের জন্য উপযুক্ত সময়। এর বিপরীতে কনজারভেটিভরা বারবার ভোটারদের একটি কথাই বলবে, যা-ই ঘটুক না কেন, আপনি যা চান, সেটা নিয়ে সতর্ক থাকুন। যুক্তরাজ্যের আগাম নির্বাচনে দুটি ঘটনা ঘটতে পারে। প্রথমত, জনমত জরিপের ফল সত্য প্রমাণ করে সরকার বদলে যেতে পারে। দ্বিতীয়ত, তারা ভুল প্রমাণিত হতে পারে। সেটা সাম্প্রতিক বছরগুলোর মধ্যে সবচেয়ে বড় বিপর্যয়ের একটি হতে পারে।