ইউরোপীয় ইউনিয়নভুক্ত দেশের ৮১টি গণমাধ্যম নিষিদ্ধ করেছে রাশিয়া। দীর্ঘদিন ধরে রাশিয়াবিরোধী সংবাদ প্রচারের অভিযোগ আনা হয়েছে এই গণমাধ্যমগুলোর বিরুদ্ধে। এ ছাড়া ইউক্রেন যুদ্ধ নিয়েও তারা অসত্য তথ্য দিচ্ছে বলেও অভিযোগ রাশিয়ার। ফলে রুশ জনগণ এখন আর এসব গণমাধ্যম দেখতে পারবেন না।
বস্তুত, ইউক্রেনের অভিযানকে যুদ্ধ বলছে না রাশিয়া। এটিকে বিশেষ সেনা অভিযান বলা হচ্ছে। কেউ একে যুদ্ধ বললে তার বিরুদ্ধে আইনি ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে। কিন্তু অধিকাংশ গণমাধ্যমই এটিকে যুদ্ধ বলছে।
এর আগেও বেশ কিছু স্বাধীন গণমাধ্যমের ওপর নিষেধাজ্ঞা জারি করেছিল রাশিয়া। প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনের বিরুদ্ধে মুখ খুললেই গণমাধ্যমগুলো বন্ধ করে দেওয়ার হুমকি দেওয়া হচ্ছে।
মঙ্গলবার রাশিয়ার পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, এ সিদ্ধান্তের পেছনে রয়েছে মে মাসের একটি ঘটনা। সেই সময় ইউরোপীয় ইউনিয়ন রাশিয়ার চারটি গণমাধ্যমের ওপর নিষেধাজ্ঞা জারি করেছিল। অভিযোগ ছিল, ক্রেমলিনের হয়ে অপপ্রচার করছে ওই গণমাধ্যমগুলো। প্রাগের ভয়েস অব ইউরোপও সেই তালিকায় ছিল, যারা সরাসরি পশ্চিমা বিশ্বের বিরোধিতা করে। ইইউর এই পদক্ষেপের কড়া সমালোচনা করেছিল রাশিয়া।
যে গণমাধ্যমগুলো বন্ধ করা হয়েছে, তার মধ্যে ফরাসি সংবাদ সংস্থা এএফপি, জার্মানির স্পিগেল, স্পেনের এল প্যারিস, অস্ট্রিয়া ও ইতালির জাতীয় সংবাদ সংস্থা আছে। নিষেধাজ্ঞা জারি হয়েছে বিখ্যাত সংবাদমাধ্যম পলিটিকোর ওপরও।
ইইউর ভাইস প্রেসিডেন্ট রাশিয়ার এই পদক্ষেপকে নির্বোধের কাজ হিসেবে আখ্যায়িত করেছে। তাঁর দাবি, যে গণমাধ্যমগুলোর ওপর নিষেধাজ্ঞা জারি হয়েছে, তারা কেউ প্রোপাগান্ডা মেশিন নয়।
মস্কো জানিয়েছে, তারা এই পদক্ষেপ ফিরিয়ে নিতে পারে। সে ক্ষেত্রে ইইউ রাশিয়ার যে গণমাধ্যমগুলোর ওপর নিষেধাজ্ঞা জারি করেছে, তা তুলে নিতে হবে।
রাশিয়া বলেছে, ‘আমরা বারবার সতর্ক করেছিলাম। ইইউতে যে সংবাদপ্রতিষ্ঠানগুলো রাশিয়ার পক্ষে কথা বলছে, তাদের সাংবাদিকদের সমস্যায় ফেলা যাবে না। সংবাদমাধ্যমের কাজে বাধা সৃষ্টি করা যাবে না। কিন্তু ইইউ তখন সে কথা শোনেনি।’
২০২২ সালে ইউক্রেনে অভিযান শুরু করার পর অনেক পশ্চিমা গণমাধ্যমে তাদের কর্মীদের রাশিয়া থেকে নিয়ে যায়। কারণ, সংবাদমাধ্যম ও সাংবাদিকদের বিরুদ্ধে একাধিক আইন পাস করে রাশিয়ার পার্লামেন্ট। ডয়চে ভেলেকেও সে সময় নিষিদ্ধ করেছিল রাশিয়া।
গতকালের নিষেধাজ্ঞা জারির এক দিন আগে ওয়াল স্ট্রিট জার্নালের রিপোর্টার ইভান গারশকোভিচের বিরুদ্ধে মামলা শুরু হয়েছে। আগেই তাঁকে গ্রেপ্তার করা হয়েছিল।