ফ্রান্সের পার্লামেন্ট নির্বাচনের পর কোনো দলই একক সংখ্যাগরিষ্ঠতা পায়নি। ফলে সরকার গঠনে সৃষ্টি হয়েছে অচলাবস্থা। হাঁটতে হচ্ছে ঝুলন্ত পার্লামেন্টের দিকে। সরকার গঠনে এ অচলাবস্থার জন্য দেশটির প্রেসিডেন্ট এমানুয়েল মাখোঁকেই দুষছেন ডানপন্থী নেতা মারিঁ লো পেন। ফ্রান্সের বামপন্থী জোট ও মাখোঁর মধ্যপন্থী জোট মিলে ডানপন্থী দলকে দ্বিতীয় দফার নির্বাচনে জিতে সরকার গঠন করতে দেয়নি। গত রোববারের এ নির্বাচনে বামপন্থী নিউ পপুলার ফ্রন্ট (এনএফপি) সবচেয়ে বেশি আসন পেলেও সরকার গঠনের মতো সংখ্যাগরিষ্ঠতা অর্জন করতে পারেননি। সরকার গঠনের পথ স্থিতিশীল না হওয়ায় ফ্রান্সের রাজনৈতিক পরিস্থিতি অনিশ্চয়তার মুখে পড়েছে।
বামপন্থী, ডানপন্থী ও মধ্যপন্থী জোটের নেতারা সরকার গঠনের জন্য পরস্পরের সঙ্গে চুক্তিতে যেতে অসম্মতি জানানোয় পরিস্থিতি আরও জটিল হয়েছে। এ নির্বাচনের ফলে ভোটারদের মধ্যে রাজনৈতিক প্রভাব খাটানো নিয়ে দলগুলোর অভ্যন্তরেও নানা উদ্বেগ তৈরি হয়েছে। যে জোটই ক্ষমতায় আসার জন্য সরকার গঠন করুক না কেন, তারা যথেষ্ট সংখ্যাগরিষ্ঠতা দেখাতে না পারলে পার্লামেন্টে দ্রুত বিরোধীদের অনাস্থা ভোটের মুখে পড়বে।
লো পেন বলেন, ‘আমরা এমন একটি পরিস্থিতির মধ্যে পড়েছি, যেখানে প্রধানমন্ত্রী কোথা থেকে আসবেন বা কোন নীতি গ্রহণ করা হবে, তা কেউ বলতে পারছেন না। তিনি নির্বাচনের আগে মাখোঁর মধ্যপন্থী জোটের সঙ্গে বামপন্থীদের চুক্তির নিন্দা করেন। তিনি অভিযোগ করেন, এই চুক্তির ফলে তাঁর ডানপন্থী ন্যাশনাল র্যালি ক্ষমতায় আসতে পারেনি।
ইউরোপীয় পার্লামেন্টের (ইইউ) নির্বাচনে হারের পর পার্লামেন্ট ভেঙে দিয়েছিলেন ফ্রান্সের প্রেসিডেন্ট এমানুয়েল মাখোঁ। এরপর দ্রুত নির্বাচনের ডাক দিয়েছিলেন। ফ্রান্সে নিজের জনপ্রিয়তা নতুন করে তৈরি করতে এ পদক্ষেপ নিয়েছিলেন। কিন্তু তিনি যা ভেবেছিলেন, বাস্তবে তা হয়নি। লো পেন বলেন, পরিস্থিতি যা দাঁড়িয়েছে, তা মাখোঁর জন্য দুর্দান্ত কোনো সাফল্য নয়।
সরকার গঠনের জন্য সবচেয়ে বড় সংসদীয় দলকে আহ্বান জানাতে পারে মাখোঁ। কিন্তু বর্তমান পরিস্থিতিতে সংবিধান অনুযায়ী তিনি তা করতে বাধ্য নন। বিকল্পের মধ্যে রয়েছে একটি বড় জোট গঠন করে ক্ষমতায় আসা বা একটি সংখ্যালঘু সরকার, যা অ্যাডহক চুক্তিসহ সংসদে আইন পাস করবে।