ইউক্রেনের পশ্চিমাঞ্চলে রাশিয়ার ব্যাপক হামলা

রাশিয়ার কাছ থেকে নিজেদের ভূখণ্ড উদ্ধারে লড়াই করে যাচ্ছেন ইউক্রেনের সেনারা। তাঁদের সঙ্গে দেখা করতে গিয়েছিলেন দেশটির প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কি। এ সময় তাঁর সঙ্গে ছবি তোলেন সেনারা। গত সোমবার দোনেৎস্ক অঞ্চলে
ছবি: এএফপি

ইউক্রেনের পশ্চিমাঞ্চলীয় দুটি শহরে ব্যাপক ক্ষেপণাস্ত্র হামলা চালিয়েছে রাশিয়া। গতকাল মঙ্গলবার দিনের শুরুতে লুতস্ক শহরে ক্ষেপণাস্ত্র হামলায় কমপক্ষে তিনজন নিহত হন। হামলা হয়েছে পশ্চিমাঞ্চলীয় লিভিভ শহরেও। সাম্প্রতিক দিনগুলোতে যুদ্ধের সম্মুখভাগ থেকে অনেক দূরের এসব শহরে হামলা বাড়িয়েছে রুশ বাহিনী।

প্রায় তিন ডজন ক্ষেপণাস্ত্র নিক্ষেপ করা হয়েছে বলে ইউক্রেনের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে। হামলায় দেশটির পশ্চিমাঞ্চলের সবচেয়ে বড় শহর লিভিভের একটি খেলার মাঠ ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। আগুনে ভস্মীভূত হয় একটি পাঁচতলা ভবন।

এমন সময় কয়েক ধরনের ক্ষেপণাস্ত্র দিয়ে দফায় দফায় হামলা চালানো হলো, যখন রাশিয়ার প্রতিরক্ষামন্ত্রী সের্গেই শোইগু বলছেন, ইউক্রেনের সামরিক সরঞ্জাম ফুরিয়ে আসছে। যুদ্ধক্ষেত্রে কিয়েভের অগ্রগতিও ধীর। মস্কোয় একটি সমরাস্ত্র প্রদর্শনীতে শোইগু এসব কথা বলেন।

লুতস্কের মেয়র ইগোর পোলিশচাক সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে হতাহতের সংখ্যাটি জানান। তিনি বলেন, জীবিত ব্যক্তিদের উদ্ধারে কাজ করছেন জরুরি পরিষেবার উদ্ধারকর্মীরা। পরে ধ্বংসস্তূপ থেকে একজনকে উদ্ধারের কথা জানান তাঁরা।

লুতস্ক শহর থেকে পোল্যান্ড সীমান্তের দূরত্ব ১০০ কিলোমিটারের কম। আঞ্চলিক গভর্নর ইউরি পোগুলিয়াইকো বলেন, রাতের ওই ক্ষেপণাস্ত্র হামলা প্রতিহত করেছে ইউক্রেনের আকাশ প্রতিরক্ষাব্যবস্থা। তবে একটি ক্ষেপণাস্ত্র লুতস্কের একটি শিল্প স্থাপনায় আঘাত হানে।

‘কোনো জায়গাই নিরাপদ নয়’

এদিকে পশ্চিম ইউক্রেনে বিক্ষিপ্তভাবে প্রাণঘাতী হামলা চালিয়ে আসছিল রাশিয়া। গত বছরের মার্চে লুতস্কের সামরিক বিমানবন্দরে রাশিয়ার হামলায় ইউক্রেনের চার সেনা নিহত ও ছয়জন আহত হন। তবে সাম্প্রতিক সপ্তাহগুলোতে পশ্চিম ইউক্রেনে হামলা জোরদার করেছে রুশ বাহিনী। গত সপ্তাহে ইভানো-ফ্রাঙ্কিভস্ক শহরের বিমানঘাঁটিতে ক্রুজ ক্ষেপণাস্ত্র হামলা চালানো হয়। এতে আট বছরের এক শিশু নিহত হয়।

লিভিভের মেয়র আন্দ্রি সাদোভি বলেন, কয়েকটি ক্ষেপণাস্ত্র ভূপাতিত করা হয়েছে। তবে কয়েক ডজন ভবন ক্ষতিগ্রস্ত ও চারজন আহত হওয়ার বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন তিনি।

লিভিভের বাসিন্দা অবসরপ্রাপ্ত অর্থনীতিবিদ ওলগা বুরা (৬৪) বলেন, ‘ইউক্রেনে নিরাপদ কোনো জায়গা আর অবশিষ্ট নেই।’ সর্বশেষ হামলায় শহরের উপকণ্ঠে তাঁর বাড়িও ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।

অস্ত্রের মজুত ফুরাচ্ছে ইউক্রেনের

ইউক্রেনের লড়াইয়ের সামর্থ্য মূল্যায়ন করতে গিয়ে রাশিয়ার প্রতিরক্ষামন্ত্রী শোইগু বলেছেন, পশ্চিমাদের সমন্বিত সহায়তা সত্ত্বেও লক্ষ্য অর্জনে সক্ষম নয় ইউক্রেনের সশস্ত্র বাহিনী। রুশ প্রতিরক্ষামন্ত্রী আরও বলেন, যুদ্ধের প্রাথমিক ফলাফল দেখা যাচ্ছে, ইউক্রেনের সামরিক সরঞ্জাম প্রায় ফুরিয়ে গেছে।