গুপ্তচরবৃত্তির অভিযোগে রাশিয়ায় আটক এক মার্কিন সাংবাদিককে মুক্তি দিতে মস্কোর প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্রমন্ত্রী অ্যান্টনি ব্লিঙ্কেন। রোববার তিনি রুশ পররাষ্ট্রমন্ত্রী সের্গেই লাভরভের সঙ্গে ফোনালাপে এই আহ্বান জানান। এর আগে গত সপ্তাহে ওই মার্কিন সাংবাদিককে আটকের কথা জানায় রাশিয়া।
ওয়াল স্ট্রিট জার্নালের ওই সাংবাদিকের নাম ইভান গার্শকোভিচ (৩১)। আটকের বিষয়টি গত বৃহস্পতিবার (৩০ মার্চ) নিশ্চিত করে রাশিয়ার শীর্ষ গোয়েন্দা সংস্থা এফএসবি। গোপন তথ্য হস্তগত করার চেষ্টাকালে রাশিয়ার ইয়েকাতেরিনবার্গ শহর থেকে গার্শকোভিচকে আটক করা হয়েছিল বলে তখন দাবি করেছিল ক্রেমলিন।
মার্কিন পররাষ্ট্র দপ্তর জানায়, রুশ পররাষ্ট্রমন্ত্রী সের্গেই লাভরভের সঙ্গে ফোনে কথা বলেছেন অ্যান্টনি ব্লিঙ্কেন। ফোনালাপের সময় তিনি রাশিয়ার পররাষ্ট্রমন্ত্রীকে সম্প্রতি আটক ওয়াল স্ট্রিট জার্নালের সাংবাদিক গার্শকোভিচ ও রাশিয়ায় চার বছরের বেশি কারাদণ্ড পাওয়া এক মার্কিন নাগরিককে মুক্তি দেওয়ার আহ্বান জানান।
সের্গেই লাভরভের সঙ্গে ফোনালাপে অ্যান্টনি ব্লিঙ্কেন গুপ্তচরবৃত্তির অভিযোগে সাংবাদিক ইভান গার্শকোভিচকে আটক করার ঘটনায় গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করেন। মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী একই সঙ্গে রাশিয়ায় কারাদণ্ড পাওয়া মার্কিন নাগরিক পল ওয়েলানকে অবিলম্বে মুক্তি দেওয়ার জন্য রাশিয়ার পররাষ্ট্রমন্ত্রীর প্রতি আহ্বান জানান।
ওয়াল স্ট্রিট জার্নাল জানায়, গত বুধবার মস্কো থেকে এক হাজার মাইল দূরের ইয়েকাতেরিনবার্গে থাকা ইভানের সঙ্গে যোগাযোগ বন্ধ হয়ে যায়। মার্কিন কর্মকর্তারা বলেন, ইভানের গাড়িচালক তাঁকে একটি রেস্তোরাঁয় নামিয়ে আসার দুই ঘণ্টা পর থেকে তাঁর ফোন যোগাযোগ বন্ধ হয়। পরদিন তাঁকে গ্রেপ্তারের কথা জানায় মস্কো।
এফএসবির দাবি, যুক্তরাষ্ট্রের নির্দেশে কাজ করার অভিযোগে তাঁকে আটক করা হয়েছে। তিনি রাষ্ট্রের গোপনীয় তথ্য সংগ্রহে জড়িত। তাঁর বিরুদ্ধে গুপ্তচরবৃত্তির অভিযোগ তদন্ত করা হচ্ছে। তাঁকে আনুষ্ঠানিক গ্রেপ্তার দেখিয়ে মস্কোর আদালতে তোলা হয়েছে। আদালত ২৯ মে পর্যন্ত তাঁকে কারাগারে রাখার আদেশ দিয়েছেন।
রাশিয়ার গুপ্তচরবৃত্তির অভিযোগে সর্বোচ্চ ২০ বছর কারাদণ্ড হতে পারে। বার্তা সংস্থা তাস জানায়, আটক ইভান তাঁর বিরুদ্ধে আনা অভিযোগ অস্বীকার করেছেন। উল্লেখ্য, রাশিয়ায় আটক হওয়ার কিছুদিন আগে ইভান গার্শকোভিচ ওয়াল স্ট্রিট জার্নালে রাশিয়ার ক্ষয়িষ্ণু অর্থনীতি ও সামরিক ব্যয় নিয়ে প্রতিবেদন প্রকাশ করেন।
বিশ্বব্যাপী সাংবাদিকদের অধিকার নিয়ে কাজ করা সংগঠন রিপোর্টার্স উইদাউট বর্ডারস (আরএসএফ) বলছে, সাংবাদিক ইভান গার্শকোভিচ রাশিয়ায় ভাগনার গ্রুপের ওপর কাজ করতে গিয়েছিলেন। তিনি সেখানে এক বছরের বেশি সময় ধরে কাজ করছেন। এর আগে তিনি এএফপি ও মস্কো টাইমসেও কাজ করেছেন।