উড়োজাহাজ বিধ্বস্তের ঘটনায় নিহত আরোহীদের মধ্যে ভাড়াটে যোদ্ধা সরবরাহকারী প্রতিষ্ঠান ভাগনার গ্রুপের প্রধান ইয়েভগেনি প্রিগোশিন আছেন কি না, তা শনাক্তের কাজ চলছে বলে জানিয়েছেন ক্রেমলিনের মুখপাত্র দিমিত্রি পেসকভ। একই সঙ্গে প্রিগোশিনের শেষকৃত্যে রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন অংশ নেবেন কি না, তা জানিয়েছেন তিনি।
রাশিয়ার রাজধানী মস্কো থেকে সেন্ট পিটার্সবার্গ শহরে যাওয়ার পথে গত বুধবার বিধ্বস্ত হয় ওই উড়োজাহাজটি। সেটিতে থাকা ১০ আরোহীর সবার মৃত্যু হয়েছে। যাত্রী তালিকায় ছিল প্রিগোশিন ও ভাগনারের আরেক কমান্ডার দিমিত্রি উতকিনের নাম। এ ঘটনার পেছনে পুতিন কলকাঠি নেড়েছে বলে অভিযোগ করেছে যুক্তরাষ্ট্র, যুক্তরাজ্য, ফ্রান্স, জার্মানি, পোল্যান্ডসহ বিভিন্ন দেশ।
এ নিয়ে আজ শুক্রবার পেসকভ সাংবাদিকদের বলেন, অবশ্যই, পশ্চিমা দেশগুলোতে নির্দিষ্ট একটি দৃষ্টিভঙ্গি থেকে জল্পনাগুলো সামনে আনা হচ্ছে। এগুলোর সবই ডাহা মিথ্যা। এ সময় সবাইকে ধৈর্য ধরার আহ্বান জানিয়ে তিনি আরও বলেন, চলমান তদন্তে ভয়াবহ এ দুর্ঘটনার কারণগুলো উদ্ঘাটিত হবে।
কথোপকথনের সময় পেসকভকে জিজ্ঞাসা করা হয়, প্রিগোশিনের শেষকৃত্যে পুতিন উপস্থিত থাকবেন কি না। জবাবে তিনি বলেন, এই মুহূর্তে শেষকৃত্যের জন্য কোনো দিন নির্ধারণ করা হয়নি। তাই এটা নিয়ে কিছু জানানো সম্ভব নয়। আর এই মুহূর্তে প্রেসিডেন্ট ব্যস্ত সময় পার করছেন।
গত ২৩ জুন বিদ্রোহ ঘোষণা করেন প্রিগোশিন। তাঁর ওই বিদ্রোহকে ‘পিঠে ছুরি মারার মতো’ বলে আখ্যা দিয়েছিলেন পুতিন। এর পর থেকে প্রিগোশিনের বিরুদ্ধে প্রচারণা চালিয়েছে ক্রেমলিন। তবে ভাগনার যোদ্ধাদের নিয়ে বরাবরই ইতিবাচক তারা। ইউক্রেনে রাশিয়ার হয়ে বড় সফলতা এনে দিয়েছেন ভাগনার যোদ্ধারা।
ভাগনার যোদ্ধাদের নিয়ে সেই ইতিবাচক সুরেই কথা বলেছেন পেসকভ। তিনি বলেন, প্রেসিডেন্ট যেমনটি আগে বলেছেন, ভাগনার গ্রুপ ইউক্রেনে বিশেষ সামরিক অভিযানে বড় ভূমিকা রেখেছে। এসব মানুষের বীরত্বের কথা কখনো হারিয়ে যাবে না।
এদিকে ভাগনার বিদ্রোহের পর বেলারুশের মধ্যস্থতায় ক্রেমলিনের সঙ্গে প্রিগোশিনের একটি চুক্তি হয়েছিল। ওই চুক্তি অনুযায়ী বেলারুশে ‘নির্বাসনে’ যেতে রাজি হয়েছিলেন প্রিগোশিন। তাঁর বাহিনীর অনেক যোদ্ধাও দেশটিতে অবস্থান নিয়েছেন। প্রিগোশিনের মৃত্যুর পেছনে পুতিনের হাত রয়েছে বলে মানতে নারাজ বেলারুশের প্রেসিডেন্ট আলেকসান্দার লুকাশেঙ্কো। আজ তিনি বলেছেন, ‘তিনি (পুতিন) খুবই ধীরস্থির ও হিসাব-নিকাশ করে অন্যদের বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেন। তাই আমি ধারণাও করতে পারি না যে পুতিন এটি করেছেন।’