বৈধ কাগজ না থাকা বিদেশিদের শ্রমবাজারে যুক্ত করা এবং বিদেশ থেকে কর্মী আনার নিয়ম শিথিল করেছে স্পেন। গত মঙ্গলবার এ–সংক্রান্ত আইন পরিবর্তন করেছে দেশটি। পর্যটন, কৃষিশিল্পের মতো কর্মী সংকটে থাকা খাতগুলোর চাহিদা মেটাতে বিদ্যমান অভিবাসন আইন সংস্কার করেছে স্পেন। এর ফলে চাকরিদাতা প্রতিষ্ঠানগুলো সহজে বিদেশ থেকে কর্মী আনার অনুমতি পাবেন। পাশাপাশি স্পেনে এখন বসবাস করছেন এমন অভিবাসীদের নিয়োগ দিতে আলাদা করে আর কাজের অনুমতির প্রয়োজন হবে না৷
দেশটির অভিবাসন মন্ত্রণালয়ের মতে, আগের প্রক্রিয়াটি ধীর আর প্রয়োজনের সঙ্গে সংগতিপূর্ণ না হওয়ায় স্পেন সামাজিক ও অর্থনৈতিকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছিল।
নতুন নিয়ম অনুযায়ী দুই বছর বা তার বেশি সময় ধরে দেশটিতে বসবাসরত বিদেশিরা এখন সাময়িক বসবাসের অনুমতিপত্র সংগ্রহ করতে পারবেন৷ এ জন্য শর্ত হিসেবে কর্মী সংকট থাকা খাত সংশ্লিষ্ট কোনো প্রশিক্ষণে নিবন্ধন করতে হবে৷ এ ছাড়া যাঁরা ছয় মাস ধরে কাগজবিহীনভাবে কাজ করেছেন, তাঁরা প্রমাণ সাপেক্ষে বৈধভাবে কাজের অনুমতির জন্য আবেদন করতে পারবেন৷ সরকারের হিসাবে স্পেনে পাঁচ লাখ মানুষ আছেন, যাঁরা এখন অনানুষ্ঠানিকভাবে কাজে নিযুক্ত আছেন।
আইনটির কারণে কর্মীসংকট থাকা খাতগুলোর জন্য বিদেশিদের কাজ ও ভিসা পাওয়ার উপায়ও সহজ হবে৷ বিদেশি শিক্ষার্থীরা দেশটিতে পড়াশোনা শেষ করার সঙ্গে সঙ্গেই কাজে যোগ দিতে পারবেন৷ আগের নিয়ম অনুযায়ী, তাঁদের তিন বছর পর্যন্ত অপেক্ষা করতে হবে না৷ এ ছাড়া পড়াশোনারত অবস্থায় তাঁরা সপ্তাহে ৩০ ঘণ্টা পর্যন্ত কাজের অনুমতি পাবেন৷
বর্তমানে স্পেনে বেকারত্বের হার ১৩ দশমিক ৬-৫ শতাংশ। এটি ইউরোপের দেশগুলোর মধ্যে অন্যতম। তবে চাকরিদাতাদের তথ্য অনুযায়ী, পর্যটন, কৃষি, নির্মাণ ও পণ্য পরিবহন খাতে কর্মীসংকটে ভুগছে তারা। ইউরোপীয় ইউনিয়নভুক্ত দেশগুলোর নাগরিকদের কাজের অনুমতি সত্ত্বেও চাহিদা মেটানো সম্ভব হচ্ছে না৷ কিছু নির্দিষ্ট খাতে কর্মীর চাহিদা পূরণে মরক্কো, ইকুয়েডর ও কলম্বিয়ার সঙ্গে অভিবাসন কর্মসূচি রয়েছে দেশটির৷
মরক্কো থেকে সমুদ্র পেরিয়ে প্রতিবছর কয়েক হাজার মানুষ স্পেনে আসার চেষ্টা করেন৷ তাঁদের অনেকেই নিয়মবহির্ভূতভাবে অনানুষ্ঠানিক শ্রম খাতে কাজে নিযুক্ত হন৷ নতুন আইনের ফলে এই পরিস্থিতির পরিবর্তন হবে বলে আশা করছে দেশটির সরকার। তথ্যসূত্র: এএফপি ও আরব নিউজ