যেসব শিশু দীর্ঘদিন ধরে হাসপাতালে ভর্তি থাকে, তাদের পড়াশোনার ক্ষতি হয়। অনেকে শিক্ষা কার্যক্রমে অংশ নিতে না পেরে পিছিয়েও যায়। এই সংকট দূর করতে নতুন উদ্যোগ নিয়েছে তুরস্কের শিক্ষা মন্ত্রণালয়। হুরিয়েত ডেইলি নিউজ–এর খবরে বলা হয়েছে, দেশটির শিক্ষামন্ত্রী মাহমুত ওজার ঘোষণা দিয়েছেন, ৮১টি প্রদেশেই হাসপাতালগুলোয় শ্রেণিকক্ষ খোলা হবে। এসব কক্ষে হাসপাতালে থাকা শিশুদের পড়ানো হবে।
তুরস্কে একটি নির্দিষ্ট ক্লাস পর্যন্ত পড়াশোনা বাধ্যতামূলক। সরকারের শিক্ষা দপ্তরের দেওয়া তথ্য অনুসারে, শিশুকে ১২ বছর পড়তেই হবে। এর মধ্যে তিনটি ভাগ রয়েছে। এর প্রথম ধাপটি হলো প্রাথমিক। এ ধাপে ৬ থেকে ১০ বছরের শিশুরা পড়ে থাকে। এই ধাপে চতুর্থ শ্রেণি পর্যন্ত পড়ানো হয়। এরপর এলিমেন্টারি ধাপ। এই ধাপে ১০ থেকে ১৪ বছরের শিশুরা পড়ে থাকে। এখানে পঞ্চম থেকে অষ্টম শ্রেণি পর্যন্ত পড়ানো হয়। এরপর মাধ্যমিকের ধাপে ১৪ থেকে ১৭ বছরের শিশুরা পড়ার সুযোগ পায়। নবম থেকে দ্বাদশ শ্রেণি পর্যন্ত পড়ানো হয় এখানে। এই ধাপ পর্যন্ত বিনা মূল্যে সরকারি বিদ্যালয়গুলোয় পড়ার সুযোগ রয়েছে। তুরস্কের শিক্ষা মন্ত্রণালয় বলছে, যে বয়স পর্যন্ত পড়াশোনা বাধ্যতামূলক, তাদের পড়ার সুযোগ দেওয়া হবে হাসপাতালের শ্রেণিকক্ষে।
সরকারের বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, দেশের যত শহর রয়েছে, সব শহরে গুরুত্বপূর্ণ সব হাসপাতালে এমন শ্রেণিকক্ষ খোলা হবে।
হাসপাতালে পড়ানোর উদ্যোগ ইতিমধ্যে চালু রয়েছে তুরস্কে। তবে সেটা সব প্রদেশে নেই। বর্তমানে ২২টি প্রদেশে ৫১টি হাসপাতালে এই ব্যবস্থা চালু রয়েছে। এতে দেড় হাজার শিক্ষার্থী পড়াশোনা করছে। হাসপাতালের প্রতিটি শ্রেণিকক্ষের জন্য দুজন শিক্ষক কাজ করে থাকেন। এমন আরও শিক্ষক দেওয়া হবে।
তুরস্কে আরেকটি ব্যবস্থা চালু রয়েছে। এটি হলো ‘হোম এডুকেশন’। কোনো শিক্ষার্থী যদি দেখাতে পারে, অসুস্থতার কারণে সে কমপক্ষে ১২ সপ্তাহ বিদ্যালয়ে যেতে পারবে না বা বিদ্যালয়ে গেলে তার স্বাস্থ্যঝুঁকি বাড়বে, তাহলে শিক্ষক বাসায় এসে তাকে পড়িয়ে যান। এই হোম এডুকেশন ও হাসপাতালে শ্রেণিকক্ষ–সেবার আওতায় ইতিমধ্যে ১১ হাজার শিক্ষার্থী উপকৃত হয়েছে। এ জন্য প্রায় ১২ হাজার শিক্ষক কাজ করে থাকেন।