গরুর খামারে মানুষের ভিড়। না, তাঁরা সেখানে দুধ বা দই কিনতে যাননি। তাঁদের চাওয়া খামারের গরুগুলোকে একটু আদর করা। আরও অবাক করার বিষয় হলো, গরুকে আদর করতে রীতিমতো পয়সা খরচ করে টিকিট কাটছেন তাঁরা।
এ চিত্র দেখা যাবে যুক্তরাজ্যের ইয়র্কশায়ার অঞ্চলের বেভারলি শহরে। ‘ডাম্বল ফার্ম’ নামে সেখানকার একটি খামার গরুর সঙ্গে সময় কাটানোর এ সুযোগ দিচ্ছে। খামারি ফিওনা উইলসনের ভাষ্য, কেউ কেউ কুকুর, বিড়াল বা ঘোড়া নিয়ে থাকতে চান। তবে অনেকেই আছেন, যাঁদের পছন্দ গরু। দুশ্চিন্তামুক্ত থাকতে প্রাণীগুলোর সঙ্গ অনেকটা থেরাপির মতো কাজ করে।
গরুর মাধ্যমে অর্থ কামানোর এ কৌশল মাথায় এল কীভাবে? এ প্রশ্নেরও জবাব দিয়েছেন ফিওনা। পেছনের কারণ হিসেবে তিনি দুষেছেন অর্থনীতিকে। বলেন, অর্থনৈতিক সংকটের কারণে বিপাকে পড়েছেন গরুর খামারিরা। মূল্যস্ফীতির কারণে খামার ব্যবসায় খরচ বেড়েছে। অপর দিকে দুধের দাম পড়ে গেছে। ফলে বাধ্য হয়েই আয়ের বিকল্প পথ খুঁজতে হয়েছে তাঁদের।
দুগ্ধজাত পণ্যের খামারের বেহাল চিত্র তুলে ধরেছে যুক্তরাজ্য সরকারও। দেশটির সরকারি তথ্য অনুযায়ী, ১৯৫০ সালে যুক্তরাজ্যে এমন খামার ছিল ১ লাখ ৯৬ হাজারটি। ১৯৯৫ সালে তা কমে দাঁড়ায় ৩৫ হাজার ৭০০টিতে। আর গত অক্টোবরের হিসাব অনুযায়ী, দেশটিতে এখন মাত্র ৭ হাজার ৫০০টি খামার রয়েছে।
ডাম্বল ফার্মে গরুকে আদর করতে জনপ্রতি ৬৩ ডলার (সাত হাজার টাকার বেশি) দিয়ে টিকিট কাটতে হবে। শুনলে অবাক হতে হয় যে টিকিটগুলো নাকি কয়েক মাস আগেই কিনে নেন লোকজন। টিকিট কাটা এমনই একজন স্টিভেন ক্লেওস। তিনি বলেন, ‘আমি সব প্রাণীকে ভালোবাসি। তবে বড় কোনো প্রাণীকে আদর করার মজাই আলাদা।’ আর তাঁর স্ত্রী এমা ক্লেওসের ভাষায়, ‘আগে ভাবিনি এখানে এতটা প্রশান্তি পাব। গরুগুলো খুব আদুরে।’