রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন
রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন

রাশিয়ার ভূখণ্ডে দুই পক্ষের তুমুল লড়াই

  • কিয়েভপন্থী যোদ্ধারা কুরস্ক অঞ্চলের কয়েকটি গ্রাম এখনো দখল করে রেখেছেন।

  • এই অনুপ্রবেশকে ‘বড় ধরনের উসকানি’ বলে মন্তব্য করেছেন প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন।

রাশিয়ার সীমান্তবর্তী কুরস্ক অঞ্চলে গতকাল বৃহস্পতিবার তৃতীয় দিনের মতো ইউক্রেনীয় সেনা ও কিয়েভপন্থী যোদ্ধাদের সঙ্গে রুশ সেনাদের তীব্র লড়াই হয়েছে। রাশিয়ার দক্ষিণ-পশ্চিমের সীমান্তবর্তী অঞ্চলটিতে গত মঙ্গলবার ইউক্রেনীয় সেনা ও কিয়েভপন্থী যোদ্ধারা ঢুকে পড়ে।

রাশিয়ার প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয় বুধবার জানায়, ইউক্রেনের সেনা ও কিয়েভপন্থী যোদ্ধারা কুরস্ক অঞ্চলের গভীরে ঢুকতে চেয়েছিলেন। কিন্তু তাঁদের সেই চেষ্টা ঠেকিয়ে দেওয়া হয়েছে।

প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়ের দাবি, বুধবার তাদের সেনারা ইউক্রেনের ৭টি ট্যাংক, সেনাসদস্যদের পরিবহনের আটটি গাড়ি, ৩টি পদাতিক বাহিনীর গাড়ি, ৩১টি যুদ্ধসংশ্লিষ্ট গাড়িসহ মোট ৫০টি সাঁজোয়া যান ধ্বংস করেছে।

রাশিয়ার এসব দাবি নিয়ে এখন পর্যন্ত ইউক্রেন কোনো মন্তব্য করেনি। তবে মস্কো থেকে আল–জাজিরার প্রতিবেদক জানান, কিয়েভপন্থী যোদ্ধারা কুরস্ক অঞ্চলের কয়েকটি গ্রাম এখনো দখল করে রেখেছেন।

২০২২ সালের ফেব্রুয়ারি ইউক্রেনে হামলা শুরুর পর এখন পর্যন্ত রাশিয়ার সীমান্তবর্তী অঞ্চলে কিয়েভপন্থী যোদ্ধাদের অনেকগুলো অনুপ্রবেশের ঘটনা ঘটেছে। এই যোদ্ধাদের ইউনিটের মধ্যে রাশিয়ান ভলান্টিয়ার কর্পস ও ফ্রিডম অব রাশিয়া লিজিয়ন অন্যতম। তবে কখনো কখনো ইউক্রেনের সেনারাও রুশ ভূখণ্ডে অনুপ্রবেশ করেছেন বলে দাবি করে আসছে মস্কো।

ইউক্রেনের সেনা ও কিয়েভপন্থী যোদ্ধাদের কুরস্ক অঞ্চলে অনুপ্রবেশকে ‘বড় ধরনের উসকানি’ বলে মন্তব্য করেছেন রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন। পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র মারিয়া জাখারোভা বুধবার নিজেদের ভূখণ্ডে কিয়েভপন্থী যোদ্ধাদের অনুপ্রবেশের ঘটনাকে ‘সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ড’ বলে মন্তব্য করেন।

রুশ ভূখণ্ডের ‘১০ কিমি ভেতরে’ অনুপ্রবেশ

ইনস্টিটিউট ফর দ্য স্টাডি অব ওয়ার (আইএসডব্লিউ) গতকাল বলেছে, রাশিয়ার ভেতরে ১০ কিলোমিটার (ছয় মাইল) পর্যন্ত অগ্রসর হয়েছেন ইউক্রেনীয় সেনা ও কিয়েভপন্থী যোদ্ধারা। এটিকে সবচেয়ে মারাত্মক অনুপ্রবেশের ঘটনা হিসেবে দেখা হচ্ছে।

এএফপির প্রতিবেদনে বলা হয়, গত মঙ্গলবার সকালে দুই ডজন সাঁজোয়া নিয়ে প্রায় এক হাজার ইউক্রেনীয় সেনা কুরস্ক অঞ্চলে ঢুকে পড়ে। শুরুতে কোনো মন্তব্য না করলেও পরে অনুপ্রবেশকারী সেনা ও যোদ্ধাদের হটিয়ে দেওয়ার দাবি করে রাশিয়ার প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়।

যুক্তরাষ্ট্রভিত্তিক আইএসডব্লিউ সর্বশেষ পরিস্থিতির তথ্য দিয়ে জানায়, রুশ ভূখণ্ডের এ অভিযানে কুরস্ক প্রশাসনিক এলাকার প্রায় ১০ কিলোমিটার ভেতরে অগ্রসর হওয়ার বিষয়টি নিশ্চিত করেছে ইউক্রেনীয় বাহিনী।

সংস্থাটি আরও বলছে, কুরস্ক প্রশাসনিক এলাকায় অগ্রসর হওয়া ইউক্রেনীয় বাহিনীর এ মুহূর্তে নিশ্চিত হওয়া অবস্থান থেকে বোঝা যায়, রাশিয়ার অন্তত দুটি প্রতিরক্ষা ব্যূহ এবং একটি শক্ত ঘাঁটি ছাড়িয়ে সামনে অগ্রসর হতে পেরেছে তারা।

সুদঝা শহরে রাশিয়ার সামরিক সরঞ্জাম রাখার কেন্দ্র। ওই শহরকে ঘিরে অগ্রসর হন ইউক্রেনীয় সেনা ও যোদ্ধারা। পাঁচ হাজার বাসিন্দার এই শহর ইউক্রেন সীমান্ত থেকে আট কিলোমিটার ভেতরে অবস্থিত।

তবে এ বিষয়ে মস্কোর কাছ থেকে তেমন তথ্য পাওয়া যাচ্ছে না। রুশ বাহিনীর সঙ্গে যোগাযোগ থাকা দেশটির সামরিক ব্লগাররা বলছেন, কিয়েভ বাহিনী উল্লেখযোগ্য অগ্রগতি পেয়েছে। এ পরিস্থিতির জন্য সরকারের সমালোচনাও করছেন তাঁরা।