কিছু কিছু প্রাণী যৌন সম্পর্ক ছাড়াও প্রজননে সক্ষম। গবেষকদের নতুন একটি তথ্য এমনটাই বলছে।
পুরুষ সঙ্গীর সঙ্গে মিলন ও শুক্রাণু ছাড়াই একটি স্ত্রী প্রাণী সন্তান জন্ম দিতে সক্ষম। আর এটি সম্ভব ‘পার্থেনোজেনেসিস’ প্রক্রিয়ার মাধ্যমে।
পার্থেনোজেনেসিস শব্দ তৈরি হয়েছে গ্রিক শব্দ ‘পার্থেনোস’ ও ‘জেনেসিস’–এর সমন্বয়ে। পার্থেনোস কথাটির অর্থ কুমারী আর জেনেসিস অর্থ জন্ম।
যুক্তরাজ্যে এই প্রক্রিয়ায় গত সপ্তাহে ১৪টি বাচ্চা জন্ম দিয়েছে বোয়া প্রজাতির একটি সাপ। প্রায় ৯ বছর এটি কোনো সঙ্গীর সংস্পর্শে আসেনি।
কিছু উদ্ভিদ ও পোকামাকড় এই প্রক্রিয়ায় সন্তান জন্ম দিতে পারে। পাশাপাশি কিছু পাখি, মাছ এবং উভচর ও সরীসৃপেরও এই সক্ষমতা আছে।
যুক্তরাষ্ট্রের উত্তর ক্যারোলাইনা অঙ্গরাজ্যের একটি অ্যাকুয়ারিয়ামে শার্লট নামের একটি স্টিংরে মাছ পার্থেনোজেনেসিস প্রক্রিয়ায় গর্ভধারণ করে। অবশ্য চলতি সপ্তাহে বাচ্চা প্রসবের আগেই এটি মারা যায়। ফলে সেটি আদৌ প্রজননের যোগ্য ছিল কি না, তা নিশ্চিত হওয়া যায়নি।
কিছু ভিমরুল, ক্রাস্টেসিয়ান (চিংড়ি, লবস্টার ও কাঁকড়াজাতীয় প্রাণী) ও গিরগিটি পার্থেনোজেনেসিস প্রক্রিয়ায় বাচ্চা জন্ম দিতে পারে। তবে অন্য প্রজাতির প্রাণীদের মধ্যে এটি বিরল। সক্ষম পশুপাখিদের আটকে রেখেই সাধারণত বিষয়টি পর্যবেক্ষণ করা হয়।
ফ্লোরিডার সারাসোটায় মোট ম্যারিন ল্যাবরেটরি অ্যান্ড অ্যাকুয়ারিয়ামে সার্কস অ্যান্ড রেস কনজারভেশন রিসার্চ প্রোগ্রাম পরিচালনা করেন ডেমিয়ান চ্যাপম্যান। তিনি জানান, স্ত্রী প্রাণী যখন পুরুষ সঙ্গী থেকে আলাদা থাকে বা দুটির মধ্যে মিলন সম্ভব হয় না, তখনই এই পার্থেনোজেনেসিস প্রক্রিয়া অনুসরণ করা হয়।
স্বাভাবিকভাবে একটি পশুর ডিমে ভ্রূণ সৃষ্টির জন্য শুক্রাণুর প্রয়োজন হয়। কিন্তু পার্থেনোজেনেসিস প্রক্রিয়ায় শুক্রাণুর দরকার পড়ে না।
প্রাকৃতিক পরিবেশে কীভাবে বন্য প্রাণীদের মধ্যে এই প্রক্রিয়া প্রয়োগ করা হবে, তা এখনো স্পষ্ট নয় বলে জানান চ্যাপম্যান। তবে ফ্লোরিডা উপকূলের উন্মুক্ত পানিতে একটি করাত মাছের ওপর এটি প্রয়োগ করা হয়েছে।