রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধে ন্যাটোর সৈন্যরা রাশিয়ার সঙ্গে সংঘাতে জড়ালে সেটি ভুল পদক্ষেপ হবে। এমনটা হলে বিশ্ব বিপর্যয়ের মুখে পড়বে বলে সতর্ক করেছেন রাশিয়ান প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন। গত শুক্রবার কাজাখস্তানের আস্তানায় সেন্ট্রাল এশিয়া-রাশিয়া সম্মেলনে তিনি এ সতর্কবার্তা দেন। রাশিয়াভিত্তিক সংবাদমাধ্যম আরটি–এর এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানানো হয়েছে।
রাশিয়ার সঙ্গে যুদ্ধে ইউক্রেন পরাজয়ের দ্বারপ্রান্তে পৌঁছালে সাহায্যের জন্য ন্যাটো মিত্ররা সৈন্য পাঠাতে পারে, এ বিষয়ে জানতে চাইলে পুতিন এ কথা বলেন। তিনি আরও বলেছেন, ‘আমি মনে করি, যাঁরা এ ধরনের কথা বলেন, তাঁদের পর্যাপ্ত জ্ঞান থাকা উচিত কীভাবে এ ধরনের বিপজ্জনক পদক্ষেপ নেওয়া থেকে বিরত রাখা যায়।’ ইউক্রেনে চলমান সংকটের মধ্যে পরাজয় বলতে কী বোঝায়, সে বিষয়টি বোঝাও খুব জরুরি বলে মনে করেন রুশ প্রেসিডেন্ট।
পুতিন বলেন, পরাজয়ের বিষয়টি প্রত্যেকের কাছে আলাদা। বিষয়টি আরেকটু ব্যাখ্যা করে তিনি বলেছেন, ‘২০১৪ সালে রাশিয়ার সঙ্গে যুক্ত হতে ক্রিমিয়ার জনগণ ভোট দেয়। এটা ইউক্রেনের জন্য একধরনের পরাজয়। আমাদের বুঝতে হবে, পরাজয় বলতে কী বোঝায়।’
গত ফেব্রুয়ারিতে ইউক্রেনে বিশেষ সেনা অভিযান পরিচালনার নির্দেশ দেন রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট। এরপর রাশিয়ার ওপর অর্থনৈতিক বিভিন্ন অবরোধ আরোপ করে যুক্তরাষ্ট্রসহ পশ্চিমা দেশগুলো। শুধু অবরোধ আরোপ করেই থামেনি তারা, পশ্চিমা দেশগুলো কয়েক শ কোটি ডলারের আর্থিক ও সামরিক সহায়তা দিয়ে যাচ্ছে ইউক্রেনকে।
ন্যাটো মহাসচিব জেনস স্টলটেনবার্গ বারবার বলছেন, যুক্তরাষ্ট্র নেতৃত্বাধীন জোট ইউক্রেনে সংঘাতে জড়াবে না। তবে চলতি সপ্তাহে তিনি স্বীকার করছেন যে ইউক্রেনে রাশিয়ার বিজয় পশ্চিমা মিত্রদের জন্য পরাজয় হিসেবে বিবেচিত হবে। এ ছাড়া এমন পরিস্থিতি এড়াতে ন্যাটো কিয়েভকে পর্যাপ্ত সহায়তা করতে পারেনি বলেও প্রমাণিত হবে।
এর প্রতিক্রিয়ায় গত বুধবার রাশিয়ার সাবেক প্রেসিডেন্ট দিমিত্রি মেদভেদেভ বলছেন, স্টলটেনবার্গের এমন বক্তব্যে এটা প্রমাণিত হয় যে ন্যাটো এই যুদ্ধে অংশ নেবে।
এ ছাড়া গত সপ্তাহে ব্রাসেলসে ন্যাটোর সদর দপ্তরে এক সম্মেলনে মিলিত হয় ইউক্রেনের মিত্র ন্যাটো মিত্ররা। ওই সম্মেলনে ইউক্রেনকে অস্ত্র সহায়তার প্রতিশ্রুতি দেয় যুক্তরাজ্য, ফ্রান্স, কানাডা ও নেদারল্যান্ডস। এর মধ্যে আছে আধুনিক আকাশ প্রতিরোধব্যবস্থা ও অত্যাধুনিক ড্রোন। ক্রিমিয়ার সঙ্গে যোগাযোগ স্থাপনকারী কার্চ ব্রিজে বিস্ফোরণের পর কিয়েভসহ ইউক্রেনের বিভিন্ন শহরে ক্ষেপণাস্ত্র হামলা চালায় রাশিয়া। এসব হামলা ঠেকাতে পশ্চিমা মিত্রদের কাছে আকাশ প্রতিরোধব্যবস্থা চেয়ে আবেদন করেন ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কি।