রুশ টেলিভিশনে একজন ভাষ্যকার ভ্রু কুঁচকে, মাথার চুল প্রায় ছিঁড়তে ছিঁড়তে বলেছেন, কাশমার, অর্থাৎ মহাসর্বনাশ হয়ে গেছে।
সেদিন শুক্রবার। আমরা চারদিক দিক থেকে শত্রুসেনাদের ঘিরে ফেলি। এই অতর্কিত আক্রমণের কথা তাদের ভাবনাতেও ছিল না। ভীতসন্ত্রস্ত হয়ে তারা দিগ্বিদিক ছুটতে লাগল। কেউ চুরি করা মোটরবাইক নিয়ে, কেউ নিজের সামরিক পোশাক পাল্টে, কেউ-বা স্থানীয়দের ছদ্মবেশে পালাতে লাগল।
সেনা কমান্ডাররা আগেই পালিয়েছিল। চারদিকে ছড়িয়ে-ছিটিয়ে ছিল ফেলা যাওয়া ভারী ট্যাংক, সাঁজোয়া গাড়ি। ‘ওসব নেবে কী, ওরা তো বন্দুক ফেলে জান নিয়ে পালাতে ব্যস্ত,’ এক বৃদ্ধা বললেন।
একাত্তরে মুক্তিবাহিনী ও ভারতীয় বাহিনীর যৌথ আক্রমণের মুখে এভাবেই পালাতে চেষ্টা করেছিল পাকিস্তানি সেনাসদস্যরা। ওপরের বিবরণ অবশ্য পাকিস্তানি সৈন্যদের পলায়নের ইতিহাস নয়। এটি দুই সপ্তাহ আগে ইউক্রেনের উত্তর-পূর্বে খারকিভ অঞ্চল থেকে আক্রমণকারী রুশ সেনাদের পড়িমরি পলায়নের প্রত্যক্ষদর্শীর বিবরণ। একজন ইউক্রেনীয় কমান্ডার বার্তা সংস্থা রয়টার্সকে জানান, এত বিপুলসংখ্যক রুশ সেনা আত্মসমর্পণ করেছে যে তাদের কোথায় রাখা যায়, তা নিয়ে কর্তৃপক্ষকে হিমশিম খেতে হচ্ছে।
রাশিয়া বনাম ইউক্রেনের মধ্যে প্রায় সাত মাস স্থায়ী যুদ্ধ যেন ডেভিড বনাম গোলাইয়াথের দ্বৈরথ। বাইবেলে বর্ণিত চরিত্র ডেভিড যুদ্ধে প্রবল শক্তিধর গোলাইয়াথকে পরাজিত করেছিলেন। ডেভিডের উদ্দেশ্য যত মহৎ ও সৎ হোক না কেন, এই যুদ্ধে তার জেতার কথা নয়। ইতিহাস বলে, বিপুল ব্যবধান সত্ত্বেও শেষ পর্যন্ত ডেভিডেরই জয় হয়েছিল।
সে ইতিহাসের পুনরাবৃত্তি ঘটল দুই সপ্তাহ আগে। ইউক্রেনের ডেভিডদের হাতে বেধড়ক পিটুনি খেয়ে রুশ সেনারা যে যেভাবে পারেন, পালিয়েছেন। গত এপ্রিল থেকে রাশিয়া ইউক্রেনের পূর্ব-উত্তরে যে পরিমাণ জায়গা দখল করেছিল, তা ইউক্রেনীয়রা পুনরুদ্ধার করেছে। ইউক্রেনের দাবি অনুসারে, তাদের পুনরুদ্ধারকৃত মোট জমির পরিমাণ ১ হাজার ২০০ বর্গমাইল।
এই সম্মুখসমরে রাশিয়া কী পরিমাণ অস্ত্র ও সাঁজোয়া বহর ছেড়ে পালিয়ে এসেছে, তার একটি তালিকা দিয়েছে নেদারল্যান্ডসভিত্তিক সামরিক ও গোয়েন্দা ওয়েবসাইট অনিক্স।
মস্কো থেকে সরকারিভাবে স্বীকার করা না হলেও খারকিভে যে বড় ধরনের বিপর্যয় ঘটেছে, তা আর গোপন নেই। রুশ টেলিভিশনে একজন ভাষ্যকার ভ্রু কুঁচকে, মাথার চুল প্রায় ছিঁড়তে ছিঁড়তে বলেছেন, ‘কাশমার’, অর্থাৎ মহাসর্বনাশ হয়ে গেছে।
মোদ্দা কথা, এই আকস্মিক হামলা রুশ বাহিনী একদমই আশা করেনি। দুই মাস ধরে কিয়েভ বলে আসছে, তারা দক্ষিণে রুশ অধিকৃত খেরসন পুনরুদ্ধারের জন্য ব্যাপক প্রস্তুতি নিচ্ছে। ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কি প্রায় প্রতি রাতেই তাঁর দৈনিক ভিডিও ভাষণে আশ্বাস দিয়ে গেছেন, আসছে, পাল্টাহামলা আসছে। রুশ বাহিনীও সে কথায় বিশ্বাস করে খারকিভ অঞ্চল থেকে মনোযোগ সরিয়ে নেয়। দক্ষিণে ও দক্ষিণ-পূর্বে খেরসন ও জাপোরিঝঝিয়া ধরে রাখাই তাদের প্রধান লক্ষ্য হয়ে দাঁড়ায়। কিন্তু তাদের একদম বোকা বানিয়ে ইউক্রেনীয়রা হঠাৎ আক্রমণ করে বসে উত্তর-পূর্বের খারকিভে।
ফরাসি টেলিভিশন চ্যানেল ২৪ মন্তব্য করেছে, এটা দাবা খেলার মতো, সে খেলায় এবার রাশিয়া হেরে গেছে।
ইউক্রেনীয়দের এই সাফল্যের পেছনে একটা বড় অবদান পশ্চিমাদের পাঠানো আধুনিক অস্ত্র ও গোয়েন্দা পরামর্শ। রাশিয়া অভিযোগ করেছে, এই যুদ্ধে বেশ উল্লেখযোগ্য সংখ্যক পশ্চিমা ‘বিশেষজ্ঞ’ সরাসরি অংশ নিচ্ছে। কথাটা মিথ্যা নয়, তবে ইউক্রেনীয়রাও যে নিজ দেশ রক্ষায় অভাবনীয় সাহস ও মনোবল দেখিয়েছে, সেটাও ফেলনা নয়।
মার্কিন জেনারেল বেন হজেস বলেছেন, যুদ্ধ এখন যে পর্যায়ে রয়েছে, তাকে বলা যায় ‘কালমিনেশন পয়েন্ট’, সোজা বাংলায় প্রান্তসীমা। ইউক্রেনীয়রা যে পরিকল্পিত হামলা চালায়, তার লক্ষ্য রুশদের রসদ সরবরাহ বিঘ্নিত করা, সামরিক সেনাছাউনি ধ্বংস করা, কামানবহর নিশ্চিহ্ন করে তাদের দুর্বল করে ফেলা। সে লক্ষ্য আপাতত অর্জিত হয়েছে।
অবশ্য ইউক্রেনীয়রা এই চাপ ধরে রাখতে পারবে কি না, সেই প্রশ্নও তুলেছেন জেনারেল হজেস।
এর উত্তর নির্ভর করে বিপর্যয় কাটিয়ে উঠতে কী ব্যবস্থা নেয় রাশিয়া। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, এই বিপর্যয়ের প্রধান কারণ, কৌশলগত পরিকল্পনা প্রণয়নে ভুল করেছে রাশিয়া। যে জনবল নিয়ে তারা ইউক্রেনের মতো বিশাল একটি দেশ আক্রমণ করে বসে, তা পর্যাপ্ত নয়। সহজ বিজয়ের লক্ষ্যে তারা বিপুল পরিমাণ বারুদ ও গোলা নষ্ট করে। এখন তাদের অস্ত্রশালায় টান পড়েছে। পশ্চিমা নিষেধাজ্ঞার কারণে নতুন অস্ত্র উৎপাদনেও সংকট দেখা দিয়েছে। ভাবা হয়েছিল চীন হয়তো সাহায্য করবে, কিন্তু কথার খই ছাড়া চীনারা আর কিছুই করেনি। সাহায্যের জন্য রাশিয়াকে বাধ্য হয়ে হাত পাততে হচ্ছে ইরান ও উত্তর কোরিয়ার কাছে। তবে সে অস্ত্র কতটা কার্যকর, তাতে সন্দেহ রয়েছে।
দ্বিতীয় সমস্যা, দুর্বল মনোবল। এই যুদ্ধ এত দীর্ঘস্থায়ী বা এমন জটিল হয়ে পড়বে, রুশ সেনাদের তার জন্য প্রস্তুত করা হয়নি। যুক্তরাষ্ট্রের ভার্জিনিয়ার সেন্টার ফর নেভাল অ্যানালাইসিসের মাইকেল কফম্যান ওয়াশিংটন পোস্টকে বলেছেন, এই যুদ্ধে রুশ সেনারা দীর্ঘ সময় যুদ্ধের ময়দানে কাটানোর পর ক্লান্ত হয়ে পড়েছেন, সেনা কমান্ডারদের পক্ষে তাঁদের ধরে রাখা কঠিন হয়ে পড়ছে। ফলে লড়াই করার কার্যকর ক্ষমতা তাঁদের কমে আসছে।
তিন সপ্তাহ আগে ভ্লাদিভস্তক শহরে এক অর্থনৈতিক ফোরামে রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন দাবি করেন, ‘ইউক্রেনে আমাদের লক্ষ্য অপরিবর্তিত রয়েছে।’ তিনি বলেন, ‘সেখানে আমরা কিছু হারাইনি, কিছু হারাবও না।’ তাঁর কথা বাসি হওয়ার আগেই খারকিভে এমন কাশমার।
কথার মারপ্যাঁচে খারকিভের বিপর্যয়ের ব্যাখ্যা যেভাবেই করা হোক না কেন, বিষয়টি পুতিনের জন্য রাজনৈতিক সমস্যা সৃষ্টি করেছে। অভাবিত হলেও সত্য, রাশিয়ার বিভিন্ন শহরের ৪০ জন স্থানীয় নির্বাচিত প্রতিনিধি এক যৌথ আবেদনপত্রে তাঁর পদত্যাগ দাবি করেছেন। এই আবেদনের কোনো কার্যকর মূল্য নেই, তবে প্রবল চাপ থাকা সত্ত্বেও সে দেশে যে এমন দাবি উঠেছে, তাতেই বোঝা যায় ভেতরে-ভেতরে ভাঙন শুরু হয়েছে।
ভাবা হয়েছিল রাজধানী কিয়েভ দখল করতে রুশদের ৪৮ ঘণ্টা, বড়জোর ৭২ ঘণ্টা লাগবে। পুতিনের কথায় ইউক্রেনীয়রা ‘লিটল রাশানস’ মুক্ত করতে আসা রুশ সৈন্যদের তারা ফুলের মালা দিয়ে বরণ করে নেবে। যখন লক্ষ্য অর্জিত হলো না, তখন পুনর্বিন্যাসের নামে লাখখানেক সেনার বাহিনীকে মুখ ঘুরিয়ে পাঠানো হলো পূর্ব ও দক্ষিণে। যুক্তি দেখানো হলো, তাদের কৌশলগত লক্ষ্য দোনেৎস্ক ও লুহানস্ক, সে লক্ষ্য অর্জনে সেনাবাহিনী পুনর্বিন্যাস করা হবে।
এবারও প্রায় একই রকম যুক্তি। ক্রেমলিনের মুখপাত্র দিমিত্রি পেশকভ বলেছেন, রুশ সেনাদের শুধু পুনর্বিন্যাসের জন্য খারকিভ থেকে সরিয়ে আনা হয়েছে। তিনি অবশ্য কিছুটা গাঁইগুঁই করে হলেও স্বীকার করেছেন, যুদ্ধের ময়দানে অবস্থা কিছুটা বদলেছে। তিনি সাংবাদিকদের বলেছেন, ‘প্রেসিডেন্ট পুতিন সমরমন্ত্রী ও সামরিক কমান্ডারদের সঙ্গে ২৪ ঘণ্টা যোগাযোগ রেখে চলেছেন। আমাদের বিশেষ সামরিক অভিযান চলছে, লক্ষ্য অর্জিত না হওয়া পর্যন্ত চলতে থাকবে।’
এর আগে পেশকভই ইউক্রেনের বিরুদ্ধে বিপুল সামরিক বিজয়ের সুখবর দিয়েছিলেন। সরকারিভাবে এমন কথাও বলা হয়েছিল, রুশ আক্রমণের ফলে ইউক্রেনে যুক্তরাষ্ট্রের পাঠানো ৪০টি হিমার্স রকেট লাঞ্চার (দূরপাল্লার ক্ষেপণাস্ত্রব্যবস্থা) ধ্বংস করা হয়েছে। যদিও ইউক্রেনের কাছে পাঠানো মোট হিমার্সের সংখ্যা ১৬।
রাশিয়ায় কোনো স্বাধীন তথ্যব্যবস্থা নেই, ভিন্ন মতপ্রকাশের কোনো সুযোগ নেই। তা সত্ত্বেও এখন টিভির পর্দায় ও সামাজিক মাধ্যমে ভিন্ন কথা শোনা যাচ্ছে। যাঁরা মুখ খুলেছেন, তাঁদের অন্যতম হলেন ইগর গিরকিন, যিনি একসময় দোনেৎস্কে পুতিনের প্রিয় কমান্ডার ছিলেন। টেলিগ্রাম নামক অনলাইন প্ল্যাটফর্মে নিজের প্রায় সাড়ে চার লাখ অনুসারীর উদ্দেশে এক ভিডিও বার্তায় তিনি বলেছেন, ‘হারব কি, আমরা ইউক্রেনে ইতিমধ্যে হেরে বসে আছি।’
একই চ্যানেলে আরেক জনপ্রিয় ব্লগার স্তারশে এদি লিখেছেন, ‘ইউক্রেনীয়রা আমাদের রীতিমতো গো-হারা হারিয়েছে।’ এমনকি পুতিন-ঘনিষ্ঠ চেচনিয়ার রমজান কাদিরভ পর্যন্ত অভিযোগ করেছেন, রুশ কমান্ডারদের ভুলের কারণে তাঁদের কোণঠাসা অবস্থায় পড়তে হয়েছে। তিনি বলেছেন, ‘যদি অবস্থা না বদলায়, তাহলে আমাকে দেশের নেতাদের সঙ্গে (অর্থাৎ পুতিনের সঙ্গে) কথা বলতে হবে।’
যেকোনো যুদ্ধে জিততে হলে প্রয়োজন তিনটি বিষয়: লোকবল, অস্ত্রবল ও মনোবল। ইউক্রেনে ক্রেমলিনকে এই তিন সমস্যাই মোকাবিলা করতে হচ্ছে। পশ্চিমা হিসাবমতে, ইতিমধ্যে কম করে হলেও তাদের ৮০ হাজার সেনা হতাহত হয়েছে। মারাই গেছে এমন সেনা ও কর্মকর্তার সংখ্যা ১৫ হাজার। ভাড়াটে সেনা দিয়ে যুদ্ধ জয় করা যাবে ভাবা হয়েছিল, কিন্তু চেচেন নেতা কাদিরভের অধীন সেনাদের অধিকাংশই যুদ্ধে অনাগ্রহী।
মাত্র কয়েক বছর আগে রুশ সেনাদের আক্রমণের ফলে প্রায় ধুলার সঙ্গে মিশে গিয়েছিল চেচনিয়ার রাজধানী গ্রোজনি। সেই রক্তের দাগ অনেকের মনে এখনো শুকায়নি। যেসব চেচেন দেশ থেকে পালিয়ে গিয়েছিল, তাদের অনেকে ইউক্রেনের পক্ষে যোগ দিয়েছে।
সামরিক বিশেষজ্ঞরা বলছেন, ইউক্রেন যুদ্ধের ফলে পরাক্রমশালী সামরিক শক্তি হিসেবে রাশিয়ার ভাবমূর্তি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। এ জন্য দায়ী পুতিন নিজে। ইনস্টিটিউট অব ওয়ার স্টাডিসের জর্জ ব্যারোস মনে করেন, এই যুদ্ধে রাশিয়ার কৌশলগত পরাজয় হয়েছে। যে লক্ষ্য নিয়ে তারা ইউক্রেনে গিয়েছিল, তার কোনোটাই অর্জিত হয়নি। পুতিন নিজেই রুশ বাহিনীর ধ্বংস ডেকে এনেছেন, ধস ঠেকাতে রাশিয়াকে সবকিছু নতুন করে গড়ে তুলতে হবে।
চলতি সংকট কাটাতে জাতীয় পর্যায়ে বাধ্যতামূলক যুদ্ধে অংশগ্রহণের লক্ষ্যে সৈন্য সংগ্রহ অভিযান বা টোটাল মোবিলাইজেশন শুরুর জন্য তাঁর ওপর চাপ থাকলেও পুতিন এখন পর্যন্ত ও পথে পা বাড়াননি। তিনি আপাতত অতিরিক্ত সোয়া লাখের মতো সেনা সংগ্রহের নির্দেশ দিয়েছেন।
‘টোটাল মোবিলাইজেশনে’ তাঁর আপত্তির মূল কারণ, ইউক্রেনে তাঁর বাহিনী পরাজয়ের সম্মুখীন—এ কথা জানাতে তিনি রাজি নন। আরেকটি কারণ হতে পারে, পূর্ণ সেনা সংগ্রহ শুরু হলে শহুরে রুশ নাগরিকদের ১৮ বছরের বেশি বয়সী ছেলেমেয়েদের সেনাবাহিনীতে যোগদানের নির্দেশ আসবে। এতে নির্ঘাত অভ্যন্তরীণ অসন্তোষ বাড়বে। শহুরে ভদ্র রুশরা তখন বলবেন, ‘এই যুদ্ধে চেচেনরা মরছে মরুক, আমার ছেলেমেয়ে যুদ্ধে যাবে, তা অসম্ভব।’
এ মুহূর্তে পুতিনের জন্য এক নম্বর চ্যালেঞ্জ যুদ্ধের যে বয়ান তথ্যমাধ্যমে প্রাধান্য পাচ্ছে, তা ঠেকানো। নিজ দেশের নাগরিকদের বুঝতে দেওয়া যাবে না, রুশ বাহিনী বিপদের মুখে রয়েছে। এ জন্য তাৎক্ষণিক পাল্টা ব্যবস্থা হিসেবে তিনি খারকিভ ও আশপাশে প্রতিশোধমূলক রকেট হামলা শুরু করেছেন। এই পোড়ামাটি রণনীতির লক্ষ্য এই অঞ্চলের অবকাঠামো ধ্বংস।
রুশদের বেপরোয়া আক্রমণের ফলে এখানে বিদ্যুৎ ও পানি সরবরাহে বিঘ্ন হচ্ছে। হতাহত হচ্ছে বেসামরিক মানুষ। পশ্চিমা সামরিক বিশেষজ্ঞরা ভয় পাচ্ছেন, বেপরোয়া হয়ে পুতিন হয়তো অপেক্ষাকৃত সীমিত শক্তির ‘ট্যাকটিক্যাল’ পারমাণবিক অস্ত্র ব্যবহার করতে পারেন। সেটাই হবে প্রকৃত কাশমার।
যেদিন খারকিভ থেকে রুশ বাহিনী তড়িঘড়ি করে পিঠটান দেয়, সেদিন পুতিন মস্কোতে এক বিশাল নাগরদোলার উদ্বোধন করেন। দর্শকদের উদ্দেশে তিনি বলেন, ৪৬০ ফুট দীর্ঘ এই নাগরদোলা ইউরোপে সবচেয়ে বড়, সবচেয়ে দীর্ঘ।
যদিও এক দিন যেতে না যেতেই সে নাগরদোলা ভেঙে পড়ে। কারণ হিসেবে বলা হয়, কারিগরি জটিলতা। যাঁরা নগদ অর্থে সে নাগরদোলায় চড়তে টিকিট কিনেছিলেন, তাঁদের সবার অর্থ ফিরিয়ে দেওয়া হবে বলে জানানো হয়েছে।
মস্কোর নাগরদোলা হয়তো ঠিক হবে, কিন্তু ইউক্রেনে রাশিয়ার সামরিক ভাগ্য খুব সহজে পরিবর্তিত হবে বলে মনে হয় না।
১৫ সেপ্টেম্বর ২০২২, নিউইয়র্ক