সমঝোতা, বেলারুশে যাচ্ছেন ভাগনারপ্রধান প্রিগোশিন

ভাগনার গ্রুপের প্রধান ইয়েভগেনি প্রিগোশিন
ফাইল ছবি: রয়টার্স

ভাড়াটে যোদ্ধা সরবরাহকারী প্রতিষ্ঠান ভাগনার গ্রুপের প্রধান ইয়েভগেনি প্রিগোশিন বেলারুশে যাচ্ছেন। রাশিয়ার রাষ্ট্রীয় গণমাধ্যমের খবরে বলা হয়েছে, বিদ্রোহের কারণে তাঁর বিরুদ্ধে যেসব অভিযোগ আনা হয়েছে সেগুলো তুলে নেওয়া হবে।

যুক্তরাজ্যের গণমাধ্যম বিবিসির খবরে বলা হয়েছে, রক্তপাত এড়াতে এসব অভিযোগ তুলে নেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে রাশিয়ার সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ।

এদিকে যুক্তরাষ্ট্রের গণমাধ্যম সিএনএনের খবরে বলা হয়েছে, ক্রেমলিনের মুখপাত্র দিমিত্রি পেসকভ জানিয়েছেন, বেলারুশের প্রেসিডেন্ট আলেকসান্দার লুকাশেঙ্কো প্রিগোশিনের সঙ্গে একটি চুক্তিতে পৌঁছাতে সক্ষম হয়েছেন। এই চুক্তি অনুসারে, বিদ্রোহের কারণে প্রিগোশিনের বিরুদ্ধে যেসব ফৌজদারি অভিযোগ আনা হয়েছিল সেগুলো তুলে নেওয়া হবে।

পেসকভ বলেন, রাশিয়ার প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়ের সঙ্গে ভাগনারের যোদ্ধাদের চুক্তি হবে। এর ফলে গতকাল শনিবারের বিদ্রোহের কারণে তাঁদের কোনো সাজা হবে না। ভাগনার যোদ্ধাদের সাহসিকতাপূর্ণ কাজের জন্য তাঁদের প্রতি ক্রেমলিনের সব সময়ই শ্রদ্ধা রয়েছে।

এদিকে ক্রেমলিনের পক্ষ থেকে এমন ঘোষণা আসার পর প্রিগোশিন ও তাঁর যোদ্ধাদের রোস্তভ-অন-দন শহরের সামরিক সদর দপ্তর ত্যাগ করতে দেখা গেছে।

ইউক্রেন যুদ্ধে রাশিয়ার হয়ে অংশ নিয়েছে ভাগনার। পূর্ব ইউক্রেনের বাখমুতে লড়াইয়ে বড় ভূমিকা রেখেছে এই বাহিনী। তবে বেশ কিছুদিন ধরেই অস্ত্র সরবরাহে ঘাটতির অভিযোগ তুলে রাশিয়ার সামরিক নেতাদের নিয়ে ক্ষোভ প্রকাশ করে আসছিলেন ভাগনারপ্রধান প্রিগোশিন। এ নিয়ে রুশ প্রতিরক্ষামন্ত্রী সের্গেই শোইগু ও সামরিক প্রধান ভ্যালেরি গেরাসিমভের সঙ্গে প্রকাশ্য বিরোধে জড়িয়ে পড়েন তিনি।

এরই মধ্যে গত শুক্রবার প্রিগোশিন অভিযোগ করেন, সেদিন ইউক্রেনের ভাগনার যোদ্ধাদের ওপর রকেট হামলা চালানোর নির্দেশ দিয়েছিলেন প্রতিরক্ষামন্ত্রী শোইগু। এতে ভাগনারের অনেক যোদ্ধা নিহত হয়েছেন। একে ‘প্রতারণা’ আখ্যায়িত করে তিনি রুশ সামরিক নেতাদের উৎখাতের হুমকি দিয়েছিলেন।

এরপর প্রিগোশিন বিদ্রোহ ঘোষণা করে গতকাল শনিবার তাঁর বাহিনী নিয়ে ইউক্রেন সীমান্ত থেকে রাশিয়ার রাজধানী মস্কো অভিমুখে যাত্রা শুরু করেন। রাশিয়ার কয়েকটি শহর ও সামরিক স্থাপনার দখলও নেন। পরে বেলারুশের মধ্যস্থতায় সেই অভিযান বন্ধে রাজি হন তিনি।

বেলারুশের প্রেসিডেন্ট আলেকসান্দার লুকাশেঙ্কো রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনের ঘনিষ্ঠ মিত্র। বেলারুশ সরকারের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, গতকাল প্রিগোশিনের সঙ্গে আলোচনা করেছেন লুকাশেঙ্কো। পুতিনের সম্মতিতেই এ আলোচনা হয়েছে। লুকাশেঙ্কা পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নেওয়ার আশ্বাস দিয়েছেন। বিনিময়ে ভাগনারের যোদ্ধাদের নিরাপত্তার নিশ্চয়তা দেওয়ার বিষয়ে মতৈক্য হয়েছে।