ইউরোপের ২৯ দেশে ১০ লাখ আশ্রয়প্রার্থীর আবেদন

নৌকায় করে অবৈধভাবে ভূমধ্যসাগর পাড়ি দিয়ে ইউরোপে ঢোকার চেষ্টা অভিবাসীদের
ফাইল ছবি: এএফপি

করোনার বিধিনিষেধ তুলে নেওয়ার পর গত বছর ইউরোপীয় ইউনিয়নভুক্ত (ইইউ) দেশগুলোতে আশ্রয়ের আবেদন ব্যাপকহারে বেড়েছে। ২০২১ সালের তুলনায় গত বছর আবেদনের হার প্রায় ৫০ শতাংশ বেড়েছে। ২০১৬ সালে শরণার্থীদের ঢলের পর এবারই সবচেয়ে বেশি আশ্রয়ের আবেদন পড়েছে।

২০২২ সালে সিরীয় ও আফগান নাগরিকেরা সবচেয়ে বেশি আশ্রয়ের আবেদন করেছেন। এই দুই দেশই রাজনৈতিকভাবে অস্থিতিশীল এবং নিরাপত্তা পরিস্থিতি খুবই খারাপ। এই দুই দেশ থেকে এক-চতুর্থাংশ আবেদন জমা পড়েছে।

ইইউর শরণার্থীবিষয়ক সংস্থার (ইইউএএ) প্রাথমিক তথ্যে দেখা গেছে, ২০২২ সালে ইইউর ২৭টি সদস্যরাষ্ট্রসহ সুইজারল্যান্ড ও নরওয়েতে প্রায় ১০ লাখ আশ্রয়প্রার্থী আবেদন করেছেন।

সিরিয়া ও আফগানিস্তানের পর তুরস্ক, ভেনেজুয়েলা, কলম্বিয়া, পাকিস্তান, বাংলাদেশ ও জর্জিয়া থেকে সবচেয়ে বেশি আবেদন জমা পড়েছে।

রাশিয়ার হামলার পর ইউক্রেনের বিপুলসংখ্যক শরণার্থী ইউরোপের বিভিন্ন দেশে আশ্রয় নেন। তবে তাঁরা এই হিসাবের মধ্যে নেই। কারণ, তাঁরা আলাদা ইইউর সাময়িক সুরক্ষা নীতির আওতায় আশ্রয় পেয়েছেন। তাঁরা নিবন্ধিত হওয়ার পর স্বয়ংক্রিয়ভাবে সুরক্ষা পাচ্ছেন।

ইইউ পরিসংখ্যান সংস্থা ইউরোস্ট্যাটের তথ্যমতে, ৪০ লাখ ইউক্রেনীয় ইইউর সদস্যভুক্ত দেশগুলোতে সুরক্ষা মর্যাদা পেয়েছেন। তাঁদের মধ্যে মাত্র ২ শতাংশ আশ্রয়ের আবেদন করেছেন।

এ পর্যন্ত ২৮ হাজারের বেশি ইউক্রেনীয় আশ্রয়ের আবেদন করেছেন। তাঁদের বেশির ভাগই ইতিমধ্যে নিবন্ধিত হয়েছেন।

করোনার উচ্চ সংক্রমণকালে ইইউভুক্ত দেশসহ বিশ্বের বেশির ভাগ দেশে ভ্রমণে নানা বিধিনিষেধ ছিল। ওই সময় অভিবাসীসহ আশ্রয়প্রার্থীদের সংখ্যা ছিল খুবই কম। ২০২২ সালে গণটিকা কর্মসূচির পর অধিকাংশ ইউরোপীয় দেশ কোভিডের বিধিনিষেধ তুলে নেয়।

ইইউ জানায়, ২০২২ সালে মোট ৯ লাখ ৬৬ হাজার মানুষ সুইজারল্যান্ড, নরওয়ে এবং ইইউর ২৭ সদস্যরাষ্ট্রে আশ্রয়ের আবেদন করেছেন। এর আগে ২০১৬ সালে সর্বোচ্চ ১২ লাখ ৫১ হাজার ৮১৫ মানুষ আশ্রয়ের আবেদন করেছিলেন।  

ওই সময় অভিভাবক ছাড়াই এসেছিল প্রায় ৪৩ হাজার শিশু। তখন যুদ্ধবিধ্বস্ত সিরিয়া থেকে সবচেয়ে বেশি আশ্রয়প্রার্থী ইউরোপীয় দেশগুলোতে এসেছিলেন।

গত বছর সিরিয়া থেকে ১ লাখ ৩১ হাজার ৬৯৭ মানুষ এবং আফগানিস্তানের ১ লাখ ২৮ হাজার ৯৪৯ মানুষ আশ্রয়ের আবেদন করেছেন।

এ ছাড়া তুরস্ক থেকে প্রায় ৫৫ হাজার ৪৩৭, ভেনেজুয়েলা থেকে ৫১ হাজার এবং কলম্বিয়া থেকে ৪৩ হাজার আবেদন জমা পড়েছে।

বাংলাদেশ, জর্জিয়া, ইউক্রেন, ভারত, মরক্কো, তিউনিসিয়া, নাইজেরিয়া ও সোমালিয়া থেকে আবেদন এসেছে। অবশ্য এসব দেশের আবেদনের সংখ্যা খুব বেশি নয়।