মস্কো অত্যাধুনিক আন্তমহাদেশীয় ব্যালিস্টিক ক্ষেপণাস্ত্র মোতায়েন করেছে। রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন বলেছেন, রাশিয়ার শত্রুরা এখন তাঁদের হুমকি দেওয়ার আগে ‘দুইবার চিন্তা’ করবে।
রাশিয়ার মহাকাশ সংস্থা রসকসমসের প্রধান ইয়ুরি বোরিসভ বলেন, সারমত ক্ষেপণাস্ত্রগুলোকে ‘যুদ্ধকালীন দায়িত্বে মোতায়েন’ করা হয়েছে।
রসকসমসের প্রধানকে উদ্ধৃত করে রুশ বার্তা সংস্থার খবরে বলা হয়েছে, ‘সারমত ক্ষেপণাস্ত্র ব্যবস্থাকে যুদ্ধের জন্য সতর্কাবস্থায় রাখা হয়েছে।’
তাসের খবরে বলা হয়, বিশেষজ্ঞদের ধারণা, আরএস-২৮ সারমত ক্ষেপণাস্ত্র ১০ টন ওজনের এমআইআরভি ওয়ারহেড দিয়ে বিশ্বের উত্তর বা দক্ষিণ মেরু—যেকোনো স্থানে আঘাত হানতে সক্ষম।
হোয়াইট হাউসের জাতীয় নিরাপত্তা কাউন্সিলের মুখপাত্র জন কিরবি গতকাল শুক্রবার বলেছেন, সারমতকে রাশিয়া যুদ্ধের জন্য প্রস্তুত রেখেছে, এমন তথ্য নিয়ে কথা বলার মতো অবস্থানে তিনি নেই।
রুশ প্রেসিডেন্ট পুতিন গত ফেব্রুয়ারিতে বলেছিলেন, সারমত ক্ষেপণাস্ত্র মোতায়েনের জন্য শিগগিরই প্রস্তুত করা হচ্ছে।
ইউক্রেনে আগ্রাসনের দুই মাস পর ২০২২ সালে পুতিন বলেছিলেন, সারমত ‘বহির্বিশ্বের হুমকি থেকে রাশিয়ার নিরাপত্তা নিশ্চিত করবে। যারা উত্তপ্ত বাগাড়ম্বরপূর্ণ কথা বলে আমাদের দেশকে হুমকি দেয়, তারাও এখন কথা বলতে “দুইবার চিন্তা” করবে।’
রুশ কর্মকর্তারা বলছেন, সারমত হচ্ছে ভূগর্ভে সংরক্ষিত এমন একটি ক্ষেপণাস্ত্র, যা একসঙ্গে ১৫টি পরমাণু ওয়ারহেড বহনে সক্ষম। অবশ্য যুক্তরাষ্ট্রের সামরিক বিশেষজ্ঞরা বলছেন, সারমত একসঙ্গে সর্বোচ্চ ১০টি ওয়ারহেড বহন করতে পারবে।
ন্যাটো সামরিক মিত্রদের কাছে ‘সাতান’ সাংকেতিক নামে পরিচিত এই ক্ষেপণাস্ত্রকে খুব স্বল্প সময়ের মধ্যে হামলার জন্য প্রস্তুত করা যায়। ফলে প্রতিপক্ষের নজরদারি ব্যবস্থা এই ক্ষেপণাস্ত্রকে শনাক্ত করে ভূপাতিত করতে খুব কম সময় পায়।
সারমতের ওজন ২০০ টনের বেশি। এই ক্ষেপণাস্ত্র ১৮ হাজার কিলোমিটার (১১ হাজার মাইল) পর্যন্ত লক্ষ্যবস্তুতে হামলা চালাতে সক্ষম। ১৯৮০-এর দশকের আন্তমহাদেশীয় ব্যালিস্টিক ক্ষেপণাস্ত্র (আইসিডএমবি) ব্যবস্থার বদলে এই সারমত ক্ষেপণাস্ত্র বানানো হয়।
রাশিয়া ২০২২ সালের এপ্রিলে মস্কো থেকে ৮০০ কিলোমিটার (প্রায় ৫০০ মাইল) দূরে প্লেসেটস্ক এলাকায় প্রথম সারমতের পরীক্ষা চালায়। সেই ক্ষেপণাস্ত্র রাশিয়ার পূর্বাঞ্চলীয় কামচাটকা উপদ্বীপের নির্দিষ্ট লক্ষ্যে আঘাত হেনেছিল।