প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন ইউক্রেনের চার অঞ্চলকে রুশ ফেডারেশনে যুক্ত করার চুক্তিতে স্বাক্ষরের এক দিন পর দোনেৎস্কের গুরুত্বপূর্ণ শহর লিমানের নিয়ন্ত্রণ হারিয়েছে রাশিয়া। আজ শনিবারই শহরটির নিয়ন্ত্রণ নিয়েছে ইউক্রেনের বাহিনী।
শুক্রবার রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন ইউক্রেনের খেরসন, জাপোরিঝঝিয়া, দোনেৎস্ক ও লুহানস্ক অঞ্চলের প্রায় ৯০ হাজার বর্গকিলোমিটার এলাকা রুশ ফেডারেশনে যুক্ত করতে চুক্তিতে স্বাক্ষর করেন। এ সময় তিনি বলেছিলেন, ‘খেরসন, জাপোরিঝঝিয়া, দোনেৎস্ক ও লুহানস্কের বাসিন্দারা আজীবনের জন্য আমাদের দেশের নাগরিক হয়ে গেল। আমরা যেকোনো মূল্যে আমাদের দেশ রক্ষা করব।’
তবে পুতিনের ঘোষণার দিন ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কি বলেছিলেন, রাশিয়ার দখলে থাকা ভূখণ্ড পুনরুদ্ধারে তাঁরা যুদ্ধ চালিয়ে যাবেন। লিমান শহর পুনরুদ্ধারের মাধ্যমে তাঁরা সেই ইঙ্গিত দিলেন।
রাশিয়ার প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়ও লিমান শহর থেকে সরে যাওয়ার বিষয়টি নিশ্চিত করে জানিয়েছে, শহরটি ইউক্রেনের সেনারা ঘিরে ফেলেছেন। তাই ঝুঁকি থাকায় সেনাদের সরিয়ে নেওয়া হয়েছে।
এর আগে ইউক্রেনের প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয় এক টুইট বার্তায় জানায়, তাদের বিমানবাহিনী লিমানে ঢুকেছে। এ ছাড়া টুইটের সঙ্গে একটি ভিডিও জুড়ে দেওয়া হয়। এতে দেখা যায়, ইউক্রেনের সেনারা তাঁদের জাতীয় পতাকা নিয়ে লিমান শহরের নামসংবলিত একটি ফলকের পাশে দাঁড়িয়ে আছেন।
ইউক্রেনের প্রেসিডেন্টের চিফ অব স্টাফের পক্ষ থেকেও একটি ভিডিও প্রকাশ করা হয়েছে। এতে এক ইউক্রেনীয় সেনাকে বলতে শোনা যায়, ‘আজ ১ অক্টোবর আমরা নিজেদের ভূমিতে পতাকা তুললাম। লিমান ইউক্রেনেরই থাকবে।’
ইউক্রেনের সামরিক বাহিনীর এক মুখপাত্র বলেন, এই শহর দখলের মধ্য দিয়ে তাঁদের সামরিক বাহিনী লুহানস্ক অঞ্চল পুনরুদ্ধারে এগিয়ে যাবে।
লিমান শহরে রাশিয়ার ৫ থেকে সাড়ে ৫ হাজার সেনা ছিল। শহরটি ঘিরে ফেলার পর ইউক্রেনের পূর্বাঞ্চলীয় বাহিনীর মুখপাত্র সেরি চেরেভাতি টেলিভিশনে এক সাক্ষাৎকারে বলেন, এই পরিমাণ রুশ সেনা আর লিমান শহরে নেই। অনেকে মারা গেছেন, কেউ আহত হয়েছেন, আবার কেউ পালিয়ে গেছেন।
রাশিয়ার সামরিক বাহিনী নিয়ে ব্লগ লেখেন এমন একজন বলেন, লিমান শহরের নিয়ন্ত্রণ হারালে সেটি রাশিয়ার জন্য হবে বড় পরাজয়। কৌশলগত কারণে লিমান শহরের গুরুত্ব অনেক। কারণ, দোনেৎস্ক অঞ্চলে সামরিকসহ বিভিন্ন সরঞ্জাম পাঠানোর ক্ষেত্রে এই শহর ব্যবহার করা হয়। এ ছাড়া লুহানস্ক, দোনেৎস্ক ও খারকিভের রেল যোগাযোগব্যবস্থাও এই শহরকে কেন্দ্র করে গড়ে উঠেছে।