প্রিগোশিনের উড়োজাহাজ বিধ্বস্তের ঘটনায় আন্তর্জাতিক বিধি মেনে এখনই তদন্ত নয়: রাশিয়া

ইয়েভগেনি প্রিগোশিনকে নিয়ে বিধ্বস্ত হওয়া উড়োজাহাজটির একটি ধ্বংসাবশেষের ভিডিও ধারণ করছেন এক ক্যামেরা পারসন, ২৪ আগস্ট
ছবি: রয়টার্স ফাইল ছবি

রাশিয়ার ভাড়াটে সেনা সরবরাহকারী প্রতিষ্ঠান ভাগনারের প্রধান ইয়েভগেনি প্রিগোশিনের উড়োজাহাজ বিধ্বস্তের ঘটনায় ‘এ মুহূর্তে’ আন্তর্জাতিক বিধি মোতাবেক তদন্ত করতে রাজি নয় মস্কো। ব্রাজিলের উড়োজাহাজ দুর্ঘটনাসংক্রান্ত তদন্ত কর্তৃপক্ষকে (সেনিপা) ক্রেমলিন এমনটা জানিয়েছে। বিধ্বস্ত হওয়া এমব্রায়ের উড়োজাহাজটি ব্রাজিলের তৈরি।

২৩ আগস্ট প্রিগোশিনের ব্যক্তিগত উড়োজাহাজ ‘এমব্রেয়ার লিগ্যাসি’ রাশিয়ার রাজধানী মস্কো থেকে সেন্ট পিটার্সবার্গ শহরে যাওয়ার পথে বিধ্বস্ত হয়। উড়োজাহাজে প্রিগোশিন, তাঁর ডান হাত হিসেবে পরিচিত দিমিত্রি উতকিনসহ সাত যাত্রী ছিলেন। আর ক্রু ছিলেন তিনজন। তাঁদের সবাই নিহত হয়েছেন।

প্রিগোশিনের উড়োজাহাজ বিধ্বস্তের ঘটনায় তদন্ত শুরু করবে কি না, তা জানতে চেয়ে রাশিয়াকে ই–মেইল করেছিল সেনিপা। সংস্থাটির প্রধান এয়ার ব্রিগেডিয়ার মারসেলো মোরেনো রয়টার্সকে বলেন, ‘তারা বাধ্য নয়, তাদের কাছে শুধু সুপারিশ করা যাবে। তবে তারা যদি বলে যে তারা তদন্ত শুরু করবে এবং ব্রাজিলকে আমন্ত্রণ জানায়, তাহলে আমরা দূর থেকে অংশ নেব।’

মন্ট্রিয়লভিত্তিক জাতিসংঘের আন্তর্জাতিক উড়োজাহাজ চলাচলবিষয়ক সংস্থার (আইসিএও) বিধি অনুযায়ী, মস্কো থেকে সেন্ট পিটার্সবার্গগামী ফ্লাইটটি ছিল অভ্যন্তরীণ। সুতরাং ওই উড়োজাহাজ বিধ্বস্তের ঘটনা নিয়ে আন্তর্জাতিক বিধির আওতায় তদন্ত করার সুযোগ নেই। আন্তর্জাতিক বিধিগুলো ‘অ্যানেক্স থারটিন’ নামে পরিচিত।

গতকাল মঙ্গলবার রয়টার্সকে পাঠানো এক ই–মেইলে সেনিপা বলেছে, এদিন তারা দুর্ঘটনা তদন্তবিষয়ক কমিশন ইন্টারস্টেট অ্যাভিয়েশন কমিটির কাছ থেকে জবাব পেয়েছে। সেখানে বলা হয়েছে, এ মুহূর্তে অ্যানেক্স থারটিন বিধির আওতায় তদন্ত শুরু করতে রুশ কর্তৃপক্ষ রাজি নয়।

সেনিপার প্রস্তাবে ‘হ্যাঁ’ বলতে রাশিয়া বাধ্য নয়। তবে সাবেক তদন্তকারীদের কয়েকজন মনে করেন, রাশিয়ার ‘হ্যাঁ’ বলা উচিত। কারণ, যুক্তরাষ্ট্রসহ পশ্চিমা বিশ্বের অনেক দেশই ওই উড়োজাহাজ বিধ্বস্তের ঘটনায় রাশিয়াকে সন্দেহ করছে।

ক্রেমলিন অবশ্য এ ঘটনায় সম্পৃক্ত থাকার অভিযোগ অস্বীকার করেছে। যুক্তরাষ্ট্রের বেসামরিক উড়োজাহাজের নিরাপত্তাবিষয়ক পরামর্শক এবং সাবেক তদন্তকারী জন কক্স মনে করেন, এ ঘটনায় ব্রাজিলকে বাদ দিয়ে রাশিয়ায় অভ্যন্তরীণ তদন্ত হলে তা নিয়ে প্রশ্ন থেকে যাবে। রাশিয়ার তদন্তের স্বচ্ছতা নিয়ে প্রশ্ন উঠবে। কারণ, ব্রাজিলেই উড়োজাহাজটি তৈরি হয়েছে।