টেলিভিশনে ভাষণ দিচ্ছেন ভ্লাদিমির পুতিন । ২৩ মার্চ রাশিয়ার রাষ্ট্রীয় বার্তা সংস্থা স্পুতনিকের সরবরাহ করা ছবি প্রকাশ করেছে এএফপি
টেলিভিশনে ভাষণ দিচ্ছেন ভ্লাদিমির পুতিন । ২৩ মার্চ রাশিয়ার রাষ্ট্রীয় বার্তা সংস্থা স্পুতনিকের সরবরাহ করা ছবি প্রকাশ করেছে এএফপি

মস্কোর হামলার ঘটনায় মুখ খুললেন পুতিন

রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন মস্কোতে কনসার্ট হলে হামলার ঘটনাকে ‘বর্বর সন্ত্রাসী হামলা’ বলে আখ্যায়িত করেছেন। একই সঙ্গে তিনি এ ঘটনায় জড়িতদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়ার হুঁশিয়ারি দেন। পাশাপাশি আগামীকাল রোববার রাশিয়ায় জাতীয় শোক ঘোষণা করেছেন পুতিন।

টেলিভিশনে দেওয়া ভাষণে পুতিন বলেন, সীমান্ত অতিক্রম করে ইউক্রেনে ঢুকে যাওয়ার আগে চার বন্দুকধারী গ্রেপ্তার হয়েছে।

এ ঘটনা নিয়ে এই প্রথম কথা বললেন পুতিন। তিনি বলেন, ‘আমি আজ আপনাদের সঙ্গে রক্তাক্ত, বর্বর সন্ত্রাসী হামলা প্রসঙ্গে কথা বলছি, যার শিকার হয়েছে শতাধিক নিরীহ, শান্তিপ্রিয় মানুষ।’

ক্রোকাস সিটি হলের দরজাযর দিকে যাচ্ছে বন্দুকধারীরা

ক্রেমলিন নেতা বলেন, যে চার সন্ত্রাসী মানুষকে গুলি করে হত্যা করেছে, তাদের আটক করা হয়েছে। প্রাথমিক তথ্য অনুসারে তারা ইউক্রেনের দিকে যাচ্ছিল, তাদের সীমান্ত অতিক্রম করিয়ে নেওয়ার প্রস্তুতি রাখা ছিল।

রাশিয়ার এফএসবি নিরাপত্তা সার্ভিসের ভাষ্য, হামলাকারীরা দেশ ছেড়ে পালানোর চেষ্টার আগে ইউক্রেনে নিজেদের লোকজনের সঙ্গে ‘সংযুক্ত’ ছিল।

গতকাল শুক্রবার সন্ধ্যায় মস্কোর উত্তরে ক্রাসনোগোর্স্ক অঞ্চলে ক্রোকাস সিটি হলে শত শত মানুষ কনসার্ট দেখতে জড়ো হয়েছিলেন। গান শুরু হওয়ার কয়েক মিনিট আগে সশস্ত্র ব্যক্তিরা থিয়েটারে ঢুকে পড়ে। তারা নির্বিচার গুলি ছুড়তে শুরু করে। শেষ খবর পাওয়া পর্যন্ত এ ঘটনায় ১৩৩ জনের মরদেহ উদ্ধার হয়েছে।

ক্রোকাস সিটি হল থেকে মরদেহ বের করে আনা হচ্ছে

তদন্তকারীরা বলছেন, ৬ হাজার আসনবিশিষ্ট হলটিতে কনসার্ট উপভোগ করতে ধারণক্ষমতার বেশি লোকজন জড়ো হন। ফলে বন্দুকধারীদের গুলি ছাড়াও আগুন, ছাদ ধসে এবং দম বন্ধ হয়েও অনেকে মারা গেছেন। কারণ, এলোপাতাড়ি গুলির পাশাপাশি সন্ত্রাসীরা দাহ্য তরল পদার্থ দিয়ে হল প্রাঙ্গণে আগুন ধরিয়ে দেয়। আগুন দ্রুত পুরো হলে ছড়িয়ে পড়ে।

হামলার ঘটনায় নিহতের সংখ্যা আরও বাড়তে পারে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে। মস্কো অঞ্চলের গভর্নর গতকাল বলেছেন, কয়েক দিন ধরে উদ্ধার অভিযান চালাতে হবে।

সন্ত্রাসীরা দাহ্য তরল পদার্থ দিয়ে হল প্রাঙ্গণে আগুন ধরিয়ে দেয়। আগুন দ্রুত পুরো হলে ছড়িয়ে পড়ে

এ হামলার দায় আইএস নিলেও হামলাকারীদের উদ্দেশ্য ও পরিচয় জানা যায়নি। উগ্রবাদীরা এর আগে রাশিয়ার বিচ্ছিন্ন অঞ্চলকে সমর্থন করার জন্য হামলা চালিয়েছে। তবে রাশিয়া এ নিয়ে কোনো মন্তব্য করেনি।

আগামীকাল রাশিয়ায় জাতীয় শোক ঘোষণা করে পুতিন বলেন, ‘সন্ত্রাসী, খুনি, অমানুষেরা প্রতিশোধ ও বিস্মৃতির অবর্ণনীয় পরিণতির মুখোমুখি হবে।’