কৃষ্ণসাগর তীরবর্তী শহর ওদেসার বন্দরে অবকাঠামো লক্ষ্য করে গতকাল বুধবার ক্ষেপণাস্ত্র হামলা চালিয়েছে রাশিয়া।
ইউক্রেনের নৌবাহিনীর দাবি, এ ঘটনায় পাঁচজন নিহত হয়েছে। হামলাস্থলের এক কিলোমিটারেরও কম দূরত্বে অবস্থান করছিলেন ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কি ও গ্রিসের প্রধানমন্ত্রী কিরিয়াকস মিতসোতাকিস।
ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কি এক সংবাদ সম্মেলনে বলেন, ‘আমার মনে হচ্ছে, আমরা শুধু যে শব্দ শুনেছি তাই নয়, আজ আমরা হামলা হতেও দেখেছি।’ ওই সংবাদ সম্মেলনে গ্রিক প্রধানমন্ত্রী কিরিয়াকস মিতসোতাকিসও উপস্থিত ছিলেন। তিনি এবং তাঁর প্রতিনিধিরা জেলেনস্কির সঙ্গে ওদেসার বিভিন্ন জায়গা পরিদর্শনে গিয়েছিলেন।
বিভিন্ন সূত্রে জানা গেছে, ওই প্রতিনিধিদলের ৫০০ থেকে ৮০০ মিটার দূরত্বে হামলাটি হয়েছে।
ইউক্রেনের নৌবাহিনীর মুখপাত্র দিমিত্র প্লেতেনচুক দেশটির বার্তা সংস্থা ইউক্রিনফর্মকে বলেন, ওদেসা বন্দরের অবকাঠামো লক্ষ্য করে হামলা চালানো হয়েছে। এতে পাঁচজন নিহত হয়েছে।
ইউক্রেনের দক্ষিণাঞ্চলীয় প্রতিরক্ষা বাহিনীর মুখপাত্র নাতালিয়া হুমেনিউক মনে করেন, হামলাস্থলের কাছে ওই দুই নেতার উপস্থিত থাকার বিষয়টি কাকতালীয়। রাশিয়া এমনিতেই বন্দর অবকাঠামোতে হামলা অব্যাহত রেখেছে।
যুক্তরাষ্ট্রের অর্থায়নে পরিচালিত রেডিও লিবার্টিকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে হুমেনিউক বলেন, ‘হ্যাঁ, ওদেসায় ক্ষেপণাস্ত্র হামলা হয়েছে। তবে সুনির্দিষ্ট কোনো সফরের সঙ্গে এর যোগসূত্র নেই।’
ওই অঞ্চলে ব্যালিস্টিক ক্ষেপণাস্ত্র হামলা হতে পারে বলে ইউক্রেনের বিমানবাহিনী বুধবার সকালে আভাস দিয়েছিল। তবে দুই নেতার সংবাদ সম্মেলনের আগ পর্যন্ত ওই হামলার খবরটি আনুষ্ঠানিকভাবে জানানো হয়নি। সংবাদ সম্মেলনের আগে দুই নেতা বন্দর পরিদর্শন করেন। সমুদ্রপথে রপ্তানির জন্য ইউক্রেনের যে মানবিক করিডর আছে, সেটিও পরিদর্শন করেন তাঁরা।
২০২২ সালের ফেব্রুয়ারিতে ইউক্রেনে রাশিয়ার হামলা শুরুর পর এটি ছিল দেশটিতে মিতসোতাকিসের প্রথম সফর। তিনি বলেন, গাড়িতে ওঠার সময় প্রতিনিধি দল সাইরেন ও একটি বড় বিস্ফোরণের শব্দ শুনতে পায়।
মিতসোতাকিস বলেন, ‘আমি মনে করি, এ ঘটনা পরিষ্কার করে আমাদের সামনে এখানকার যুদ্ধ বাস্তবতাকে তুলে ধরেছে।’ বেসামরিক নাগরিকদের ওপর যুদ্ধের কী প্রভাব পড়ছে, তা বোঝার জন্য ইউরোপীয় নেতাদের প্রতি ইউক্রেন সফরের আহ্বান জানিয়েছেন মিতসোতাকিস।
এদিকে রাশিয়ার প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয় বলছে, তাদের সেনারা ওদেসা বন্দরে ইউক্রেনীয় নৌবাহিনীর একটি ড্রোনের ঘাঁটিতে হামলা চালিয়েছে। মন্ত্রণালয়টির দাবি, তাদের কাঙ্ক্ষিত লক্ষ্য অর্জন হয়েছে।