বেলারুশ সরকার বলেছে, রাশিয়ার ভাড়াটে সেনা সরবরাহকারী প্রতিষ্ঠান ভাগনারের সঙ্গে তাদের একটি সমঝোতা চুক্তি হয়েছে। চুক্তির আওতায় ভাগনার বাহিনী বেলারুশের সেনাদের প্রশিক্ষণ দেবে। গত মাসের শেষের দিকে রাশিয়ার সামরিক নেতৃত্বের বিরুদ্ধে ভাগনার বাহিনীর স্বল্পস্থায়ী বিদ্রোহের পর এ চুক্তি হয়।
গতকাল শুক্রবার বেলারুশের প্রতিরক্ষামন্ত্রী এক বিবৃতিতে বলেন, ভাগনার গ্রুপের ব্যবস্থাপনা কর্তৃপক্ষের সঙ্গে সমঝোতার ভিত্তিতে তাঁরা একটি রোডম্যাপ তৈরি করেছেন। এ রোডম্যাপ অনুযায়ী, অদূর ভবিষ্যতে সশস্ত্র বাহিনীগুলোর বিভিন্ন শাখার মধ্যে অভিজ্ঞতা আদান-প্রদান এবং প্রশিক্ষণ দেওয়ার ব্যাপারে আলোচনা হয়েছে।
বিদ্রোহের আগে ইউক্রেনে রুশ বাহিনীর হয়ে যুদ্ধে ভাগনার গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেছে। প্রায় দেড় বছর ধরে এ যুদ্ধ চলছে।
ভাগনারের কতজন যোদ্ধা এখন বেলারুশে আছেন, কিংবা আরও যোদ্ধা তাঁদের সঙ্গে যোগ দেবেন কি না, সে ব্যাপারে দেশটির প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয় সুনির্দিষ্ট করে কিছু জানায়নি। তবে তারা বলেছে, সামনে যা যা হবে, তা নিয়ে জনগণকে নিয়মিত জানানো হবে।
বেলারুশের প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয় একটি ভিডিও পোস্ট করেছে। এতে দেখা গেছে, দেশটির আসিপোভিচি শহরের কাছে একটি সামরিক এলাকায় ভাগনার যোদ্ধারা বেলারুশের সেনাদের নির্দেশনা দিচ্ছেন। বেলারুশের রাজধানী মিনস্ক থেকে এলাকাটি প্রায় ৯০ কিলোমিটার দক্ষিণ-পূর্বে অবস্থিত।
রাশিয়ার সামরিক নেতৃত্বের বিরুদ্ধে বিদ্রোহ ঘোষণা করে গত ২৪ জুন মস্কো অভিমুখে যাত্রা শুরু করেছিল ভাগনার। তারা রোস্তভ অন দন শহরের নিয়ন্ত্রণ নিয়েছিল। পরে বেলারুশের প্রেসিডেন্টের মধ্যস্থতায় বিদ্রোহ থেকে সরে আসেন ভাগনারপ্রধান ইয়েভগেনি প্রিগোশিন। সমঝোতা অনুযায়ী, ভাগনারপ্রধান ইয়েভগেনি প্রিগোশিন তাঁর যোদ্ধাদের বিদ্রোহ থামাতে বলেন। আর এর বিনিময়ে রাশিয়া তাঁদের বিরুদ্ধে করা বিদ্রোহের অভিযোগ প্রত্যাহার করে নেয়।
২৪ জুন রোস্তভ শহর ছেড়ে যাওয়ার পর থেকে প্রিগোশিনকে প্রকাশ্যে দেখা যায়নি।
ওই বিদ্রোহের পাঁচ দিন পর মস্কোতে রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন, ভাগনারপ্রধান প্রিগোশিন এবং ভাগনারের অন্য যোদ্ধাদের মধ্যে একটি বৈঠক হয়। তবে ওই বৈঠক সম্পর্কে খুব একটা তথ্য প্রকাশ করা হয়নি।
গত বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় কোমারসান্ট সংবাদপত্রে প্রকাশিত এক সাক্ষাৎকারে পুতিন বলেছেন, তিনি ভাগনার যোদ্ধাদের একটি প্রস্তাব দিয়েছিলেন। যোদ্ধাদের বলেছিলেন, তাঁরা যেন সবাই এক জায়গাতেই জড়ো হন এবং সেখানেই কাজ করেন। তাঁদের নেতা একই থাকবে।
পুতিন বলেছেন, অনেক ভাগনার যোদ্ধাই তাঁর প্রস্তাবের ব্যাপারে সম্মতি জানিয়ে মাথা নাড়াচ্ছিলেন। তবে সামনে বসে থাকা প্রিগোশিন তাঁর পেছনে থাকা যোদ্ধাদের চেহারার দিকে না তাকিয়েই প্রস্তাবটি প্রত্যাখ্যান করে দিয়েছেন। প্রিগোশিন বলছিলেন, ‘ছেলেরা এ ধরনের সিদ্ধান্ত মানবে না।’