টিজি হডসন
টিজি হডসন

আবেদনের ৪৮ বছর পর এল নিয়োগপত্র

যুক্তরাজ্যের বাসিন্দা টিজি হডসন। কয়েক দিন আগে তিনি একটি নিয়োগপত্র হাতে পেয়েছেন। ওই নিয়োগপত্র তাঁকে খুশি করার সঙ্গে সঙ্গে ভীষণ হতবাকও করেছে। কারণ, এ চাকরির জন্য তিনি আবেদন করেছিলেন প্রায় অর্ধশতাব্দী আগে!

হডসনের বয়স এখন ৭০ বছর। তিনি ছিলেন পেশাদার মোটরসাইকেল স্টান্ট রাইডার। স্টান্ট রাইডারের চাকরির জন্যই প্রায় পাঁচ দশক আগে একটি আবেদনপত্র পাঠিয়েছিলেন হডসন। চাকরিটি তিনি পেয়েও যান।

হডসনকে নিয়োগপত্র পাঠানো হয়েছিল ১৯৭৬ সালের জানুয়ারিতে। কিন্তু সেটি এত বছর আটকে পড়ে ছিল পোস্ট অফিসের একটি আলমারির ড্রয়ারের পেছনে। নিয়োগপত্র খুঁজে পাওয়ার পর স্টেইনস পোস্ট অফিস থেকে হাতে লেখা নোটসহ সেটি হডসনের ঠিকানায় পাঠানো হয়।

নোটে লেখা ছিল, ‘স্টেইনস পোস্ট অফিস থেকে দেরিতে পাঠানো হলো। একটি ড্রয়ারের পেছনে এটি পাওয়া গেছে। প্রায় ৫০ বছর দেরি।’

চাকরির আবেদন করার পর নিয়োগকর্তার কাছ থেকে কখনো কোনো জবাব না পেয়ে অবাক হয়েছিলেন হডসন, হতাশও হয়েছিলেন। এখন তিনি জানতে পেরেছেন, কেন সে জবাব আসেনি।

অতীতের স্মৃতি ঘেঁটে হডসনের মনে পড়ে, লন্ডনে একটি ফ্ল্যাটে বসে তিনি চাকরির আবেদনটি টাইপ করেছিলেন। অধীর আগ্রহে অপেক্ষা করছিলেন জবাবের জন্য। সে জবাব কখনোই আসেনি। তিনি বলেন, তিনি প্রতিদিন তাঁর পোস্ট (বাক্স) খুঁজে দেখতেন। সে সময় মোটরসাইকেল স্টান্ট রাইডার হওয়ার জন্য মরিয়া ছিলেন হডসন।

আবেদনপত্র পাঠানোর পর নিয়োগপত্র আসতে ৪৮ বছর লেগে গেলেও দারুণ খুশি যুক্তরাজ্যের বাসিন্দা এই নারী। তিনি বলেন, ‘এত বছর পরে হলেও এটা পাওয়া আমার জন্য বিশাল বড় কিছু।’

ওই চাকরির আবেদনে সাড়া না পেলেও নিজের স্বপ্নের পেছনে ছোটা বন্ধ করেননি হডসন। নিজের চেষ্টায় তিনি পেশাদার মোটরসাইকেল স্টান্ট রাইডার হয়ে ওঠেন। তিনি আফ্রিকায় সাপ ধরা ও ঘোড়সওয়ারের কাজ করেছেন। তিনি এমনকি উড়োজাহাজ চালানো শেখেন এবং ‘অ্যারোবেটিক পাইলট’ হিসেবেও কাজ করেছেন।

ওই সময় হডসন নিজেকে নারী হিসেবে পরিচয় দিতে চাইতেন না। কারণ, তাঁর মনে হয়েছিল, তিনি যে নারী, অন্যরা সেটা জানার পর হয়তো তাঁর কাজের সুযোগই হবে না। কাজ করতে গিয়ে কয়েকবার দুর্ঘটনায় পড়ে হাড় ভেঙেছে তাঁর। এরপরও জীবনকে উপভোগ করার কথা জানিয়েছেন এই নারী। ৭০ বছরের এই নারী বলেন, ‘তরুণ জীবনে ফিরে যেতে পারলে আমি নিজেকে এই জীবনের পথেই চলতে বলতাম।’