জার্মান চ্যান্সেলর ওলাফ শলৎজ
জার্মান চ্যান্সেলর ওলাফ শলৎজ

ট্রাম্পের জয়ের পরদিনই সংকটে জার্মানির জোট সরকার

জার্মানির ক্ষমতাসীন জোট সরকার ভেঙে পড়ার উপক্রম হয়েছে। যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে রিপাবলিকান দলের প্রার্থী ডোনাল্ড ট্রাম্পের জয়ের এক দিন পরই ইউরোপের সবচেয়ে বড় অর্থনীতির দেশটির সরকারে এ অস্থিরতা দেখা দেয়।

বুধবার সন্ধ্যায় তিন শরিক দলের সভার পর চ্যান্সেলর ওলাফ শলৎজ জোটভুক্ত উদারপন্থী ফ্রি ডেমোক্র্যাটস দলের সভাপতি ও অর্থমন্ত্রী ক্রিশ্চিয়ান লিন্ডনারকে সরকার থেকে বহিষ্কার করেন।

এই ঘটনার আগে জোটভুক্ত তিন দল সোশ্যাল ডেমোক্র্যাটস, পরিবেশবাদী গ্রিনস ও ফ্রি ডেমোক্র্যাটস দলের নেতারা বাজেট সংকট থেকে উত্তরণের উপায় বের করতে আড়াই ঘণ্টা আলোচনা করেন। মূলত আলোচনা হয়েছিল কীভাবে ২০২৫ সালের বাজেটের বাড়তি খরচ জোগানো এবং ক্ষতিগ্রস্ত জার্মান অর্থনীতিকে আগের অবস্থায় ফিরিয়ে আনা যায়।

সম্প্রতি ক্ষমতাসীন জোটে নতুন বাজেট এবং অর্থনৈতিক নীতির বিষয়গুলো নিয়ে বিভক্তি দেখা দেয়। চ্যান্সেলর শলৎজ বুধবার সন্ধ্যায় এক সংবাদ সম্মেলনে বলেন, ‘জার্মানির ক্ষতি এড়াতে আমি অর্থমন্ত্রীকে বহিষ্কারের পদক্ষেপ নিতে বাধ্য হয়েছি।’

চ্যান্সেলর বলেন, অর্থমন্ত্রী লিন্ডনারকে সাশ্রয়ী মূল্যে জ্বালানি সরবরাহ, চাকরির নিরাপত্তা, বিনিয়োগ বোনাস, ইউক্রেনের জন্য সমর্থন বাড়ানোর প্রস্তাব দিয়েছিলাম। কিন্তু অর্থমন্ত্রী লিন্ডনার কোনো সদিচ্ছার ইঙ্গিত দেননি। আমি আমাদের দেশকে তাঁর এ ধরনের আচরণের কাছে সঁপে দিতে চাইনি।’

শলৎজ বলেন, অর্থমন্ত্রী লিন্ডনার শুধু তাঁর দলের বেশির ভাগ ধনিক শ্রেণির সমর্থকের স্বার্থের বিষয়ে চিন্তা করেন। তিনি ধনীদের জন্য কর হ্রাসের প্রস্তাবসহ পেনশন ভোগকারীদের অর্থ কমাতে চেয়েছিলেন।

লিন্ডনারকে বহিষ্কার করতে ইতিমধ্যে জার্মানির প্রেসিডেন্ট ফ্রাঙ্ক-ওয়াল্টার স্টেইনমায়ারকে অনুরোধ করেছেন চ্যান্সেলর। আগামী বছরের জানুয়ারির মাঝামাঝি সময়ে তিনি পার্লামেন্টে আস্থা ভোট করতে চান। এর মধ্য দিয়ে দেশটিতে আগাম ভোটের পথ সুগম হতে পারে। জার্মানিতে পরবর্তী নির্বাচন হওয়ার কথা রয়েছে ২০২৫ সালের ২৮ সেপ্টেম্বর।

চ্যান্সেলর শলৎজ ঘোষণা করেছেন, এই মুহূর্তে তিনি খুব দ্রুত প্রধান বিরোধী দল ক্রিশ্চিয়ান ডেমোক্রেটিক ইউনিয়নের নেতা ফ্রেডরিখ মার্জের সঙ্গে কথা বলবেন।

জার্মানিতে জোট বেঁধে সরকার গঠনের রেওয়াজ দীর্ঘদিনের। ২০২১ সালের ২৪ সেপ্টেম্বর জার্মানির ২০তম নির্বাচনের পর দীর্ঘ ১০ সপ্তাহ দলগুলো নিজেদের মধ্যে আলোচনা করে। পরে তিন দল জোটবদ্ধভাবে চার বছর সরকার চালাতে একমত হয়।

সরকার গঠনের আগে জোটভুক্ত তিনটি দলই দলীয় সম্মেলন করে এ বিষয়ে সদস্যদের সম্মতি নিয়েছিল। কিন্তু চার বছর পূর্ণ না হতেই জোটে সংকট দেখা দিয়েছে।