রাশিয়া ও ইউক্রেন একে অপরের ভূখণ্ডে পাল্টাপাল্টি ড্রোন হামলা চালিয়েছে। শনিবার রাতে পাল্টাপাল্টি এসব হামলার ঘটনা ঘটে। দুই দেশের সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ এ তথ্য জানিয়েছে।
রাশিয়ার ব্রিয়ানস্কসহ অন্যান্য অঞ্চলে শনিবার রাতে ১০০টির মতো ড্রোন হামলা চালিয়েছে ইউক্রেন। তবে এতে কোনো ক্ষয়ক্ষতির খবর পাওয়া যায়নি। রুশ কর্মকর্তারা রোববার এ তথ্য জানিয়েছেন।
ব্রিয়ানস্কের গভর্নর আলেকজান্ডার বোগোমাজ বার্তা আদান–প্রদানের টেলিগ্রাম চ্যানেলে জানিয়েছেন, অন্তত ৩০টি ড্রোন ব্রিয়ানস্কের আকাশেই ধ্বংস করে দেওয়া হয়েছে। স্মোলনেস্ক অঞ্চলের আকাশেও ইউক্রেনের ড্রোন রাশিয়ার আকাশ প্রতিরক্ষাব্যবস্থা ধ্বংস করেছে বলে সেখানকার গভর্নর ভ্যাসিলি আনোখিন জানান। তবে সেখানে কতগুলো ড্রোন ধ্বংস করা হয়েছে, তা নিশ্চিত করে বলতে পারেননি তিনি। গভর্নরদের দাবি, এই দুই অঞ্চলের কোনোটিতেই হতাহতের ঘটনা ঘটেনি।
এদিকে শনিবার রাতে মস্কো থেকে কয়েক শ কিলোমিটার দূরের লিপেটস্ক অঞ্চলে বিমান হামলার সতর্কতা জারি করা হয় বলে সেখানকার গভর্নর জানিয়েছেন।
কিয়েভ প্রায়ই বলে আসছে যে ইউক্রেনের জ্বালানি, সামরিক ও পরিবহন অবকাঠামোয় অব্যাহত হামলার জবাব এবং মস্কোর যুদ্ধচেষ্টা রুখে দিতে রাশিয়ার ভেতরে হামলা চালাচ্ছে তারা।
অপরদিকে শনিবার রাতে ইউক্রেনের জ্বালানি অবকাঠামোয় বড় ধরনের হামলা চালিয়েছে রাশিয়া। ইউক্রেনের জ্বালানি মন্ত্রণালয় বলেছে, গত তিন মাসের মধ্যে এ নিয়ে অষ্টমবারের মতো জ্বালানি অবকাঠামোয় হামলা চালাল রুশ বাহিনী।
ইউক্রেনের বিমানবাহিনীর দাবি, রাতে ইউক্রেনের বিভিন্ন অঞ্চলে ১৩টি ড্রোন পাঠায় রাশিয়া। সব কটি ড্রোনই ভূপাতিত করা হয়েছে। এ ছাড়া রুশ বাহিনী ১৬টি ক্ষেপণাস্ত্র নিক্ষেপ করে, যার মধ্যে ১২টিই ভূপাতিত করা হয়েছে।
ইউক্রেনের উত্তর–পূর্বাঞ্চলীয় শহর খারকিভের সরকারি কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, শনিবার রাতে শহরে অন্তত চারটি বিস্ফোরণের শব্দ শোনা গেছে। রুশ বোমা হামলায় তিনজন নিহত এবং অন্তত ১৮ জন আহত হয়েছেন।
খারকিভের আঞ্চলিক গভর্নর ওলেহ সিনেইহুবোভ বলেন, এ অঞ্চলে কোনো সামরিক স্বার্থ নেই। বেসামরিক অবকাঠামোর ওপর এটি আরও একটি সন্ত্রাসী হামলা।
কর্মকর্তারা বলছেন, হামলায় মধ্য জাপোরিঝঝিয়া অঞ্চলে দুই জ্বালানি শ্রমিক আহত হয়েছেন। পশ্চিমের শহর লিভিভে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে জ্বালানি সরঞ্জাম। দক্ষিণ–পশ্চিমের ইভানো ফ্রাঙ্কিভস্ক অঞ্চলে ঘরবাড়ি ও কিন্ডারগার্টেন ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে বলে জানিয়েছে স্থানীয় কর্তৃপক্ষ।
গ্রীষ্ম ও বসন্তকে কেন্দ্র করে ইউক্রেনের জ্বালানি অবকাঠামোগুলোয় হামলা জোরদার করেছে রাশিয়া। এর ফলে বারবার বিদ্যুৎ বিপর্যয়ের মুখে পড়ছে ইউক্রেন। দেশটির প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কি সম্প্রতি জানান, চলতি বছরের মার্চের শেষ থেকে এ পর্যন্ত রাশিয়া তার দেশের বিদ্যুৎ উৎপাদন সক্ষমতার অর্ধেকই ধ্বংস করে দিয়েছে।