সেনাবাহিনীতে প্রথমবারের মতো নারীদের বাধ্যতামূলক যোগদানের বিধি কার্যকরের পরিকল্পনা ঘোষণা করেছে ডেনমার্ক। একই সঙ্গে সেনাবাহিনীতে বাধ্যতামূলকভাবে কাজ করার মেয়াদও বাড়ানো হবে।
ডেনমার্কে এখন শুধু পুরুষদের জন্য বাধ্যতামূলক নিয়োগের বিধি চালু আছে। অর্থাৎ দেশের নারীরা নিজেদের ইচ্ছায় সেনাবাহিনীতে যোগ দিতে পারেন। তবে এখন ডেনমার্ক সরকার ২০২৬ সাল থেকে নারীদেরও বাধ্যতামূলকভাবে সেনাবাহিনীতে যোগদানের বিধি কার্যকরের পরিকল্পনা করছে।
এ বিধি কার্যকর হলে ডেনমার্ক হবে সেনাবাহিনীতে নারীদের নিয়োগ বাধ্যতামূলক ঘোষণা করা তৃতীয় ইউরোপীয় দেশ। অপর দুটি দেশ হলো নরওয়ে ও সুইডেন।
গত বুধবার সেনাবাহিনীর নিয়োগ বিধিতে সংস্কার আনার পরিকল্পনা ঘোষণা করে ডেনমার্কের প্রধানমন্ত্রী মেটে ফ্রেডেরিকসেন বলেন, ‘সরকার পুরোদমে লৈঙ্গিক সমতা নিশ্চিত করতে চাইছে।’
ডেনমার্কে এখন সেনাবাহিনীতে বাধ্যতামূলকভাবে চার মাস কাজ করতে হয়। এ সময়সীমা বাড়িয়ে ১১ মাস করার কথাও ভাবছে দেশটির সরকার।
স্ক্যান্ডিনেভিয়ান দেশটি প্রতিরক্ষা বাজেটের পরিমাণও বাড়াতে চাইছে। ন্যাটোর লক্ষ্যমাত্রা পূরণে আগামী পাঁচ বছরে প্রতিরক্ষা খাতে বরাদ্দের পরিমাণ বাড়িয়ে প্রায় ৬০০ কোটি ডলার করতে চাইছে।
ডেনমার্কের প্রধানমন্ত্রী মেটে ফ্রেডেরিকসেন বলেন, ‘আমরা নিজেদের নতুন করে অস্ত্রশস্ত্রে সজ্জিত করছি মানে এ নয় যে আমরা যুদ্ধ চাই। আমরা অস্ত্রশস্ত্রে সজ্জিত হচ্ছি মানে আমরা এটা (যুদ্ধ) এড়াতে চাই।’
গত বছর ডেনমার্কে ৪ হাজার ৭০০ মানুষ সেনাবাহিনীতে যোগ দিয়েছে। এর মধ্যে প্রায় ২৫ শতাংশ নারী। এ সংখ্যা বাড়িয়ে বছরের ৫ হাজার করার পরিকল্পনা নেওয়া হয়েছে।
ডেনমার্কের জনসংখ্যা প্রায় ৬০ লাখ। দেশটির সেনাবাহিনীতে বর্তমানে প্রায় ২০ হাজার সক্রিয় সদস্য আছে। এর মধ্যে পেশাদার সেনার সংখ্যা প্রায় ৯ হাজার।
২০২২ সালের ফেব্রুয়ারিতে ইউক্রেনে রাশিয়ার হামলা শুরুর পর থেকে ইউরোপে উত্তেজনা বাড়তে দেখা গেছে। ইউক্রেনকে সমর্থনকারী দেশগুলোর একটি ডেনমার্ক। ইউক্রেনকে দেশটি অত্যাধুনিক অস্ত্র ও তহবিল সরবরাহ করেছে। যুক্তরাষ্ট্রের তৈরি এফ-১৬ যুদ্ধবিমান কীভাবে পরিচালনা করতে হবে তা নিয়ে ইউক্রেনের পাইলটদের প্রশিক্ষণ দিয়েছে ডেনমার্ক।
রাশিয়া–ইউক্রেন যুদ্ধকে কেন্দ্র করে ইউরোপে নিজেদের প্রতিরক্ষা খাতকে বলিষ্ঠ করতে চাইছে সামরিক জোট ন্যাটো। সম্প্রতি ফিনল্যান্ড ও সুইডেন ন্যাটোতে যোগ দিয়েছে।