রাশিয়া ও ইউক্রেন দুই দেশের কিছু অবকাঠামোয় হামলা বন্ধ করতে তৃতীয় পক্ষের মাধ্যমে আলোচনা চালিয়ে আসছে, এক মার্কিন গণমাধ্যমের এমন দাবি অস্বীকার করেছে মস্কো। রোববার রুশ পররাষ্ট্র দপ্তরের মুখপাত্র মারিয়া জাখারোভা এ বিষয়ে কথা বলেন।
গত শনিবার মার্কিন গণমাধ্যম দ্য ওয়াশিংটন পোস্টের এক প্রতিবেদনে দাবি করা হয়, নিজেদের জ্বালানি ও বিদ্যুৎ অবকাঠামোতে হামলা বন্ধ করতে রাশিয়া ও ইউক্রেন একটি চুক্তি করার পরিকল্পনা করছিল। এ জন্য চলতি মাসে উভয় দেশ কাতারে প্রতিনিধিদল পাঠানোর কথা ছিল। একই প্রতিবেদনে আরও বলা হয়, চুক্তিটি উভয় দেশকে আংশিক যুদ্ধবিরতির দিকে নিয়ে যেতে পারত। কিন্তু রাশিয়ার ভূখণ্ডে (কুরস্ক অঞ্চলে) ইউক্রেনের সাম্প্রতিক হামলার কারণে তা (কাতারে আলোচনার সেই পরিকল্পনা) বন্ধ হয়ে গেছে।
এ প্রতিবেদনের বিষয়ে রুশ পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র মারিয়া জাখারোভা বলেন, ‘কেউ কোনো কিছু ফাঁস করেনি। কারণ, ফাঁস করার মতো কিছু ছিলই না। বেসামরিক গুরুত্বপূর্ণ অবকাঠামোর নিরাপত্তা নিশ্চিত করার জন্য রাশিয়া ও কিয়েভ সরকারের (জেলেনস্কি প্রশাসন) সঙ্গে প্রত্যক্ষ বা অপ্রত্যক্ষ কোনো আলোচনা হচ্ছে না।’
কাতারে আলোচনার বিষয়ে তাৎক্ষণিকভাবে মন্তব্য করতে রাজি হয়নি ইউক্রেন। কিন্তু ওয়াশিংটন পোস্টের প্রতিবেদনে দাবি করা হয়, মধ্যপ্রাচ্যের পরিস্থিতির কারণে দোহা (কাতার) শীর্ষ সম্মেলন স্থগিত করার কথা জানিয়েছিল ইউক্রেনের প্রেসিডেন্টের দপ্তর। এখন তা ভিডিও সম্মেলন আকারে ২২ আগস্ট অনুষ্ঠিত হবে।
চলমান যুদ্ধে রাশিয়া ও ইউক্রেন উভয়ে পরস্পরের বিরুদ্ধে বেসামরিক অবকাঠামোর ওপর হামলার অভিযোগ করে আসছে। অবশ্য উভয়েই তা অস্বীকার করেছে।
কাতারে মস্কো-কিয়েভের আলোচনার বিষয়ে নিউইয়র্ক পোস্টের দাবি প্রসঙ্গে মারিয়া জাখারোভা রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনের সাম্প্রতিক একটি মন্তব্য উদ্ধৃত করেন। ১২ আগস্ট সাংবাদিকেরা পুতিনকে প্রশ্ন করেছিলেন, রুশ ভূখণ্ডে ইউক্রেনের স্থল অভিযানের পর কিয়েভের সঙ্গে কী ধরনের আলোচনা হতে পারে? তখন পুতিন (কুরস্ক অঞ্চলে) রাশিয়ার বেসামরিক অবকাঠামোতে হামলার বিষয়ে উল্লেখ করে উত্তর দিয়েছিলেন।
পুতিন তখন বলেছিলেন, ‘যারা এসব জিনিস করতে পারে, সেসব মানুষের সঙ্গে আলোচনার কিছু নেই।’ পুতিনের এ কথাই আজ উদ্ধৃত করেন জাখারোভা।
২০২২ সালের ফেব্রুয়ারিতে ইউক্রেনে হামলা শুরু করে রাশিয়া। এরপর তাঁরা ইউক্রেনের প্রায় ১৮ শতাংশ ভূখণ্ড দখল করে নিয়েছে। এ পরিস্থিতিতে ৬ আগস্ট রাশিয়ার সীমান্তবর্তী কুরস্ক অঞ্চলে স্থল অভিযান শুরু করে ইউক্রেন। দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের পর রাশিয়ার ভূখণ্ডে বাহির থেকে এটাই প্রথম সামরিক অভিযান।