রাশিয়ার বিরুদ্ধে যুদ্ধে কৌশলগতভাবে গুরুত্বপূর্ণ পূর্ব ইউক্রেনের শহর চাসিভ ইয়ার ঘিরে লড়াই ‘অত্যন্ত কঠিন’ হয়ে পড়েছে। রুশ সেনাদের হাতে সম্ভাব্য পতন থেকে শহরটিকে রক্ষায় নতুন করে মোতায়েন করা ইউক্রেনের সামরিক বাহিনীর একটি ইউনিট এমনই মত দিয়েছে।
ইউক্রেন বাহিনীর ২৪তম মেকানাইজড ব্রিগেডের কর্মকর্তারা বলেছেন, শহরের প্রধান প্রধান বসতি লক্ষ্য করে রাশিয়া অব্যাহতভাবে হামলা চালিয়ে যাচ্ছে।
চাসিভ ইয়ার শহরটি বাখমুতের পশ্চিমে অবস্থিত। গত ফেব্রুয়ারিতে রুশ বাহিনী পাশের আভদিভকা অঞ্চলের নিয়ন্ত্রণ নেওয়ার পর থেকে এই শহর লক্ষ্য করে তীব্র হামলা চালিয়ে আসছে।
রুশ ভূখণ্ড ও ক্রিমিয়ার আকাশ থেকে রাতভর ইউক্রেনের শতাধিক ড্রোন ভূপাতিত করা হয়েছে বলে মস্কো জানানোর পর চাসিভ ইয়ার শহর রক্ষায় ইউক্রেন সেনাবাহিনীর এই ব্রিগেডকে নতুন করে মোতায়েন করা হয়েছে। ইউক্রেনের ড্রোন হামলায় রাশিয়ায় একজন নিহত হয়েছেন বলে কর্মকর্তারা জানিয়েছেন।
চলতি বছরের শুরুতে রাশিয়ার বিরুদ্ধে চলমান যুদ্ধে রসদসংকটে পড়ে কিয়েভ। এরপর থেকেই ইউক্রেনের দনবাস অঞ্চলে রুশ বাহিনী অব্যাহতভাবে সাফল্য অর্জন করতে থাকে।
২০২২ সালের ফেব্রুয়ারিতে ইউক্রেনে সামরিক অভিযান চালানোর নির্দেশ দেন রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন। অভিযানের কিছু দিনের মধ্যেই দনবাস অঞ্চল দখলের ঘোষণা দেয় রুশ বাহিনী। এরপর দনবাসের দুটি অঞ্চল দোনেৎস্ক ও লুহানস্ককে স্বাধীন রাষ্ট্রের স্বীকৃতি দেন পুতিন।
সম্প্রতি রুশ বাহিনী চাসিভ ইয়ারকে তাদের হামলার লক্ষ্যবস্তুতে পরিণত করেছে বলে মনে করা হচ্ছে। যুদ্ধ শুরুর আগে শহরটিতে প্রায় ১২ হাজার মানুষের বসবাস ছিলো। পাহাড়ি এই শহরের নিয়ন্ত্রণ হারালে দনবাসের ইউক্রেনীয় অন্যান্য শহর আরও বেশি ঝুঁকিপূর্ণ হয়ে উঠতে পারে। সে সব শহর তখন রাশিয়ার আরও নাগালের মধ্যে চলে আসবে।
যুক্তরাষ্ট্রের দ্য ইনস্টিটিউট ফর দ্য স্টাডি অব ওয়্যারের (আইএসডব্লিউ) তথ্য অনুয়ায়ী, রাশিয়া চাসিভ ইয়ার শহরটি দখল করতে পারলে সেটি অন্যান্য শহরে ‘অভিযান চালানোর জন্য গুরুত্বপূর্ণ’ হয়ে উঠতে পারে। এখান থেকে কোস্তন্তিনিভকা ও দ্রুজকিভকা শহরে রুশ বাহিনীর আক্রমণ চালানোকে সহজ করে দেবে।
গতকাল শুক্রবার সকাল থেকে চাসিভ ইয়ার ও ক্লিশ্চিভিকা শহরে তিন দফায় ঢোকার চেষ্টা করেছে রুশ বাহিনী। ইউক্রেনের সেনাবাহিনীর জেনারেল স্টাফ এই তথ্য জানিয়েছে।