রাশিয়ার অব্যাহত গোলা হামলা থেকে বাঁচতে গতকাল রোববার কয়েক শ ইউক্রেনীয় খেরসন শহর ছেড়ে গেছেন। রাশিয়া সেনা প্রত্যাহার করে নিলে দুই সপ্তাহ আগে শহরটি পুনরায় দখলে নেয় ইউক্রেনীয় বাহিনী। খেরসন বিজয়ের উদ্যাপনে মাতে ইউক্রেন। খবর দ্য গার্ডিয়ানের
রাশিয়ার দখল থেকে খেরসন মুক্ত করা চলমান যুদ্ধে কিয়েভের বড় অর্জন হিসেবে দেখা হচ্ছে। রুশ বাহিনী নিপ্রো নদীর পূর্ব পাড়ে সরে গেলে শহরটি পুনরায় নিয়ন্ত্রণে নেয় ইউক্রেন।
রুশ বাহিনী শহরটি ছেড়ে যাওয়ার আগে বিদ্যুৎকেন্দ্রগুলো ধ্বংস করে দিয়ে যায়। এর পর থেকে পানি ও বিদ্যুতের অভাবে বাসিন্দাদের সেখানে বসবাস করা কঠিন হয়ে উঠেছে। বিদ্যুৎ না থাকায় তীব্র শীতের মধ্যে তাঁরা ঘর গরম করতে পারছেন না।
যুদ্ধে জ্বালানি অবকাঠামোর ব্যাপক ক্ষতি হওয়ায় ইউক্রেনের তীব্র শীত সহ্য করা বাসিন্দাদের জন্য খুবই কঠিন হবে বলে মনে করা হচ্ছে। এ আশঙ্কায় গত সপ্তাহে খেরসন থেকে বাসিন্দাদের সরিয়ে নেওয়ার কাজ শুরু হয়।
রাশিয়ার গোলা হামলার কারণেও অনেকে শহর ছেড়ে যাচ্ছেন। ৯ নভেম্বর রুশ বাহিনী শহরটি ছেড়ে যাওয়ার পর অব্যাহত গোলা হামলায় এখন পর্যন্ত ৩২ জন বেসামরিক নাগরিক নিহত হয়েছেন।
শহর ছাড়তে গাড়িতে উঠতে যাচ্ছিলেন স্থানীয় বাসিন্দা ইয়েভহেন ইয়ানকভ। তিনি বলেন, ‘আমরা আমাদের বাড়ি ছেড়ে যাচ্ছি, এটা খুবই বেদনাদায়ক। আমরা এখন মুক্ত, কিন্তু তারপরও চলে যেতে হচ্ছে। কারণ, হামলা হচ্ছে, গোলা এসে পড়ছে। লোকজন মারা যাচ্ছেন।’
খেরসন শহরের সামরিক প্রশাসনের প্রধান গালিনা লুগোভা বলেছেন, কর্তৃপক্ষ মানুষকে নিরাপদ করতে সবকিছু করবে। কিন্তু রুশ হামলা প্রতিদিনই তীব্র হচ্ছে। হামলার পর হামলা চলছে।
রুশ গোলা আঘাত হেনেছে ভিতালি নাদোচির ভবনেও। তিনি বলেন, ‘চারটি ফ্ল্যাট পুড়ে গেছে। জানালাগুলো ছিন্নভিন্ন হয়ে গেছে। আমরা এখানে থাকতে পারছি না। কোনো বিদ্যুৎ নেই, পানি নেই, বাসা গরম করার ব্যবস্থা নেই। তাই আমরা আমার ভাইয়ের কাছে যেতে শহর ছাড়ছি।’
খেরসনে অব্যাহত বোমা হামলার কারণ এখনো স্পষ্ট নয়—রাশিয়া নিপ্রো নদী ঘিরে নিজেদের প্রতিরক্ষামূলক অবস্থান পোক্ত এবং ইউক্রেনের নতুন হামলা প্রচেষ্টা রুখে দেওয়ার চেষ্টা করছে নাকি শহরটি পুনরায় দখল করার চেষ্টা করছে। খেরসন থেকে সেনা প্রত্যাহার ছিল মস্কোর জন্য খুবই অপমানের।