প্রিগোশিনকে হত্যার নির্দেশ দেওয়ার কথা অস্বীকার রাশিয়ার

উড়োজাহাজ বিধ্বস্ত হয়ে নিহত ভাগনারের প্রধান ইয়েভগেনি প্রিগোশিনকে স্মরণ করছেন তাঁর শুভাকাঙ্ক্ষীরা
 ছবি: রয়টার্স

ভাড়াটে যোদ্ধা সরবরাহকারী প্রতিষ্ঠান ভাগনার গ্রুপের প্রধান ইয়েভগেনি প্রিগোশিনকে হত্যার নির্দেশ দেওয়ার কথা অস্বীকার করেছে রাশিয়া। রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনের মুখপাত্র দিমিত্রি পেসকভ বলেন, ক্রেমলিন প্রিগোশিনকে মেরে ফেলার নির্দেশ দিয়েছে বলে যে কথা বলা হচ্ছে, তা ‘ডাহা মিথ্যা’।

দিমিত্রি পেসকভ আজ সাংবাদিকদের সঙ্গে একটি কনফারেন্স কলে এসব কথা বলেন। প্রিগোশিনের মৃত্যুর পেছনে রাশিয়ার হাত রয়েছে বলে পশ্চিমারা অভিযোগ তুলেছে। এ বিষয়ে রুশ প্রেসিডেন্টের মুখপাত্র বলেন, মর্মান্তিক উড়োজাহাজ দুর্ঘটনায় প্রিগোশিনের মৃত্যু নিয়ে অনেক জল্পনা-কল্পনা হয়েছে।

পেসকভ বলেন, পশ্চিমে অবশ্যই এসব জল্পনা–কল্পনা একটি নির্দিষ্ট দৃষ্টিভঙ্গি থেকে এসেছে। এটা একটা ডাহা মিথ্যা। রুশ প্রেসিডেন্টের মুখপাত্র বলেন, ‘যখন আমরা এ বিষয়ে কথা বলব, তখন অবশ্যই আমাদের শুধু তথ্য–উপাত্ত ধরে কথা বলা উচিত।’

দিমিত্রি পেসকভ বলেন, এই মুহূর্তে তাঁদের হাতে বেশি তথ্য নেই। যেসব তথ্য আছে, সেগুলো তদন্তে খতিয়ে দেখতে হবে। সেই তদন্ত এখন চলছে।

গত বুধবার সন্ধ্যায় প্রিগোশিনের ব্যক্তিগত উড়োজাহাজ ‘এমব্রেয়ার লিগেসি’ রাশিয়ার রাজধানী মস্কো থেকে সেন্ট পিটার্সবার্গ শহরে যাওয়ার পথে বিধ্বস্ত হয়। মস্কো থেকে ৩০০ কিলোমিটার উত্তরে টিভিয়ের এলাকায় এই ঘটনা ঘটে। উড়োজাহাজে প্রিগোশিন ও তাঁর ডান হাত হিসেবে পরিচিত দিমিত্রি উতকিনসহ সাত যাত্রী এবং তিন ক্রু ছিলেন। তাঁরা সবাই নিহত হয়েছেন।

এ ঘটনায় রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনের হাত থাকতে পারে, এমন মন্তব্য করেছিলেন যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন। দুর্ঘটনার পর যুক্তরাষ্ট্রের নেভাদায় সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে তিনি এমন ইঙ্গিত দেন। তাঁর এমন বক্তব্য ছাড়া পশ্চিমা দেশগুলোয়ও প্রিগোশিনের মৃত্যু নিয়ে নানা জল্পনা–কল্পনা চলছে।

ভ্লাদিমির পুতিনের ঘনিষ্ঠজন হিসেবে পরিচিত ছিলেন ভাগনার প্রধান। রাশিয়া–ইউক্রেন যুদ্ধে রাশিয়ার হয়ে লড়ছিলেন ভাগনার যোদ্ধারা, তবে রুশ সামরিক নেতৃত্বের প্রতি অসন্তোষ ছিল প্রিগোশিনের। গত ২৩ জুন তাদের বিরুদ্ধে বিদ্রোহ করে বসেন তিনি। এরপর কখনো বেলারুশ, কখনো আফ্রিকার মরুভূমিতে অবস্থান করছেন বলে আন্তর্জাতিক গণমাধ্যমে সংবাদ প্রকাশিত হয়। এর মধ্যেই গত বুধবার নিজ দেশে উড়োজাহাজ বিধ্বস্ত হয়ে তাঁর মৃত্যুর খবর পাওয়া যায়।

প্রিগোশিনের মৃত্যুর এক দিন পর গতকাল বৃহস্পতিবার মুখ খুলেছেন পুতিন। তিনি প্রিগোশিনের পরিবারের সদস্যদের প্রতি সমবেদনা জানিয়েছেন রাশিয়ার। টেলিভিশনে সম্প্রচারিত এক ভাষণে পুতিন বলেন, ‘আমি নিহত ব্যক্তিদের পরিবারের সদস্যদের প্রতি আন্তরিক সমবেদনা জানাতে চাই। এটা একটা ট্র্যাজেডি।’