ইসরায়েল ও ফিলিস্তিনের সংঘাতকে কেন্দ্র করে ফ্রান্সে ইহুদিবিদ্বেষী কর্মকাণ্ড বেড়ে যাওয়ার নিন্দা জানিয়ে ব্যাপক বিক্ষোভ হয়েছে। গতকাল রোববার ফ্রান্সের পার্লামেন্ট সদস্যদের ডাকা ওই বিক্ষোভে এক লাখের বেশি মানুষ অংশ নেন।
ফরাসি কর্তৃপক্ষের তথ্য অনুসারে, গত ৭ অক্টোবর ইসরায়েল-ফিলিস্তিন সংঘাত শুরু হওয়ার পর থেকে ফ্রান্সে ইহুদিবিদ্বেষী ঘটনা ২০২২ সালের পুরো বছরের তুলনায় তিন গুণ বেড়েছে। এমন অবস্থায় ফ্রান্সের পার্লামেন্টের দুই কক্ষের নেতারা ইহুদিবিদ্বেষী কর্মকাণ্ডের বিরুদ্ধে এ বিক্ষোভের ডাক দেন।
ফ্রান্সের প্রধানমন্ত্রী এলিজাবেথ বর্ন, সাবেক প্রেসিডেন্ট ফ্রাঁসোয়া ওলাঁদ ও নিকোলা সারকোজির মতো রাজনীতিবিদেরা বিক্ষোভে নেতৃত্ব দিয়েছেন। তাঁদের সামনে থাকা ব্যানারে লেখা ছিল, ‘প্রজাতন্ত্রের জন্য, ইহুদিবাদের বিরুদ্ধে’। বিক্ষোভ সমাবেশে ফ্রান্সের জাতীয় সংগীতও গাওয়া হয়।
পুলিশের হিসাব অনুসারে, গতকালের বিক্ষোভে এক লাখের বেশি মানুষ অংশ নিয়েছিলেন।
বিক্ষোভে ফ্রান্সের প্রেসিডেন্ট এমানুয়েল মাখোঁর উপস্থিত না থাকার সিদ্ধান্ত নিয়ে রাজনীতিবিদদের কেউ কেউ সমালোচনা করেছেন। মাখোঁ বিক্ষোভে উপস্থিত না থাকলেও এক খোলাচিঠিতে তিনি বিক্ষোভের প্রতি সমর্থন জানিয়েছেন।
ইহুদিবিদ্বেষী কর্মকাণ্ড ‘লাগামছাড়া ও অসহনীয় মাত্রায় বেড়ে গেছে’ উল্লেখ করে মাখোঁ এর নিন্দা জানান।
গতকাল ইহুদিবিদ্বেষ বিরোধী ওই বিক্ষোভে কোন কোন দল অংশ নেবে, তা নিয়ে দ্বন্দ্ব দেখা দেয়। কট্টর ডানপন্থী দল ন্যাশনাল র্যালি বিক্ষোভে অংশ নেওয়ার সিদ্ধান্ত নিলে বামপন্থী দল ফ্রান্স আনবৌড বিক্ষোভে অংশ না নেওয়ার সিদ্ধান্ত নেয়। তবে অন্য বামপন্থী দলগুলো উপস্থিত ছিল।
সাম্প্রতিক সপ্তাহগুলোতে ফ্রান্সের পার্লামেন্টের বামপন্থী সদস্যদের ফিলিস্তিনের সমর্থনে বিক্ষোভ করতে দেখা গেছে। শনিবারও তাঁরা প্যারিসে বিক্ষোভ করেছেন।
সম্প্রতি ফরাসি প্রেসিডেন্ট এমানুয়েল মাখোঁ গাজায় যুদ্ধবিরতির আহ্বান জানান। এক সাক্ষাৎকারে তিনি গাজায় ইসরায়েলি বোমা হামলারও সমালোচনা করেছেন। ফ্রান্সের বামপন্থী রাজনীতিবিদেরা মাখোঁর এমন অবস্থানকে স্বাগত জানিয়েছেন।
গতকাল ফ্রান্সের অন্য শহরগুলোতেও ইহুদিবিদ্বেষী কর্মকাণ্ডের বিরুদ্ধে বিক্ষোভ হয়েছে।
ইউরোপের অন্য দেশগুলোতেও ইহুদিবিদ্বেষী কর্মকাণ্ড ও অন্যান্য চরমপন্থা নিয়ে উদ্বেগ বাড়ছে।
শনিবার যুক্তরাজ্যে ফিলিস্তিনিদের সমর্থনে বড় এক বিক্ষোভের আয়োজন করা হয়। ফিলিস্তিনপন্থী বিক্ষোভকারীদের মোকাবিলায় কট্টর ডানপন্থীরা পাল্টা বিক্ষোভ করেন। পাল্টা বিক্ষোভকারীদের সঙ্গে পুলিশের সংঘর্ষ হয়।