বন্দুকধারীর হামলায় স্লোভাকিয়ার প্রধানমন্ত্রী রবার্ট ফিকো গুলিবিদ্ধ হয়েছেন। গতকাল বুধবার দেশটির হ্যান্ডলোভা শহরে একটি সরকারি বৈঠক থেকে বেরিয়ে হামলার শিকার হন তিনি। দেশটির কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, প্রধানমন্ত্রী হত্যাচেষ্টার শিকার হয়েছেন। তাঁকে একাধিকবার গুলি করা হয়েছে। তাঁর অবস্থা গুরুতর। গতকাল রাত ১২টায় এই প্রতিবেদন লেখা পর্যন্ত হাসপাতালে তাঁর চিকিৎসা চলছিল।
ঘটনাস্থল থেকে সন্দেহভাজন বন্দুকধারীকে পুলিশ আটক করেছে বলে স্লোভাকিয়ার বিদায়ী প্রেসিডেন্ট জুজানা কাপুতোভা জানিয়েছেন। তিনি সাংবাদিকদের বলেছেন, ‘এই ভয়াবহ ও জঘন্য হামলায় আমি ও আমরা সবাই মর্মাহত।’
এ ঘটনার ভিডিও ফুটেজে দেখা গেছে, নিরাপত্তা বাহিনীর সদস্যরা গুলিবিদ্ধ ফিকোকে তুলে নিয়ে একটি কালো গাড়িতে ওঠাচ্ছেন। পরে গাড়িটি দ্রুতগতিতে চলে যায়। অন্যদিকে ঘটনাস্থলে একজনকে হাতকড়া পরায় পুলিশ।
গত সেপ্টেম্বরে স্লোভাকিয়ায় জাতীয় নির্বাচনে জয় পায় ফিকোর দল স্মের–এসডি। এর মধ্য দিয়ে চতুর্থবারের মতো দেশটির প্রধানমন্ত্রী হন বর্ষীয়ান এই রাজনীতিক। এ দফায় প্রধানমন্ত্রী হিসেবে তাঁর প্রথম কয়েক মাস রাজনৈতিকভাবে বেশ বিতর্কের জন্ম দেয়। জানুয়ারিতে তিনি ইউক্রেনে সামরিক সহায়তা বন্ধ করে দেন। এ ছাড়া তিনি রাশিয়ার ওপর আরোপিত নিষেধাজ্ঞার বিরোধিতা করে আসছিলেন। ভবিষ্যতে ইউক্রেনকে ন্যাটোর সদস্য পদের জন্য আমন্ত্রণ জানানো হলে তাতে বিরোধিতা করবেন বলেও ঘোষণা দিয়ে আসছিলেন তিনি। রবার্ট ফিকোর ক্রমে মস্কোপন্থী অবস্থানের সমালোচনা করে আসছিল পশ্চিমারা।
রবার্ট ফিকোকে গুলিবর্ষণের ঘটনায় সন্দেহভাজন কারও নাম প্রকাশ করেনি পুলিশ। তবে স্থানীয় সংবাদমাধ্যমের খবরে তাঁকে ৭১ বছর বয়সী একজন লেখক হিসেবে পরিচয় দেওয়া হয়েছে। সন্দেহভাজন ওই লেখকের ছেলে স্থানীয় একটি সংবাদমাধ্যমকে বলেছেন, ‘বাবা কী চিন্তা করছিলেন, তিনি কী পরিকল্পনা করেছিলেন এবং কেন এটা ঘটল, সেসব বিষয়ে সত্যিকারে আমার কোনো ধারণা নেই।’
প্রধানমন্ত্রী রবার্ট ফিকোর ওপর হামলার নিন্দা জানিয়েছেন যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন। তিনি বলেছেন, দেশটিতে মার্কিন দূতাবাস স্লোভাকিয়ার সরকারের সঙ্গে যোগাযোগ রাখছে এবং সহায়তা করার জন্য প্রস্তুত রয়েছে।
এ হামলার নিন্দা জানিয়ে রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন বলেছেন, এই বর্বরোচিত অপরাধের পক্ষে কোনো যুক্তি থাকতে পারে না। রবার্ট ফিকোকে একজন সাহসী এবং শক্ত মানুষের মানুষ হিসেবে বর্ণনা করেছেন তিনি।
জাতিসংঘের মহাসচিব আন্তোনিও গুতেরেস এবং ইউরোপীয় কাউন্সিলের প্রেসিডেন্ট চার্লস মিশেলও এ হামলার কঠোর নিন্দা জানিয়েছেন।