যুক্তরাজ্যের নতুন প্রধানমন্ত্রী লিজ ট্রাস গতকাল মঙ্গলবার দায়িত্ব গ্রহণের কয়েক ঘণ্টার মধ্যেই মন্ত্রিসভা গঠন করেন। তাঁর মন্ত্রিসভায় রয়েছে বেশ কিছু চমক। এই প্রথম দেশটির কোনো সরকারের গুরুত্বপূর্ণ চার পদে নেই কোনো শ্বেতাঙ্গ পুরুষ। খবর রয়টার্সের।
নতুন সরকারের প্রধান লিজ ট্রাস শ্বেতাঙ্গ হলেও তিনি একজন নারী। স্কটল্যান্ড ও ইংল্যান্ডে বেড়ে উঠেছেন তিনি।
ব্রিটেনের প্রথম কৃষ্ণাঙ্গ অর্থমন্ত্রী হিসেবে কোয়াসি কোয়ার্টেংকে নিয়োগ দিয়েছেন ট্রাস। তাঁর মা-বাবা ১৯৬০–এর দশকে ঘানা থেকে এই দেশে এসেছিলেন।
পররাষ্ট্রমন্ত্রীর দায়িত্ব পেয়েছেন জেমস ক্লিভারলি। তাঁর মা সিয়েরা লিওন বংশোদ্ভূত আর বাবা একজন শ্বেতাঙ্গ। মিশ্র-বর্ণের শিশু হওয়ায় তাঁকে নিগৃহীত হতে হয়েছিল বলে অতীতে অভিযোগ করেছেন তিনি। কৃষ্ণাঙ্গ ভোট পেতে তাঁর দল কনজারভেটিভ পার্টির আরও বেশি কিছু করা প্রয়োজন বলেও মন্তব্য করেন ক্লিভারলি।
স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী নিয়োগ দেওয়া হয়েছে সুয়েলা ব্রাভারম্যানকে। ছয় দশক আগে তাঁর মা-বাবা কেনিয়া ও মরিশাস থেকে ব্রিটেনে পাড়ি জমান। জাতিগত সংখ্যালঘু সম্প্রদায় থেকে দ্বিতীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী হিসেবে ভারতীয় বংশোদ্ভূত প্রীতি প্যাটেলের স্থলাভিষিক্ত হয়েছেন তিনি। সুয়েলা পুলিশ ও অভিবাসন বিভাগের দেখভালের দায়িত্বে থাকবেন।
সাম্প্রতিক বছরগুলোতে পার্লামেন্ট নির্বাচনে বিভিন্ন জাতিগোষ্ঠী থেকে প্রার্থী দেওয়ার উদ্যোগ নিয়েছে কনজারভেটিভ পার্টি। এরই ধারাবাহিকতায় মন্ত্রিসভায়ও ক্রমশ সেই বৈচিত্র্য বাড়ানো হচ্ছে।
মাত্র কয়েক দশক আগেও ব্রিটেনের সরকারগুলোর অধিকাংশ সদস্যই ছিলেন শ্বেতাঙ্গ। জাতিগত সংখ্যালঘু থেকে মন্ত্রী নিয়োগ দিতে ২০০২ সাল পর্যন্ত সময় লেগেছিল দেশটির। ওই বছর পল বোয়েটেং অর্থ মন্ত্রণালয়ের দায়িত্ব পান।
নতুন অর্থমন্ত্রী কোয়ার্টেংয়ের পূর্বসূরি ছিলেন ঋষি সুনাক। তাঁর মা-বাবা ভারতীয় বংশোদ্ভূত। তিনি কনজারভেটিভ পার্টির নেতৃত্ব ও প্রধানমন্ত্রিত্বের দৌড়ে চূড়ান্ত ধাপে এসে ট্রাসের কাছে হেরে যান।
নির্দলীয় চিন্তক প্রতিষ্ঠান ‘ব্রিটিশ ফিউচারের’ পরিচালক সুন্দর কাটওয়ালা বলেন, ‘রাজনীতিই এই গতি ঠিক করে দেয়। আমরা এখন এই বৈচিত্র্যকে স্বাভাবিক হিসেবে দেখছি। পরিবর্তনের এই গতি অসাধারণ।’
অবশ্য এখনো বাণিজ্য, বিচার বিভাগ, সিভিল সার্ভিস ও সামরিক বাহিনীর শীর্ষস্থানীয় পদগুলোতে শ্বেতাঙ্গদেরই প্রাধান্য রয়েছে।
বৈচিত্র্যের বিষয়টি সামনে এনে প্রচারণা চালালেও কনজারভেটিভ পার্টির আইনপ্রণেতাদের (এমপি) মাত্র এক-চতুর্থাংশ নারী আর জাতিগত সংখ্যালঘু সদস্য মাত্র ৬ শতাংশ।