ইলদার দাদিন, রাশিয়ার একজন সুপরিচিত সরকারবিরোধী কর্মী। ইউক্রেনে রাশিয়ার সেনাবাহিনী সর্বাত্মক যুদ্ধ শুরু করলে তিনি সরাসরি যুদ্ধ করতে নামেন। ইউক্রেনের পক্ষ নিয়ে রাশিয়ার বিরুদ্ধে যুদ্ধ করছিলেন তিনি। যুদ্ধক্ষেত্রে নিহত হয়েছেন ইলদার।
সিভিক কাউন্সিল নামের একটি গোষ্ঠীর হয়ে যুদ্ধ করছিলেন ইলদার। ওই গোষ্ঠীর মুখপাত্র বিবিসিকে বলেন, ইলদার নিহত হয়েছেন। তিনি একজন নায়ক হিসেবে স্মরণীয় হয়ে থাকবেন।
উত্তর–পূর্ব ইউক্রেনের খারকিভ অঞ্চলে রুশ বাহিনীর বিরুদ্ধে লড়াই করছিল ফ্রিডম অব রাশিয়া লিজিওন নামের একটি ব্যাটালিয়ন। এই যোদ্ধা দলে ছিলেন ইলদার। যুদ্ধ করতে গিয়ে রুশ বাহিনীর গোলার আঘাতে নিহত হন তিনি। যদিও এ বিষয়ে বিস্তারিত আর কোনো তথ্য পাওয়া যায়নি।
রাশিয়ার সরকারবিরোধী রাজনীতিক ইলিয়া পোনামারেভ এখন নির্বাসিত জীবন কাটাচ্ছেন। একসময় তিনিও ফ্রিডম অব রাশিয়া লিজিওনের সঙ্গে সম্পৃক্ত ছিলেন। তিনি বিবিসিকে বলেন, তিনি নিশ্চিত, ইলদার নিহত হয়েছেন।
আরেকটি সূত্র জানিয়েছে, যুদ্ধক্ষেত্রে ইলদারের সঙ্গে থাকা যোদ্ধাদের সূত্রে এ তথ্যের সত্যতা নিশ্চিত হওয়া গেছে। ওই সূত্রটি জানায়, তিনি ইলদারের ফোনে একটি খুদে বার্তা পাঠিয়েছেন। সেটা এখনো ‘অপঠিত’ অবস্থায় আছে।
প্রায় এক দশক আগে রুশ সরকারের চরম দমন–পীড়নের মুখেও সরকারবিরোধী শান্তিপূর্ণ আন্দোলনে অবিচল থাকার কারণে রাশিয়ায় ক্রমেই পরিচিত হয়ে ওঠেন ইলদার।
২০১৪ সালে সরকারবিরোধী বিক্ষোভ কঠোর হাতে দমনের লক্ষ্যে করা নতুন একটি আইনের (আর্টিকেল ২১২.১) আলোকে প্রথম ব্যক্তি হিসেবে বিচারের মুখোমুখি হন ইলদার। এটা ‘দাদিন আইন’ নামেও পরিচিত হয়ে ওঠে। এতে বিক্ষোভের নামে বিধিনিষেধমূলক নিয়মের বারবার লঙ্ঘনকে ফৌজদারি অপরাধ হিসেবে চিহ্নিত করা হয়।
ইলদারের ক্ষেত্রে এ ‘অপরাধ’ ছিল মস্কোর রাজপথে ব্যানার নিয়ে দাঁড়ানো। আড়াই বছরের কারাদণ্ড হয় ইলদারের। বন্দিজীবনে অনশন করেন তিনি। সেই সিদ্ধান্ত থেকে হটাতে কারারক্ষীরা ইলদারকে নির্যাতন করেন বলে অভিযোগ রয়েছে। ২০১৭ সালে কারামুক্ত হন ইলদার।