আর্থার কোনান ডয়েলের দ্য রিফিউজিস
আর্থার কোনান ডয়েলের দ্য রিফিউজিস

৮৪ বছর পর ফেরত এল বই

একটা ভালো বইয়ের মধ্যে হারিয়ে যাওয়ার মতো কিছু হয় না। কিন্তু ফিনল্যান্ডের এক পাঠক কথাটিকে মনে হয় চরম পর্যায়ে নিয়ে গেছেন। দেশটির রাজধানী হেলসিংকির একটি গণগ্রন্থাগারের কর্মীরা গত সোমবার অত্যন্ত আশ্চর্য বনে যান। কারণ, তাঁদের গ্রন্থাগার থেকে আট দশক আগে পড়ার জন্য ধার করা একটি বই ফেরত দিয়েছেন এক পাঠক। বইটি হলো আর্থার কোনান ডয়েলের দ্য রিফিউজিস। উপন্যাসটি মূলত ইংরেজি ভাষায় ফিনিশ ভাষার অনুবাদ। বইটি ১৯৩৯ সালের ২৬ ডিসেম্বর পড়ার জন্য নিয়েছিলেন ওই পাঠক।

বই ফেরত দেওয়ার সময় তাঁর সঙ্গে লাইব্রেরি কার্ডটিও রয়েছে। গ্রন্থাগারের কর্মীরা মনে করছেন, ওই পাঠক ছিলেন ফিনল্যান্ডের রাজধানী এলাকার কোনো ব্যবসায়ী। লাইব্রেরিয়ান হেইনি স্ট্র্যান্ড বলেন, যিনি বইটি ফেরত দিতে এসেছিলেন, তাঁর সঙ্গে বইটি যিনি ধার নিয়েছিলেন, তাঁর সম্পর্কের কথা জানাননি।

স্ট্র্যান্ড বলেন, ‘১০ বছর বা তার আশপাশের বেশি সময় আগের বই আমরা প্রায় ফেরত পেয়ে থাকি। কেউ মারা গেলে তাঁর আত্মীয়স্বজন এসব বই ফেরত দেন। তবে এই বইয়ের ক্ষেত্রে এ ঘটনা ঘটেছে কি না, তা জানা যায়নি।’

বইটি যখন পড়ার জন্য ধার নেওয়া হয়েছিল, তখন সোভিয়েত ইউনিয়ন ফিনল্যান্ডে আক্রমণ করেছিল। সময় ছিল ৩০ নভেম্বর ১৯৩৯ সাল; অর্থাৎ যুদ্ধ শুরুর মাত্র চার দিন আগে এটি নেওয়া হয়েছিল। তাই সম্ভবত সঠিক সময়ে তিনি বইটি ফেরত দিতে পারেননি।

বইটি এখনো ভালো অবস্থায় রয়েছে। লাইব্রেরিয়ান বলেন, তাঁদের কাছে বইটির আরও দুটি কপি আছে। ফেরত পাওয়া বইটিকে তাঁদের মূল লাইব্রেরির সংরক্ষণাগারে পাঠানো হয়েছে। এটি সংগ্রহশালায় রাখা হবে কি না, তার সিদ্ধান্ত কর্মকর্তারা নেবেন। পরে সেটি সংরক্ষণ করা হলে তখন অনলাইন পদ্ধতিতে বইটি পড়ার সুযোগ পাবেন পাঠক।

বই দেরিতে ফেরত দিলে সাড়ে ছয় মার্কিন ডলার জরিমানা দেওয়ার বিধান রয়েছে। কিন্তু যখন ওই বই নেওয়া হয়েছিল, তারপর অনেক পরিবর্তন এসেছে। তাই বইটি তাঁদের সিস্টেমে আর নেই। তাই এ ক্ষেত্রে জরিমানা প্রযোজ্য হয়নি।

লাইব্রেরির কর্মকর্তা সিনা তিরুনায়েমি বলেন, ‘আমাদের উদ্দেশ্য শুধু বই পাহারা দেওয়া নয়, আমরা এখানে বই পড়ায় উৎসাহ দেওয়ার জন্য ও সবার জন্য বই ও জ্ঞান নেওয়ার সুযোগ করে দেওয়ার জন্য রয়েছি। লাইব্রেরি একটি খুব মানবিক জায়গা। ফিনল্যান্ডের লোকজন লাইব্রেরি অনেক বেশি ব্যবহার করেন এবং তাঁরা কীভাবে কাজ করেন, তা বোঝেন। লাইব্রেরির বই আমাদের সবার জন্য এবং তা দেরিতে ফেরত পাওয়া বড় কোনো সমস্যা নয়।’