নেদারল্যান্ডসে অনুষ্ঠিত সাধারণ নির্বাচনে কট্টর ডানপন্থী ও ইসলামবিরোধী গির্ট উইল্ডারসের নেতৃত্বাধীন ফ্রিডম পার্টি (পিভিভি) বড় জয় পেতে যাচ্ছে। গতকাল বুধবার নির্বাচনের প্রাথমিক ফলাফলে এমন আভাস পাওয়া গেছে। বুথফেরত জরিপের একই আভাস পাওয়া গিয়েছিল।
প্রাথমিক ফলাফল ও বুথফেরত জরিপ অনুযায়ী, উইল্ডারসের পিভিভি ৩৫টি আসন পেতে যাচ্ছে। ২৫টি আসন পেয়ে পিছিয়ে আছে বামপন্থী জোট। আর মধ্যম ডানপন্থী দল পেয়েছে ২৪টি আসন।
ফলে উইল্ডারসের দলই নেদারল্যান্ডসে সরকার গঠন করতে যাচ্ছে। বিশ্লেষকেরা বলছেন, বিষয়টি ইউরোপীয় ইউনিয়নের (ইইউ) জন্য আতঙ্কের। কেননা, ইইউ থেকে নেদারল্যান্ডসের সদস্যপদ প্রত্যাহারের প্রশ্নে গণভোট আয়োজনের প্রতিশ্রুতি দিয়েছে পিভিভি। নেদারল্যান্ডস ইইউর পঞ্চম বৃহত্তম দেশ।
নির্বাচনে জয় পেলেও একটি স্থিতিশীল সরকার গঠনের জন্য পিভিভির নেতা উইল্ডারসকে একটি জোট গড়ে তুলতে হবে। তবে তিনি কীভাবে এ সমর্থন পাবেন, তা নিশ্চিত নয়।
উল্লসিত সমর্থকদের উদ্দেশে উইল্ডারস বলেন, ‘আমি দলগুলোর সঙ্গে কথা বলেছি। এখন আমাদের একে অপরের সঙ্গে সমঝোতার পথ খুঁজতে হবে। পিভিভিকে এখন আর উপেক্ষা করা যাবে না।’
নেদারল্যান্ডসের অন্য তিন শীর্ষ দলের নেতারা এর আগে পিভিভির নেতৃত্বাধীন জোটে যোগ দিতে অস্বীকৃতি জানিয়েছেন।
বুথফেরত জরিপ অনুযায়ী, নির্বাচনে পিটার ওমজিগতের নিউ সোশ্যাল কন্ট্রাক্ট দল ২০টি আসন পাচ্ছে। পিটার তাঁর অবস্থান কিছুটা নরম করেছেন বলে মনে হচ্ছে। তিনি বলেছেন, জোটের ব্যাপারে আলোচনায় অংশ নিতে তিনি রাজি আছেন। তবে পিটার মনে করেন, জোটসংক্রান্ত আলোচনা অতটা সহজ নয়।
বামপন্থী জোটের নেতা ফ্রান্স টিমারমানস জোট সরকারে যোগ দেওয়ার সম্ভাবনা নাকচ করে দিয়েছেন। তিনি বলেন, ‘এখন আমাদের গণতন্ত্রকে রক্ষা করার সময়।’
অভিবাসন ও মুসলিমদের প্রশ্নে উইল্ডারস বরাবরই কঠোর অবস্থান দেখিয়ে আসছেন।
নেদারল্যান্ডসে বসবাসকারী মরক্কোর নাগরিকদের নিয়ে ২০১৬ সালে বৈষম্যমূলক কথা বলার জন্য দোষী সাব্যস্ত হয়েছিলেন উইল্ডারস। এর আগে পবিত্র কোরআনকে অ্যাডলফ হিটলারের ‘মাইন কাম্ফ’ বইয়ের সঙ্গে তুলনা করে সমালোচিত হয়েছিলেন তিনি।
২০১৮ সালে মহানবী হজরত মুহাম্মদ (সা.)-এর কার্টুনের প্রতিযোগিতার আয়োজন করার পরিকল্পনা করেছিলেন উইল্ডারস। পরে হত্যার হুমকিতে সে পরিকল্পনা থেকে সরে আসেন।
তবে এবার নির্বাচনী প্রচারণার সময় উইল্ডারসকে সুর নরম করতে দেখা গেছে। তখন তিনি বলেন, যাঁর যে ধর্ম, পারিবারিক ইতিহাস, লৈঙ্গিক পরিচয়ই হোক না কেন, তিনি সবার প্রধানমন্ত্রী হবেন। তিনি মনে করেন, জীবনযাপনের উচ্চ ব্যয় মোকাবিলার বিষয়টিকে অগ্রাধিকার দেওয়া প্রয়োজন।