বিশ্বের সবচেয়ে বড় বইমেলা জার্মানি ফ্রাঙ্কফুর্ট বইমেলা
বিশ্বের সবচেয়ে বড় বইমেলা জার্মানি ফ্রাঙ্কফুর্ট বইমেলা

ফ্রাঙ্কফুর্ট বইমেলা শুরু, থাকছে বাংলাদেশও

জার্মানির ফ্রাঙ্কফুর্ট বইমেলার ৭৬তম আসর বসেছে। জার্মানি এবং বিশ্বের সাহিত্য ও সংস্কৃতিকে এগিয়ে নিতে এ মেলার অপরিসীম অবদান রয়েছে। চলমান ঐতিহ্যকে সঙ্গে নিয়ে মধ্য জার্মানির অন্যতম এই ব্যস্ত বাণিজ্যিক শহর ফ্রাঙ্কফুর্ট বইমেলা উপলক্ষে সেজেছে সৃষ্টিশীল নান্দনিকতায়।

বুধবার শুরু হওয়া মেলা চলবে ২০ অক্টোবর পর্যন্ত। এবারের মেলার স্লোগান ‘ফ্রাঙ্কফুর্ট কলিং’।

গত মঙ্গলবার বিকেলে মেলার উদ্বোধন করেন জার্মানির সংস্কৃতি প্রতিমন্ত্রী ক্লডিয়া রথ। উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে রাজনীতিবিদ ও লেখকেরা গণতন্ত্রের জন্য বইয়ের মূল্যায়নের ওপর জোর দেন। অনুষ্ঠানে ইতালির সংস্কৃতিমন্ত্রী আলেসান্দ্রো গিউলির বক্তৃতার আগে দর্শকদের মধ্যে ক্ষোভের সৃষ্টি হয়।

উদ্বোধনী সংবাদ সম্মেলনে জার্মান বুক ট্রেড অ্যাসোসিয়েশনের প্রধান কারিন শ্মিট-ফ্রিডেরিচস বলেন, চলতি বছরের প্রথম তিন প্রান্তিকে বই বিক্রি আগের বছরের তুলনায় কিছুটা বেশি ছিল। বিশেষ করে অনেক তরুণ পাঠক বই পড়ার মেজাজে ফিরে আসছেন।

ফ্রাঙ্কফুর্ট বইমেলায় এ বছরও থাকছে বাংলাদেশ। ২০১৫ সাল থেকেই সংস্কৃতি মন্ত্রণালয়ের সহযোগিতায় ফ্রাঙ্কফুর্টের আন্তর্জাতিক বইমেলায় বাংলাদেশ অংশগ্রহণ করছে। এবার বইমেলায় ঢাকা থেকে এসেছেন সংস্কৃতিবিষয়ক মন্ত্রণালয়ের অধীন জাতীয় গ্রন্থকেন্দ্রের পরিচালক লেখক ও কথাসাহিত্যিক আফসানা বেগম। বইমেলা কর্তৃপক্ষের আমন্ত্রণে এসেছেন প্রথম আলোর নির্বাহী সম্পাদক বিশিষ্ট কবি ও লেখক সাজ্জাদ শরিফ।

এ বছর বইমেলার অতিথি দেশ ইতালি। দেশটি থেকে ১০০ লেখক মেলায় যোগ দিয়েছেন। তবে লেখক তালিকা নিয়ে নানা কেলেঙ্কারি ও সমালোচনা হচ্ছে। কারণ, সরকারের সমালোচনাকারী বেশ কিছু সুপরিচিত ইতালীয় লেখক তালিকায় নেই। লেখক প্রতিনিধিদলের জন্য ইতালীয় কর্তৃপক্ষ তাঁদের নির্বাচিত করেনি। বইমেলায় ইতালি সরকারের বিশেষ প্রতিনিধি মাউরো মাজ্জা অতিথি হিসেবে উপস্থিত থাকবেন।

সরকারি ভ্রমণের সমালোচনাকারী লেখকেরা আলাদাভাবে সরকারের সমালোচক ও মাফিয়াদের নিয়ে অনুসন্ধানী লেখক রবার্তো সাভিয়ানোকে আমন্ত্রণ না জানানোর বিরুদ্ধে ইতালি থেকে কয়েক ডজন লেখক একটি খোলা চিঠি লিখেছেন। সংহতি প্রকাশ করে বইমেলায় তাঁদের অংশগ্রহণ বাতিল করেছেন।

চিঠিতে লেখকেরা ইতালির কট্টরবাদী প্রধানমন্ত্রী জর্জিয়া মেলোনির বিরুদ্ধে সরকারের সমালোচনামূলক কণ্ঠস্বর বাদ দেওয়া, সাংস্কৃতিক ক্ষেত্রে ক্রমবর্ধমান হস্তক্ষেপের অভিযোগ করেছেন। লেখক আন্তোনিও স্কুরাটি একবার প্রধানমন্ত্রী মেলোনিকে মুসোলিনির উত্তরাধিকারী হিসেবে বর্ণনা করেছিলেন।

ইতালির পদার্থবিজ্ঞানী ও লেখক কার্লো রোভেলিকেও ইতালির প্রতিনিধিদল থেকে বাদ দেওয়া হলেও মঙ্গলবার তিনি উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে অতিথি বক্তা হিসেবে বক্তব্য দেন। তিনি ইতালিতে এক অনুষ্ঠানে মেলোনির প্রতিরক্ষামন্ত্রীর সমালোচনা করেছিলেন।

আয়োজকদের মতে, এবারের বইমেলায় পাঁচ দিনে ১৫টি পর্যায়ে ৬৫০টি ইভেন্ট হবে। এতে প্রায় ১ হাজার লেখক ও বক্তা উপস্থিত থাকতে পারেন।