ফ্রান্সের উচ্চগতির টিজিভি ট্রেন
ফ্রান্সের উচ্চগতির টিজিভি ট্রেন

অলিম্পিক শুরুর আগে রেলব্যবস্থায় হামলা

ফ্রান্সের রাজধানী প্যারিসে অলিম্পিক গেমসের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানের আগে গতকাল শুক্রবার ভোররাতে রেলব্যবস্থায় বড় ধরনের হামলার ঘটনা ঘটেছে। হামলায় রাজধানী ঘিরে তিন অঞ্চলের রেল নেটওয়ার্ক ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। বন্ধ হয়ে গেছে দ্রুতগতির বেশির ভাগ ট্রেন। ট্রেন চলাচল স্বাভাবিক করতে দুই সপ্তাহ লাগতে পারে বলে ধারণা রেল কর্তৃপক্ষের।

ফ্রান্সের রেল পরিচালনাকারী সংস্থা এসএনসিএফ জানিয়েছে, গতকাল ভোররাতে প্যারিসের উত্তর, দক্ষিণ–পশ্চিম ও পূর্ব পাশে রেল নেটওয়ার্কের কেব্‌ল বক্সে আগুন দেওয়া হয়। এ ছাড়া রাজধানীর দক্ষিণ–পূর্বে রেলব্যবস্থা লক্ষ্য করে হামলার চেষ্টা চালায় দুর্বৃত্তরা। তবে রেলকর্মীদের প্রতিরোধের মুখে তা ব্যর্থ হয়।

এ হামলাকে ‘নাশকতা’ বলে আখ্যা দিয়েছেন ফ্রান্সের প্রধানমন্ত্রী গ্যাব্রিয়াল আতাল। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম এক্সে তিনি লিখেছেন, ‘এ অপরাধে জড়িত ব্যক্তিদের খুঁজে বের করে শাস্তির ব্যবস্থা করার জন্য আমাদের গোয়েন্দা ও আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীকে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।’

প্যারিসের সিন নদীর বুকে গতকাল সন্ধ্যায় জমকালো এক আয়োজনের মধ্য দিয়ে অলিম্পিক গেমস উদ্বোধনের কথা ছিল। এ অনুষ্ঠানে যোগ দিতে টিকিট কেনা অনেকেই ট্রেনে করে প্যারিসে যাওয়ার প্রস্তুতি নিচ্ছিলেন। তবে হামলার কারণে ট্রেন বন্ধ হয়ে যাওয়ায় বিপত্তিতে পড়েছেন তাঁরা।

রেলসেবা না থাকায় অলিম্পিকের এই দর্শণার্থীসহ আট লাখ মানুষকে ভোগান্তিতে পড়তে হবে বলে ধারণা করা হচ্ছে। তবে এ নিয়ে তেমন উদ্বিগ্ন নন ইন্টারন্যাশনাল অলিম্পিক কমিটির প্রেসিডেন্ট টমাস বাচ। গণমাধ্যমকে তিনি বলেছেন, ফরাসি কর্তৃপক্ষ পুরো বিষয়টি সামলে নেবে বলে বিশ্বাস করেন তিনি।

১০০ বছরের মধ্যে প্যারিসে এই প্রথম অলিম্পিকের আয়োজন করা হচ্ছে। এ নিয়ে শুরু থেকেই দেশজুড়ে সতর্ক অবস্থানে ছিলেন দেশটির আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যরা। এরই মধ্যে গতকাল হামলার ঘটনা ঘটল। এর পেছনে কারা আছে, তা নিয়ে এখনো মুখ খোলেননি ফ্রান্সের কর্তকর্তারা। তবে যারাই জড়িত থাকুক না কেন, তাদের দেশটির রেলব্যবস্থা সম্পর্কে ভালো ধারণা রয়েছে বলে মনে করা হচ্ছে।

ফ্রান্সের রেলব্যবস্থা লক্ষ্য করে অগ্নিসংযোগের ইতিহাস রয়েছে দেশটির উগ্র বামপন্থীদের। গতকাল হামলার পর সন্দেহের তির যাচ্ছে রাশিয়ার দিকেও। মস্কো যে প্যারিস অলিম্পিক লক্ষ্য করে হামলার পরিকল্পনা করছে—সম্প্রতি এমন হুঁশিয়ারি দিয়েছিলেন ফ্রান্সের প্রেসিডেন্ট এমানুয়েল মাখোঁ। চলতি সপ্তাহে প্যারিস থেকে সন্দেহভাজন এক রুশ নাগরিককে গ্রেপ্তারও করেছে পুলিশ।