ইউক্রেন যুদ্ধে অংশ নিতে সেনাবাহিনীতে যোগ দেওয়ার আহ্বান জানানোর পর থেকে রাশিয়ার নাগরিকেরা দেশ ছাড়তে শুরু করেছেন। রাশিয়া ছাড়তে অনেকে জর্জিয়া সীমান্তে জড়ো হয়েছেন।
বিবিসির খবরে বলা হয়েছে, জর্জিয়া সীমান্তে সড়কে কয়েক কিলোমিটার পর্যন্ত গাড়ি জমেছে। প্রত্যক্ষদর্শীরা জানিয়েছে, সীমান্তে গাড়ির যে জটলা তা প্রায় ৫ কিলোমিটার পর্যন্ত বিস্তৃত হয়েছে। এ ছাড়া প্রত্যক্ষদর্শীদের আরেকটি দল জানিয়েছেন, জর্জিয়া সীমান্ত পাড়ি দিতে তাঁদের প্রায় সাত ঘণ্টা সময় লেগেছে। ইউক্রেন যুদ্ধ শুরুর পর থেকে জর্জিয়া সীমান্ত দিয়ে ১ লাখ ৪০ হাজার মানুষ দেশ ছেড়েছেন। তবে রুশ কর্তৃপক্ষ লোকজনের দেশ ছেড়ে পালানোর খবরকে ভিত্তিহীন বলে উড়িয়ে দিয়েছে।
জর্জিয়া সীমান্তে নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক রুশ নাগরিক বিবিসিকে বলেন, তিনি পাসপোর্ট সঙ্গে নিয়ে সীমান্তের দিকে রওনা দিয়েছেন। সঙ্গে তিনি কিছু নেননি।
ইউক্রেন যুদ্ধে নতুন করে সেনা পাঠানোর ঘোষণা বুধবার দেন রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন। এরপরই ওই ব্যক্তি দেশ ছাড়ার সিদ্ধান্ত নেন। কারণ তিনি এমন একটি দলের মধ্যে পড়েছিলেন যাদের যুদ্ধ করতে ইউক্রেনে পাঠানো হতে পারে।
রাশিয়ার এই পরিস্থিতিতে নিয়ে বার্তা সংস্থা এএফপি একটি সরেজমিন প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে। সেখানকার পরিস্থিতি নিয়ে দিমিত্রি নামে এক ব্যক্তির সঙ্গে কথা বলেছেন এএফপির সাংবাদিক। এই ব্যক্তি রাশিয়া ছেড়ে আর্মেনিয়া যাচ্ছেন। এএফপিকে জানান, স্ত্রী ও সন্তান রেখে আর্মেনিয়া যাচ্ছেন তিনি। দিমিত্রি বলেন, ‘আমি যুদ্ধে যেতে চাই না। যুক্তিহীন এই যুদ্ধে আমি প্রাণ হারাতে চাই না। এটা ভাইকে হত্যার যুদ্ধ।’
এদিকে প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনের ঘোষণার পর এ সিদ্ধান্তের বিরোধিতায় বিক্ষোভ শুরু হয় রাশিয়ায়। বিক্ষোভ থেকে এক হাজারের বেশি রুশ নাগরিককে গ্রেপ্তার করেছে রাশিয়ান পুলিশ। বিক্ষোভের সময় সবচেয়ে বেশি গ্রেপ্তার করা হয় মস্কো এবং সেন্ট পিটার্সবার্গ শহর থেকে। রাশিয়ান হিউম্যান রাইটস গ্রুপ ওভিডি-ইনফো জানিয়েছে, সব মিলিয়ে ১ হাজার ৩০০ বিক্ষোভকারীকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। এ ছাড়াও বিক্ষোভ হয়েছে সাইবেরিয়ার ইরকুতস্ক শহর ও ইয়েকাতেরিনবার্গের মতো শহরগুলোতে।