ইউরোপীয় কমিশনের প্রেসিডেন্ট উরসুলা ভন ডার লেন ও ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কি গত বছরের ফেব্রুয়ারিতে এক অনুষ্ঠানে অংশ নেন
ইউরোপীয় কমিশনের প্রেসিডেন্ট উরসুলা ভন ডার লেন ও ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কি গত বছরের ফেব্রুয়ারিতে এক অনুষ্ঠানে অংশ নেন

ইইউর সদস্য হওয়ার পথে আরও এগোল ইউক্রেন

প্রায় আড়াই বছর ধরে রাশিয়ার হামলা মোকাবিলা করে চলেছে ইউক্রেন। দেশটির সরকার যুদ্ধ-পরবর্তী ভবিষ্যৎ নির্ধারণ করতে আগে থেকেই পশ্চিমা বিশ্বের সঙ্গে সমন্বয় করে চলেছে। পশ্চিমা সামরিক জোট ন্যাটোর পাশাপাশি ইউরোপীয় ইউনিয়নের (ইইউ) পূর্ণ সদস্য হওয়ার লক্ষ্য স্থির করেছে ইউক্রেন।

ইউক্রেনের ভূখণ্ডের একটা উল্লেখযোগ্য অংশ রাশিয়ার দখলে থাকায় এখনই ন্যাটো সদস্য হওয়ার কোনো সম্ভাবনা দেখা যাচ্ছে না। তবে ইইউর সদস্য হওয়ার পথে যথেষ্ট দ্রুতগতিতে এগিয়ে চলেছে তারা। ২০২২ সালের ফেব্রুয়ারি মাসে রাশিয়ার হামলার পরেই ইউক্রেন ইইউতে যোগদানের আবেদন করেছিল।

গতকাল মঙ্গলবার ইইউ কমিশন ইউক্রেন ও মলদোভার সঙ্গে আনুষ্ঠানিকভাবে আলোচনা শুরু করেছে। সাবেক সোভিয়েত ইউনিয়নের তিন দেশ লাটভিয়া, লিথুয়ানিয়া ও এস্তোনিয়া আগেই ইইউতে যোগ দিয়েছে। এবার আরও দুটি দেশের আবেদনের ভিত্তিতে জটিল প্রক্রিয়া শুরু হচ্ছে। ২০২৩ সালের ডিসেম্বর মাসে জর্জিয়াও প্রার্থী হিসেবে স্বীকৃতি পেয়েছে।

ইউক্রেনের প্রধানমন্ত্রী ডেনিস স্মিগাল বলেন, ইউক্রেন ও ইউরোপীয় ইউনিয়নের মধ্যে সম্পর্কের নতুন এক অধ্যায় শুরু হতে চলেছে।

প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কি দিনটিকে ‘ঐতিহাসিক’ হিসেবে বর্ণনা করেন।

ইইউ কমিশনের প্রেসিডেন্ট উরসুলা ভন ডার লেন এই সিদ্ধান্তকে ইউক্রেন, মলদোভা ও ইইউর মানুষের জন্য অত্যন্ত ভালো খবর হিসেবে বর্ণনা করেন। তাঁর মতে, চ্যালেঞ্জ সত্ত্বেও সেই প্রক্রিয়া সুযোগে ভরা।

ইইউর মানদণ্ডের দিকে এগোতে ইউক্রেনকে এখনো অনেক সংস্কার করতে হবে। কঠিন সেই প্রক্রিয়ার সাফল্যের ওপর পূর্ণ সদস্যপদ নির্ভর করবে। তা ছাড়া হাঙ্গেরির মতো রাশিয়ার ঘনিষ্ঠ সরকার ইউক্রেনের সদস্যপদের বিরোধিতা করতে পারে। তবে যুদ্ধের মাঝেও ইউক্রেন বেশ কিছু ‘সাহসী’ সংস্কার শুরু করে প্রশংসা কুড়িয়েছে।

ইউক্রেনের প্রধান মধ্যস্থতাকারী হিসেবে উপপ্রধানমন্ত্রী ওলগা স্টেফানিশনা ২০৩০ সালের মধ্যে সব পূর্বশর্ত পূরণ করে ইইউর সদস্য হওয়ার অঙ্গীকার করেন। তাঁর আশা, গুরুত্বপূর্ণ সংস্কার শেষে ২০২৫ সালেই সদস্য হওয়ার পূর্বশর্ত হিসেবে ৩৫টি সুনির্দিষ্ট বিষয়ে আলোচনা শুরু হবে।

বেশ কয়েক বছর ধরে ইউরোপীয় ইউনিয়নে নতুন সদস্য গ্রহণ করার প্রক্রিয়া থাকলেও ইউক্রেনের ওপর রাশিয়ার হামলার পর বিষয়টি বাড়তি গুরুত্ব পাচ্ছে। বিশেষ করে বলকান অঞ্চলের পশ্চিমের দেশগুলোর সঙ্গে আলোচনায় অগ্রগতি হচ্ছে। ফলে সার্বিয়া, মন্টেনিগ্রো, আলবেনিয়া ও উত্তর মেসিডোনিয়াও কোনো এক সময়ে পূর্ণ সদস্য হতে পারে।