যুক্তরাজ্যের প্রিন্স অব ওয়েলস উইলিয়াম গত বছর তাঁর জীবনের সবচেয়ে কঠিন সময় পার করেছেন। দক্ষিণ আফ্রিকা সফর শেষে সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে তিনি এ কথা বলেন। স্ত্রী ও বাবার ক্যানসারের চিকিৎসা চলাকালে তিনি কীভাবে পরিস্থিতির সঙ্গে নিজেকে মানিয়ে নিয়েছিলেন—কথায় কথায় সে গল্পও উঠে আসে।
প্রিন্স উইলিয়াম বলেন, ‘এটি (২০২৩ সাল) ছিল ভয়াবহ। সম্ভবত আমার জীবনের সবচেয়ে খারাপ বছর। পরিস্থিতির সঙ্গে মানিয়ে নেওয়ার চেষ্টা করা এবং সবকিছু ঠিকঠাক রাখার কাজটি সত্যি খুব কঠিন ছিল।’
চলতি বছরের ফেব্রুয়ারিতে ব্রিটেনের রাজা চার্লসের ক্যানসার আক্রান্ত হওয়ার খবর প্রকাশ করে বাকিংহাম প্রাসাদ। সে সময় তাঁর চিকিৎসা শুরু হয়েছে বলেও জানানো হয়। এর মাত্র ছয় সপ্তাহ পরই ঘোষণা দেওয়া হয়, ক্যানসারের চিকিৎসার অংশ হিসেবে কেমোথেরাপি নিচ্ছেন উইলিয়ামের স্ত্রী প্রিন্সেস অব ওয়েলস কেট মিডলটন।
এরই মধ্যে, আনুষ্ঠানিক কাজকর্মে ফিরেছেন রাজা চার্লস। কেট মিডলটনও ক্যানসারের চিকিৎসা শেষ করেছেন। এ বিষয়ে প্রিন্স উইলিয়াম বলেন, তাঁর স্ত্রী ও বাবা কঠিন পরিস্থিতি সামাল দিয়ে ওঠায় তিনি গর্বিত। তবে পারিবারিক দৃষ্টিকোণ থেকে এ যাত্রা ছিল ‘দুঃসহ’।
আর্থশট প্রাইজ অ্যাওয়ার্ড অনুষ্ঠানে যোগ দিতে দক্ষিণ আফ্রিকায় গিয়েছিলেন প্রিন্স উইলিয়াম। পরিবেশ রক্ষায় তিনি এ পুরস্কার চালু করেন। গত বুধবার রাতে আয়োজিত অনুষ্ঠানে জলবায়ুসংক্রান্ত উদ্ভাবনের জন্য পাঁচটি প্রকল্প ১০ লাখ ডলার করে পুরস্কার পায়।
সাংবাদিকেরা উইলিয়ামের কাছে প্রিন্স অব ওয়েলস পদের ভূমিকা সম্পর্কে জানতে চান। তাঁরা প্রশ্ন করেন, এ পদের সঙ্গে যে স্বাধীনতা ও দায়িত্ব পেয়েছেন তার মধ্যে তিনি কোনটি বেশি পছন্দ করেন। উত্তরে উইলিয়াম বলেন, ‘এটি একটি কঠিন প্রশ্ন। আমি কি দায়দায়িত্ব বেশি পছন্দ করি? না। আমি কি স্বাধীনতা পছন্দ করি? এ ক্ষেত্রে যদি আর্থশটের মতো কিছু প্রতিষ্ঠা করতে পারি, তবে উত্তর হবে, হ্যাঁ। আর এটিই আমার ভবিষ্যৎ। আমার অবস্থান ও ভূমিকার জন্য এটি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। আমি যা কিছু করছি তা ভালোর জন্যই।’
উইলিয়াম আরও বলেন, ‘আমি মানুষের বেঁচে থাকার লড়াইয়ে সাহায্য করছি। এমন কিছু করছি, যা সত্যিই অর্থবহ।’
প্রসঙ্গত, গ্রীষ্মের পর থেকে দাড়ি রাখা শুরু করেছেন উইলিয়াম। এ নিয়ে অবশ্য তাঁর কন্যা প্রিন্সেস শার্লটসহ ঘনিষ্ঠজনদের মধ্যে মিশ্র প্রতিক্রিয়া দেখা দিয়েছে।
উইলিয়াম বলেন, ‘শার্লট প্রথমে দাড়ি রাখার বিষয়টি পছন্দ করেনি। এ জন্য আমাকে কান্নাকাটি শুনতে হয়েছে। পরে অবশ্য আবার দাড়ি বড় করেছি। আমি তাকে বোঝাতে সক্ষম হয়েছি যে বিষয়টি একসময় তার কাছে স্বাভাবিক হয়ে যাবে।’
প্রিন্স অব ওয়েলস বলেন, ‘আমি আমার কাজকে উপভোগ করি, নিজেকে গতিশীল রাখতে পছন্দ করি। পাশাপাশি আমার পরিবারকেও সময় দেওয়ার বিষয়টি নিশ্চিত করি।’