প্রয়াত প্রিন্সেস ডায়ানার ছোট ভাই আর্ল স্পেনসার
প্রয়াত প্রিন্সেস ডায়ানার ছোট ভাই আর্ল স্পেনসার

কেটের চেয়েও ঝুঁকিপূর্ণভাবে ডায়ানার পিছু নিত পাপারাজ্জিরা, দাবি ভাইয়ের

প্রয়াত প্রিন্সেস ডায়ানার ভাই আর্ল স্পেনসার বলেছেন, বর্তমান প্রিন্সেস অব ওয়েলস কেট মিডলটন যতটা না গণমাধ্যমের হয়রানির শিকার হচ্ছেন, তাঁর চেয়েও অনেক বেশি ঝুঁকিপূর্ণভাবে তাঁর বোনের পিছু নিত পাপারাজ্জিরা (আলোকচিত্রী)। গতকাল রোববার বিবিসির লরা কুসেনবার্গকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে তিনি এ কথা বলেন। ভাগনে উইলিয়ামের স্ত্রী মিডলটনকে নিয়ে সম্প্রতি যেসব ষড়যন্ত্র তত্ত্ব ছড়িয়েছে, তা নিয়েও উদ্বেগ জানিয়েছেন স্পেনসার।

১৯৯৭ সালে বোন ডায়ানার মৃত্যুর পরপরই গণমাধ্যমের কঠোর সমালোচনা করে আলোচনায় আসেন আর্ল স্পেনসার। বোনের শেষকৃত্যে দেওয়া বক্তব্যে তিনি অঙ্গীকার করেছিলেন, ডায়ানার মতো করে তাঁর দুই ছেলে উইলিয়াম ও হ্যারি যেন হয়রানির শিকার না হন, তা তিনি খেয়াল রাখবেন।

অবশ্য এখন সুনির্দিষ্ট করে দুই ভাগনের মানসিক চাপ এবং তাঁদের সম্পর্কের ফাটল নিয়ে স্পেনসারকে কথা বলতে দেখা যায় না। তবে সম্প্রতি ডায়ানার পুত্রবধূ কেট মিডলটনের শারীরিক অবস্থা নিয়ে অনলাইনে যেসব গুঞ্জন ছড়াচ্ছে, তা নিয়ে আর্ল স্পেনসারের বক্তব্য জানতে চেয়েছিল বিবিসি। জবাবে তিনি বলেছেন, তাঁর বোন ডায়ানার ক্ষেত্রে বিষয়টি আরও বেশি ঝুঁকিপূর্ণ ছিল।

যুক্তরাজ্যের বর্তমান রাজা তৃতীয় চার্লসের প্রথম স্ত্রী ছিলেন প্রিন্সেস অব ওয়েলস ডায়ানা। পরে চার্লস ও ডায়ানার বিচ্ছেদ হয়। ১৯৯৭ সালে ফ্রান্সের রাজধানী প্যারিসে সড়ক দুর্ঘটনায় ডায়ানার মৃত্যু হয়। আলোকচিত্রীরা প্যারিসের রাস্তায় তাঁর গাড়ির পিছু নিয়েছিলেন। তাদের থেকে বাঁচতে একটি পাতাল সুড়ঙ্গপথে ঢোকার সময় গাড়িটি দুর্ঘটনার সম্মুখীন হয়।

বোনের মৃত্যুর সময়কার কথা স্মরণ করে ছোট ভাই আর্ল স্পেনসার বলেন, ‘যদি আমি ৯৭ সাল এবং ডায়নার মৃত্যুর সময়ের দিকে ফিরে তাকাই, তাহলে বলব, ঘটনাটি অনেক মর্মান্তিক ছিল। তাঁর মৃত্যু এমন একটা মর্মান্তিক আবহে ঘটেছে যে এতে যেসব প্রতিষ্ঠান পাপারাজ্জিদের সমর্থন জুগিয়ে যেত, তারা বুঝতে পারল এ ক্ষেত্রে সতর্কতা অবলম্বন করা জরুরি। তারা কী করতে পারবে, কী করতে পারবে না, সে ব্যাপারে সতর্ক হওয়া উচিত।’

তবে স্পেনসার মনে করেন, ‘এর মানে এ নয় যে তারা নৈতিক অনুশোচনাবোধ থেকে এমন সিদ্ধান্ত নিয়েছে। বরং এর পেছনের কারণ হলো, বিষয়টি জনগণের কাছে গ্রহণযোগ্য ছিল না।’

সম্প্রতি স্পেনসারের লেখা ‘আ ভেরি প্রাইভেট স্কুল’ নামে একটি বই প্রকাশ করা হয়েছে। এতে স্পেনসার লিখেছেন, তিনি ১৯৭০-এর দশকে বোর্ডিং স্কুলে যৌন নির্যাতনের শিকার হয়েছিলেন। মেইডওয়েল হল নামের ওই বোর্ডিং স্কুলটির একজন নারী কর্মী (স্টাফ) তিনিসহ অন্য অল্প বয়সী ছেলেদের ওপর যৌন নির্যাতন চালাতেন। তা ছাড়া স্কুলটির তখনকার প্রধান শিক্ষক খুব নৃশংসভাবে মারধর করতেন।

বিবিসিকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে স্পেনসার বলেছেন, ছোটবেলায় বাড়িতে তিনি এবং তাঁর বোনদের ভয়ংকর শাস্তি পেতে হতো। যে ন্যানি তাঁকে এবং বোন ডায়ানাকে দেখাশোনা করতেন, তিনি দুষ্টুমি করলে দুই ভাই-বোনের মাথায় ঠোকাঠুকি করতেন। এতে ব্যথা লাগত। কিন্তু এ ব্যাপারে তাঁর বাবা কিছু জানতেন না।