রুশ যুদ্ধবিমানের সঙ্গে সংঘর্ষ, কৃষ্ণসাগরে ভেঙে পড়ল মার্কিন ড্রোন

রাশিয়ার এসইউ–২৭ যুদ্ধবিমান
ফাইল ছবি: রয়টার্স

রাশিয়ার একটি যুদ্ধবিমানের তৎপরতায় যুক্তরাষ্ট্রের বিমানবাহিনীর একটি ড্রোন কৃষ্ণসাগরে বিধ্বস্ত হয়েছে। এমকিউ–৯ রিপার নামের ওই ড্রোন নজরদারির কাজে ব্যবহার করা হয়। স্থানীয় সময় মঙ্গলবার এ ঘটনা ঘটে। যুক্তরাষ্ট্রের সামরিক বাহিনীর পক্ষ থেকে এ তথ্য নিশ্চিত করা হয়েছে।

গত বছরে ইউক্রেনে রাশিয়ার অভিযান শুরুর পর এই প্রথম যুক্তরাষ্ট্র ও রাশিয়ার সামরিক বাহিনীর উড়োজাহাজের মধ্যে এ ধরনের সংঘাতের ঘটনা ঘটল। যুক্তরাষ্ট্র বলছে, রুশ যুদ্ধবিমানের এই কর্মকাণ্ড ছিল ‘বেপরোয়া ও অপেশাদার’।

যুক্তরাষ্ট্রের বিমান বাহিনীর এমকিউ–৯ রিপার নামের এই ড্রোনের একটি কৃষ্ণসাগরে বিধ্বস্ত হয়েছে

যুক্তরাষ্ট্রের ইউরোপীয় কমিশনের দেওয়া তথ্য অনুযায়ী, মঙ্গলবার কৃষ্ণসাগরের ওপর দিয়ে রাশিয়ার দুটি এসইউ-২৭ যুদ্ধবিমান এবং যুক্তরাষ্ট্রের একটি রিপার ড্রোন উড়ছিল। এ সময় একটি যুদ্ধবিমান ইচ্ছাকৃতভাবে ড্রোনটির সামনে যায় এবং সেটির ওপর কয়েকবার জ্বালানি তেল ফেলে। এরপর যুদ্ধবিমানটি ড্রোনের ‘প্রোপেলারে’ আঘাত করে। এতে ক্ষতিগ্রস্ত ড্রোনটি কৃষ্ণসাগরে বিধ্বস্ত করার সিদ্ধান্ত নিতে বাধ্য হয় মার্কিন বাহিনী।

মার্কিন বিমানবাহিনীর কর্মকর্তা জেনারেল জেমস বি হেকার এক বিবৃতিতে বলেন, ‘আমাদের এমকিউ–৯ উড়োজাহাজটি আন্তর্জাতিক আকাশসীমায় নিয়মিত অভিযানে ছিল। তখন সেটিকে আঘাত করে রাশিয়ার একটি যুদ্ধবিমান। এর ফলে ড্রোনটি বিধ্বস্ত হয়। বলতে গেলে এটি রাশিয়ার একটি অনিরাপদ ও অপেশাদার পদক্ষেপ, যার ফলে দুটি উড়োজাহাজ প্রায় বিধ্বস্ত হতে যাচ্ছিল।’  

রাশিয়া–ইউক্রেন যুদ্ধ শুরু হওয়ার আগে থেকেই নজরদারির কাজে কৃষ্ণসাগরের আকাশসীমায় রিপার ড্রোন দিয়ে অভিযান চালিয়ে আসছে যুক্তরাষ্ট্র। এই ড্রোন ৫০ হাজার ফুট পর্যন্ত উচ্চতায় উড়তে পারে। মঙ্গলবারের ঘটনাটি যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনকে জানিয়েছেন দেশটির জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা জেক সুলিভান।

যুক্তরাষ্ট্রের সামরিক বাহিনী রুশ জঙ্গি বিমানকে দোষারোপ করলেও রাশিয়ার প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয় বলেছে ভিন্ন কথা। তাদের এক বিবৃতিতে বলা হয়েছে, রাশিয়ার বিমান কোনো অস্ত্র ব্যবহার করেনি বা ড্রোনটির সংস্পর্শে আসেনি।

মস্কো বলেছে, রাশিয়ার অ্যারোস্পেস ফোর্সেসের নিয়ন্ত্রণকক্ষ ক্রিমিয়া উপদ্বীপের কাছে কৃষ্ণসাগরের ওপর একটি মার্কিন এমকিউ–৯ মানববিহীন ড্রোন শনাক্ত করে। সেটি রুশ ফেডারেশনের সীমান্ত বরাবর এগোচ্ছিল। ইউক্রেনে সামরিক অভিযানের জন্য যে অস্থায়ী আকাশপথ তৈরি করা হয়েছে, তা সেটি লঙ্ঘন করছিল। তখন অনুপ্রবেশকারী ড্রোনটিকে চিহ্নিত করার জন্য জঙ্গি বিমান পাঠানো হয়। কিন্তু দ্রুত বাঁক বদল করতে গিয়ে এমকিউ–৯ ড্রোনটি নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে ফেলে এবং সাগরে গিয়ে পড়ে।