জার্মানি যুক্তরাষ্ট্রের ‘অধিকৃত’ একটি দেশ বলে মন্তব্য করেছেন রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন। রুশ প্রেসিডেন্টের মতে, জার্মানি এখনো যুক্তরাষ্ট্রের দখলে আছে। শুধু জার্মানি নয়, ইউরোপের অন্য দেশগুলোও ‘স্বাধীন ও সার্বভৌম’ নয়। রাষ্ট্রীয় টিভি চ্যানেল রসিয়া-১-এ প্রচারিত এক সাক্ষাত্কারে এ মন্তব্য করেন তিনি।
রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন শুধু ইউক্রেনে হামলার জন্যই নয়, ছয় মাস আগে বাল্টিক সাগরের পাইপলাইনে ‘নাশকতার’ জন্যও পশ্চিমাদের দায়ী করেছেন।
রসিয়া-১ ক্রেমলিনের অন্যতম ‘প্রোপাগান্ডা মিডিয়া’ হিসেবে পরিচিত। জার্মানরা যুক্তরাষ্ট্র দ্বারা নিয়ন্ত্রিত, এমন মন্তব্য পরোক্ষভাবে গত বছর রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধের শুরু থেকেই বলে আসছেন ক্রেমলিনের বর্তমান শাসকেরা। তবে এবার জার্মানিকে নিয়ে প্রকাশ্যে ও সরাসরি এই মন্তব্য করলেন ক্রেমলিনের প্রধান ভ্লাদিমির পুতিন।
দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধে মিত্রবাহিনীর হাতে জার্মানির পরাজয়ের পর থেকেই চার মিত্রশক্তি—সাবেক সোভিয়েত ইউনিয়ন, যুক্তরাষ্ট্র, ইংল্যান্ড ও ফ্রান্সের সেনারা জার্মানিতে অবস্থান করছেন। ১৯৯০ সালে দুই জার্মানি এক হওয়ার পর মিত্রশক্তির তিন সদস্যদেশের সেনারা জার্মানি ত্যাগ করলেও যুক্তরাষ্ট্রের সৈন্যরা জার্মানিতে রয়ে যান।
জার্মানির রামস্টাইন শহরে মার্কিন সেনাবাহিনীর প্রধান ঘাঁটি। সেখানে যুক্তরাষ্ট্রের পৃথক বিমানঘাঁটিও আছে। অবশ্য দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের পর গঠিত সামরিক জোট ন্যাটোর কারণেই জার্মানিতে মার্কিন সেনাদলের অবস্থান বলে বলা হয়ে থাকে। বর্তমানে জার্মানিতে ৩৫ হাজার মার্কিন সেনা রয়েছেন। পুতিন সম্প্রতি করা একটি মন্তব্যে বলেন, সাবেক সোভিয়েত ইউনিয়ন জার্মানি থেকে শেষ পর্যন্ত তাদের সেনাদের প্রত্যাহার করে নিলেও মার্কিনিরা তাদের জার্মানি দখল অব্যাহত রেখেছে।
রুশ সংবাদমাধ্যমগুলো গত সেপ্টেম্বরে বাল্টিক সাগরের তলদেশে থাকা রাশিয়ার চারটি ‘নর্ড স্ট্রিম’ গ্যাস পাইপলাইনের তিনটিতে বিস্ফোরণের জন্য ইউক্রেনপন্থী গোষ্ঠীর জড়িত থাকার বিষয়ে অনুমান করা হচ্ছে বলে জানায়। ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কি ইউক্রেনের জড়িত থাকার বিষয়কে ‘হাস্যকর’ বলেন।
রাশিয়ার গ্যাস পাইপলাইনে বিস্ফোরণের ঘটনায় জার্মানি, সুইডেন ও ডেনমার্ক ইতিমধ্যে তদন্ত শুরু করেছে। কয়েক দিন আগে জার্মানি, যুক্তরাষ্ট্র ও যুক্তরাজ্যের সংবাদমাধ্যমগুলো পাইপলাইনে বিস্ফোরণের ঘটনায় কিছু তথ্য প্রকাশ করেছে। এসব তথ্যে জাল পাসপোর্টসহ ছয়জনের একটি দল একটি ‘ইয়ট’ ভাড়া করে ৮০ মিটার গভীর পানির মধ্যে বিস্ফোরক ‘ডিভাইসগুলো’ রেখেছিল বলে জানা গেছে। তবে জাল পাসপোর্টধারী ছয়জনের পরিচয়ের কথা এখনো তদন্তে জানা যায়নি।