ইউক্রেনের সবচেয়ে বড় শিশু হাসপাতালে ক্ষেপণাস্ত্র হামলা, চিকিৎসক নিহত

ইউক্রেনের ওমাৎজিৎ শিশু হাসপাতালে হামলার পর উদ্ধার তৎপরতা
ছবি: রয়টার্স

ইউক্রেনের রাজধানী কিয়েভের সবচেয়ে বড় শিশু হাসপাতালে ক্ষেপণাস্ত্র হামলা হয়েছে। এতে এক চিকিৎসকসহ প্রাপ্ত বয়স্ক দুজন নিহত হয়েছেন। স্থানীয় সময় সোমবার সকালে এ ঘটনা ঘটে।

এ ঘটনার জন্য রাশিয়াকে দায়ী করেছে ইউক্রেন। তবে এ অভিযোগ অস্বীকার করে মস্কো দাবি করেছে, ইউক্রেনের আকাশ প্রতিরক্ষা ব্যবস্থার ক্ষেপণাস্ত্রের টুকরা অংশ নিজেদের ওই হাসপাতালে আঘাত হেনেছে।

হামলার ঘটনার পর ওমাৎজিৎ হাসপাতালের বাইরে নিয়ে আসা শিশুদের কয়েকজন

ওমাৎজিৎ নামের ওই হাসপাতালের চিকিৎসক লেসিয়া লিসাৎজিয়া বলেন, হঠাৎ যেন চলচ্চিত্রের কোনো দৃশ্যের ঘটনা ঘটে গেল— তীব্র আলো এবং পরপরই ভয়ংকর একটি শব্দ। তিনি জানান, হামলায় হাসপাতালের একটি অংশ পুরোপুরি ধ্বংস হয়ে গেছে, অপর একটি অংশে আগুন ধরে যায়। তাঁর মতে, হাসপাতালটির ৬০ থেকে ৭০ শতাংশ কাঠামো ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।

ঘটনার পর ছড়িয়ে ছবিতে দেখা গেছে, ওই হামলার পর ঘটনাস্থল থেকে চিকিৎসাধীন শিশুদের অন্যত্র সরানো হচ্ছে। এসব শিশুর মধ্যে কয়েক জনের হাতে স্যালাইনের পাইপও লাগানো রয়েছে।

শুধু এই হাসপাতাল নয় সোমবার ইউক্রেনের বিভিন্ন স্থানে ক্ষেপণাস্ত্র হামলার ঘটনা ঘটেছে। প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কির চিফ অব স্ট্যাফ আন্দ্রি ইয়ারমাক বলেন, এদিন এসব হামলায় ৩৬ জন নিহত ও ১৪০ জন আহত হয়েছেন।

কিয়েভের মেয়র ভিতালি ক্লিৎসকো বলেন, হাসপাতালের হামলার ঘটনায় একজন চিকিৎসকসহ দুজন প্রাপ্ত বয়স্ক ব্যক্তি নিহত হয়েছেন। তবে উদ্ধারকারীরা শঙ্কা করছেন, ধ্বংস স্তূপের নিচে আরও অনেক মানুষ চাপা পড়ে থাকতে পারেন।

কালো ফিতা পরে উইম্বলডনের রাউন্ড ১৬ এর মাঠে টেনিস তারকা এলিনা সভিতোলিনা

ওমাৎজিৎ ইউক্রেনের বড় হাসপাতালগুলোর মধ্যে একটি। এখানে শিশুদের ক্যানসার চিকিৎসার পাশাপাশি অঙ্গ প্রতিস্থাপনের কাজও করা হয়ে থাকে।

হাসপাতালটির যে অংশে ক্ষেপণাস্ত্র আঘাত করেছিল সে অংশে প্রায় ২০টি শিশু চিকিৎসাধীন ছিলেন বলেন হাসপাতালের কর্মকর্তারা জানিয়েছেন।

এই হামলার প্রতিবাদে ও হতাহত ব্যক্তিদের প্রতি শ্রদ্ধা জানিয়েছেন ইউক্রেনীয় টেনিস খেলোয়াড় এলিনা সভিতোলিনা। এদিন বিকেলে তিনি উইম্বলডনের রাউন্ড-১৬ খেলার সময় কালো ফিতা (ব্ল্যাক রিবন) পরেছিলেন।

কিয়েভের মেয়র অভিযোগ করে বলেন, রাশিয়া ইউক্রেনের নাগরিকদের ওপর গণহত্যা চালানোর উদ্যোগ নিয়েছে। বিশ্ববাসী দেখুক তারা কীভাবে ক্ষেপণাস্ত্র ও কামিকাজে ড্রোন দিয়ে ইউক্রেনের শান্তিপূর্ণ শহরটির (কিয়েভ) নাগরিকদের হত্যা করেছে। তিনি জানান, কিয়েভের নিপ্রস্কি জেলায় পৃথক হামলায় একটি প্রসূতি-সেবা হাসপাতালের অংশ ধ্বংস প্রাপ্ত হয়েছে। এতে সাতজন নিহত হয়েছেন।

প্রেসিডেন্ট জেলেনস্কি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে লেখেন কিয়েভ, নিপ্র, ক্রিভি রিহ, স্লোভিয়ানস্ক ও ক্রামাত্রর্স্কসহ বিভিন্ন শহরে ৪০টির বেশি নানা ধরনের ক্ষেপণাস্ত্র হামলার ঘটনা ঘটেছে। এ বিষয়ে তিনি পশ্চিমা-মিত্র দেশগুলোকে আরও শক্তিশালী পদক্ষেপ নেওয়ার আহ্বান জানিয়েছেন।