উত্তেজনাপূর্ণ একটি দিনের পর রুশ সরকার ও ভাড়াটে সেনা সরবরাহকারী প্রতিষ্ঠান ভাগনারের মধ্যে সমঝোতা হয়েছে। ক্রেমলিন প্রশাসন ইতিমধ্যে বলে দিয়েছে, ভাগনার যোদ্ধারা ঘাঁটিতে ফিরে যেতে পারবেন। তাঁদের বিচারের মুখোমুখি করা হবে না। তবে আসলেই কি ভাগনার আগের অবস্থানে ফিরতে পারবে? বিবিসির পূর্বাঞ্চলীয় ইউরোপের প্রতিনিধি মনে করেন, এমন কিছু হওয়ার সম্ভাবনা কম।
গতকাল শনিবার ভাগনারপ্রধান ইয়েভগেনি প্রিগোশিন রুশ সামরিক নেতৃত্বের বিরুদ্ধে বিদ্রোহ ঘোষণা করেন। তাঁর বাহিনী নিয়ে ইউক্রেন সীমান্ত থেকে রাশিয়ার রাজধানী মস্কো অভিমুখে যাত্রা শুরু করেন। রাশিয়ার কয়েকটি শহর ও সামরিক স্থাপনার দখলও নেন। পরে বেলারুশের মধ্যস্থতায় সেই অভিযান বন্ধে রাজি হন তিনি।
ইতিমধ্যে ক্রেমলিন বলেছে, বিদ্রোহে শামিল হওয়া সব ভাগনার সেনার বিরুদ্ধে আনা ফৌজদারি অভিযোগগুলো তুলে নেওয়া হচ্ছে। ভাগনারের যেসব সদস্য এ বিদ্রোহের সঙ্গে জড়িত ছিলেন না, তাঁরা আবার যুদ্ধক্ষেত্রে ফিরে যেতে পারবেন।
তবে বিবিসির পূর্বাঞ্চলীয় ইউরোপের প্রতিনিধি সারাহ রেইন্সফোর্ড মনে করেন, বিদ্রোহে জড়িত ভাগনার সেনাদের বিরুদ্ধে ফৌজদারি অভিযোগ তুলে নেওয়ার আশ্বাসটি বিশ্বাস করা কঠিন। কারণ, পুতিন বিশ্বাসঘাতকতা পছন্দ করেন না। তিনি একে ভীষণ ঘৃণা করেন।
তা ছাড়া ভাগনার গ্রুপকে প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়ের সঙ্গে একীভূত করে ফেলার উদ্যোগ নেওয়া হয়েছিল। আর তা বাস্তবায়িত হলে প্রতিষ্ঠানটি আর স্বাধীনভাবে কার্যক্রম চালাতে পারবে না। তাদের জন্য অর্থায়নও বন্ধ হয়ে যাবে।
এমনিতেই রুশ প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়ের সঙ্গে দীর্ঘদিন ধরে ভাগনারপ্রধান ইয়েভগেনি প্রিগোশিনের দ্বন্দ্ব চলছিল। তিনি চাননি তাঁর বাহিনীর যোদ্ধাদের প্রতিরক্ষা বাহিনীর সঙ্গে একীভূত করা হোক। বিবিসির পূর্বাঞ্চলীয় ইউরোপের প্রতিনিধি সারাহ রেইন্সফোর্ড মনে করেন, এ নিয়ে ক্ষুব্ধ হয়েই প্রিগোশিন এমন বিদ্রোহী কর্মকাণ্ড করেছেন।
ভাগনারের যোদ্ধারা এখন চুক্তি স্বাক্ষরের মধ্য দিয়ে প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়ের সঙ্গে যুক্ত হবেন কি না, তা এখনো বোঝা যাচ্ছে না।
রেইন্সফোর্ড মনে করেন, পুতিনের কাজও এখনো শেষ হয়নি। আপাতত সংকট মোকাবিলা করা গেলেও পুরোপুরিভাবে এর থেকে নিস্তার মিলেছে, তা বলা যাচ্ছে না।