ইউক্রেনের পার্শ্ববর্তী রাশিয়ার দুটি অঞ্চলে ও ক্রিমিয়ায় ব্যাপক হামলার ঘটনা ঘটেছে। কিয়েভে ব্যাপক বোমাবর্ষণ এবং রাশিয়া ও ইউক্রেন উভয় পক্ষের মধ্যে একের পর এক বিমান হামলার এক দিন পরই আজ বুধবার নতুন করে এ হামলার ঘটনা ঘটে। এদিকে জাতিসংঘের মানবাধিকার বিষয়ক প্রধান সংঘাত কমিয়ে আনার আহ্বান জানিয়েছেন।
রাশিয়ার বেলগোরোদ অঞ্চলের গভর্নর ব্যাচেস্লাভ গ্ল্যাডকভ বলেন, বেলগোরোদের পরিস্থিতি এখন উদ্বেগজনক। আজ (বুধবার) সকালে এখানে দুইবার হামলা হয়েছে। এর আগের দিন হামলায় এখানে একজন নিহত ও ১১ জন আহত হয়েছেন।
রাশিয়ার আকাশ প্রতিরক্ষা কর্তৃপক্ষ বলছে, বেলগোরোদ অঞ্চলে তারা ছয়টি ক্ষেপণাস্ত্র ভূপাতিত করেছে।
বেলগোরোদের উত্তরে কোরস্ক অঞ্চল। সেখানকার গভর্নর রোমান স্টারোভয়েট টেলিগ্রামে বলেন, ইউক্রেনের বিমান হামলায় এখানকার অবকাঠামো ধ্বংস হয়ে গেছে। পাশাপাশি পুরো অঞ্চলের বিদ্যুৎ বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়েছে। এ ছাড়া ক্রিমিয়া উপদ্বীপের সেভাস্তোপলের কাছে আরেকটি ক্ষেপণাস্ত্র ভূপাতিত করা হয়েছে বলে জানিয়েছেন শহরের গভর্নর। তবে সেখানকার ক্ষয়ক্ষতি সম্পর্কে অবশ্য তিনি কিছু বলেননি।
রাশিয়া–ইউক্রেন যুদ্ধ শুরু হওয়ার পর থেকে ইউক্রেনের সঙ্গে সীমান্তবর্তী রাশিয়ার অঞ্চলগুলো নিয়মিত হামলার শিকার হচ্ছে। তবে গত সপ্তাহে ইউক্রেনে রাশিয়া ব্যাপক হামলা চালিয়েছিল। এর পরিপ্রেক্ষিতে বেলগোরোদ এখন ইউক্রনের হামলার বিশেষ লক্ষ্যবস্তু।
গত শুক্রবার ইউক্রেনের রাজধানী কিয়েভসহ বিভিন্ন শহরে ভয়াবহ বোমাবর্ষণ করা হয়। এতে ৩০ জনের বেশি মানুষ নিহত হন। এর পাল্টা জবাব হিসেবে সপ্তাহের শেষ দিকে বেলগোরোদে দফায় দফায় হামলা চালানো হয়। এতে ২৫ জন নিহত হন। বলা হয়, দুই বছর ধরে চলা এ সংঘর্ষে এখানে এত মৃত্যু নজিরবিহীন। কিয়েভ জানায়, এরপর মঙ্গলবার সকালে রাশিয়া ইউক্রেনে ৯৯টি ক্ষেপণাস্ত্র ছোড়ে।
জাতিসংঘের মানবাধিকার বিষয়ক হাইকমিশনার ভলকার তুর্ক রাশিয়া ও ইউক্রেনের মধ্যে সংঘাত কমিয়ে আনার আহ্বান জানিয়েছেন। গত মঙ্গলবার তিনি এ আহ্বান জানান। পাশাপাশি তাঁর দপ্তর সম্প্রতি হামলার তীব্রতা বেড়ে যাওয়া নিয়ে শঙ্কা প্রকাশ করেছে।
জাতিসংঘের হিউম্যান রাইটস দপ্তর সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম এক্সে বলেছে, দুই পক্ষের সংঘাত উদ্বেগজনকভাবে বেড়ে গেছে। এতে রাশিয়া, ইউক্রেন দুই দেশেই বেসামরিক মানুষ মারা পড়ছে। আন্তর্জাতিক মানবাধিকার আইন অনুযায়ী নির্বিচার হামলা এবং বেসামরিক কোনো কিছুর বিরুদ্ধে হামলা নিষিদ্ধ।
ভলকার তুর্ক তাৎক্ষণিক এই সংঘাত কমিয়ে আনার আহ্বান জানিয়েছেন। একই সঙ্গে বেসামরিক মানুষের সুরক্ষা নিশ্চিত ও আন্তর্জাতিক আইনের প্রতি সম্মান দেখাতে বলেন।