ইউক্রেন যুদ্ধ এখনই শেষ হচ্ছে না। যুদ্ধ শেষ হতে আরও কিছুদিন সময় লাগবে। রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন এসব কথা বলেন। ইউক্রেনে রুশ বাহিনীর হামলা শুরুর প্রায় ১০ মাস পর পুতিন স্বীকার করলেন, এই সংঘর্ষ আরও কিছুদিন চলবে। খবর সিএনএন–এর।
ক্রেমলিনে রুশ মানবাধিকার কাউন্সিলের সঙ্গে এক বৈঠকে পুতিন বলেন, মস্কো সব ধরনের পদ্ধতি অবলম্বন করে অভিযান চালিয়ে যাবে। ইউক্রেনে চালানো এই হামলাকে রাশিয়ার পক্ষ থেকে বিশেষ সামরিক অভিযান বলা হয়ে থাকে। পুতিন বলেন, তাঁদের এই বিশেষ অভিযানের জন্য তাঁরা দ্রুত আরও সৈন্য সংগ্রহের কোনো প্রয়োজন দেখেন না।
পুতিন বলেন, বিশেষ সামরিক অভিযানের দীর্ঘায়িত প্রকৃতি এবং এর ফলাফল বিবেচনায় বলা যায়, এটি শেষ হতে আরও সময় লাগবে। তিনি মস্কোর পারমাণবিক অস্ত্র ব্যবহারের আশঙ্কাও নাকচ করেননি। পুতিন বলেন, রাশিয়ার পারমাণবিক অস্ত্র উসকানির জন্য নয়। এটি প্রতিরক্ষায় ব্যবহারের জন্য। রাশিয়া কোনো পরিস্থিতিতেই প্রথমে এই ধরনের অস্ত্র ব্যবহার করবে না। কিন্তু রাশিয়ার ওপর আক্রমণ হলে মস্কো হাত গুটিয়ে থাকবে না। প্রতিশোধের জন্য এই অস্ত্র ব্যবহার করা হবে।
ইউক্রেন যুদ্ধে রাশিয়া তার অধিকাংশ লক্ষ্যই পূরণ করতে পারেনি। এ পরিপ্রেক্ষিতে আশংকা বাড়ছে যে রাশিয়া তার অভীষ্ট লক্ষে৵ পৌঁছাতে না পেরে পরমাণু অস্ত্র ব্যবহার করতে পারে।
কিন্তু এ প্রসঙ্গে পুতিন বলেন, ‘আমরা পাগল হইনি। পরমাণু অস্ত্র কী সে বিষয়ে আমরা সতর্ক আছি।’ তবে পারমাণবিক যুদ্ধ বেধে যাওয়ার হুমকি দিন দিন বাড়ছে উল্লেখ করে পুতিন বলেন, এই হুমকির বিষয় আড়াল করে রাখাটা ভুল হবে। তিনি বলেন, ‘শত্রুর হামলার জবাব হিসেবেই কেবল আমরা পরমাণু অস্ত্র ব্যবহার করব। আমরা পরমাণু হামলার শিকার হলেই কেবল পাল্টা হামলা চালাব।’
বিবিসি জানায়, পুতিনের মন্তব্যের পর জার্মানির চ্যান্সেলর ওলাফ শলৎজ বলেন, ইউক্রেন সংঘাতে পারমাণবিক অস্ত্র ব্যবহারের ঝুঁকি আপাতত কমেছে। তিনি বলেন, আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের চাপের মুখে রাশিয়া পরমাণু অস্ত্র ব্যবহারের হুমকি দেওয়া বন্ধ করেছে। জার্মানির একটি সংবাদমাধ্যমকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে তিনি বলেন, আপাতত একটি জিনিস বদলেছে। সেটি হলো, রাশিয়া পারমাণবিক অস্ত্র ব্যবহারের হুমকি বন্ধ করেছে। এটা হয়েছে আন্তর্জাতিক চাপের কারণে।
তবে পুতিনের মন্তব্যের প্রতিক্রিয়ায় যুক্তরাষ্ট্র বলেছে, পুতিনের এ মন্তব্য ‘আলগা কথা’। ফেব্রুয়ারিতে ইউক্রেন আক্রমণ করার পর থেকে রাশিয়ার পারমাণবিক অস্ত্র ব্যবহারের আশঙ্কার বিষয়টি নিয়ে আলোচনা চলছে। গত সেপ্টেম্বরে পুতিন তাঁর ভাষণে বলেছিলেন, প্রয়োজনে তিনি পরমাণু অস্ত্র ব্যবহার করবেন। এটা কোনো ধাপ্পাবাজি নয়।
এদিকে ইউক্রেনের পূর্বাঞ্চলে রাশিয়া তার বোমা হামলা অব্যাহত রেখেছে। ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কি বলেন, বুধবার দোনেৎস্ক অঞ্চলে রুশ বিমান হামলায় ১০ বেসামরিক নাগরিক নিহত হয়েছেন।